ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ৩:৫৩:৩৫ পিএম

বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ট্যারিফ পুনর্নির্ধারণের উদ্যোগ

২২ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৭:৩০ পিএম

বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ট্যারিফ পুনর্নির্ধারণের উদ্যোগ

ছবি: সংগ্রহ

বাতিল হওয়া বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ আইনের আওতায় চুক্তি করা বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ট্যারিফ কাঠামো পর্যালোচনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে গতকাল ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাবেক অধ্যাপক ড. মো. কামরুল আহসানকে আহ্বায়ক করে এ কমিটি গঠন করা হয়। সদস্য সচিব করা হয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগের উপসচিব (উন্নয়ন-১) মোহাম্মদ সোলায়মানকে।


বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ট্যারিফ পর্যালোচনা কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন পাওয়ার সেলের কর্মকর্তা ও বিদ্যুৎ খাতের আর্থিক মডেলিং বিশেষজ্ঞ তোহা মুহাম্মদ, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মনজুর আলম, বিপিডিবির সদস্য (অর্থ) অঞ্জনা খান মজলিশ, পরিচালক (ক্রয়) মো. নান্নু মিয়া। কমিটি অবশ্য প্রয়োজনে অভিজ্ঞ কোনো সদস্যকে কো-অপ্ট করতে পারবে।


ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র ছাড়া কাজ দিতে ২০১০ সালে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন করেছিল। এ আইনের অধীন কোনো সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যাবে না—এমন বিধান থাকায় এটি দায়মুক্তি আইন হিসেবেও পরিচিত পায়। অন্তর্বর্তী সরকার অবশ্য বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের এ দায়মুক্তি আইন বাতিল করেছে। তার আগেই বিশেষ বিধানের আওতায় অন্তত ৯১টি চুক্তি হয়েছিল। এসব চুক্তির মধ্যে গ্যাস, জ্বালানি তেল ও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রও রয়েছে। এখন কেবল জ্বালানি তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চুক্তি ও ট্যারিফ পর্যালোচনা করে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগকে সুপারিশ করবে কমিটি। অভিযোগ রয়েছে, এসব প্রকল্পের মাধ্যমে অনিয়ম-দুর্নীতি করে বিগত সরকার বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করে।

 

বিদ্যুৎ বিভাগের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রে জানিয়েছে, বিদ্যুতের বকেয়া বিল পরিশোধের জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে ১ বিলিয়ন ডলার চেয়েছিল মন্ত্রণালয়। তখন আইএমএফ বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোয় উচ্চ ট্যারিফের বিষয়টি বিদ্যুৎ বিভাগের দৃষ্টিগোচর করে। তারা জানতে চায় উচ্চ ট্যারিফের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের সিদ্ধান্ত কী। তখন তাদের জানানো হয়, এগুলোর সঙ্গে ট্যারিফ রিনেগোশিয়েট করা হবে। এরই অংশ হিসেবে সরকার এ কমিটি গঠন করেছে বলে জানা যায়।

 

সরকার এমন সময় এ কমিটি করল যখন বেসরকারি কেন্দ্রগুলো বিদ্যুৎ বিক্রি বাবদ ৮ হাজার কোটি টাকার বেশি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) কাছে পাওনা। সেই বকেয়া পরিশোধে সরকারকে চার দফা চিঠিও দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে দফায় দফায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, বিপিডিবির চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, বিদ্যুৎ সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকও হয়েছে।

 

বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্র মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইপিপিএ) সভাপতি ডেভিড হাসানাত বলেন, ‘বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর ট্যারিফ রিনেগোশিয়েটের বিষয়ে সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সে বিষয়ে আমাদের ওই অর্থে কোনো বক্তব্য নেই। সরকার যদি মনে করে কোনো কোনো কেন্দ্রের ক্ষেত্রে আগে বিদ্যুতের ট্যারিফ বেশি দেয়া হয়েছে, সে বিষয়ে তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারে।’

বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ট্যারিফ পুনর্নির্ধারণের উদ্যোগ