ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ৯:৫৮:১৯ এএম

বেক্সিমকোর হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারের প্রমাণ মিলেছে

২২ জানুয়ারি, ২০২৫ | ১১:১৩ এএম

বেক্সিমকোর হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারের প্রমাণ মিলেছে

ছবি: সংগ্রহ

বাংলাদেশের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) একটি বিশাল অনুসন্ধানে নেমেছে, যেখানে 'বেক্সিমকো গ্রুপ' ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে গুরুতর আর্থিক অপরাধের প্রমাণ পাওয়া গেছে। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা ব্যাংকিং নিয়মাবলী ভেঙে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। এছাড়া, প্রতিষ্ঠানটি নানা কৌশলে কর ও শুল্ক ফাঁকি দিয়েছে এবং আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের আড়ালে অর্থ পাচার করেছে।

 

 

তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-এর সমন্বয়ে একটি যৌথ তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। বিএফআইইউ এ তদন্তের সমন্বয় করছে। তদন্তকারী কর্মকর্তাদের মতে, বেক্সিমকো গ্রুপ তাদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংক ঋণ গ্রহণ করেছে এবং এর মাধ্যমে অস্বচ্ছ লেনদেন করেছে। এছাড়া, সালমান এফ রহমানের আইএফআইসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান থাকার সময়েও এই ঋণের অর্থ ব্যবহার করা হয়েছে।

 

 


তদন্ত দলকে সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ আইন মেনে অনুসন্ধান পরিচালনার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দলের প্রধানকে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিলের জন্য অনুমোদন নিতে হবে এবং তদন্তের তথ্য গোপনীয়তা কঠোরভাবে রক্ষা করতে হবে।

 

 


গত ১৪ আগস্ট ঢাকার সদরঘাট এলাকা থেকে সালমান এফ রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর সিআইডি, দুদক এবং বিএফআইইউ তদন্ত শুরু করে। ২২ আগস্ট থেকে দুদক সালমানের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ এবং বিদেশে টাকা পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করেছে। এছাড়া, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে বেক্সিমকো গ্রুপসহ ১০টি বিতর্কিত শিল্পগোষ্ঠী বিরুদ্ধে তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

 

 


এই শিল্পগোষ্ঠীগুলোর ব্যাংক হিসাব ইতিমধ্যে জব্দ করা হয়েছে এবং বিভিন্ন দেশে তাদের বিপুল সম্পদের খোঁজ চলছে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, কানাডা এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ (ইউএই) দেশগুলোর কাছে তাদের সম্পদের বিষয়ে তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে।

 

 


এদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর গত সপ্তাহে ‘মানি লন্ডারিং অপরাধ অনুসন্ধানে গঠিত যৌথ অনুসন্ধান ও তদন্ত দলের কার্যক্রম’ বিষয়ে একটি বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। তিনি এই তদন্তে আইনি ব্যবস্থার মাধ্যমে অর্থ উদ্ধারে সমন্বিতভাবে কাজ এগিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

 

 


বেক্সিমকো গ্রুপের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থ পাচার এবং জালিয়াতির অভিযোগের তদন্ত বাংলাদেশের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তত্ত্বাবধানে চলমান রয়েছে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।

বেক্সিমকোর হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারের প্রমাণ মিলেছে