ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ১১:৫২:৩৬ এএম

ব্যবসা পরিচালন ব্যয় সূচকে বাংলাদেশ নিচের দিকে

২৮ মে, ২০২৪ | ১০:৫১ এএম

ব্যবসা পরিচালন ব্যয় সূচকে বাংলাদেশ নিচের দিকে

বিগত এক দশকে ছয় শতাংশের বেশি হারে জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতির বিকাশমান গতিধারা অব্যাহত রাখার বিষয়টি সারা পৃথিবীর নিকট উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। উন্নয়নের এ ধারাবাহিকতা থাকা সত্ত্বেও ব্যবসা পরিচালন ব্যয় (কস্ট অব ডুইং বিজনেস) সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান বেশ নিচের দিকে। সোমবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (ডিসিসিআই) পক্ষ থেকে এসব কথা বলা হয়।

 

এতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ যেহেতু এলডিসি হতে উত্তরণের পথে রয়েছে এবং ২০২৬ সালের মধ্যে দেশটির বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড শক্তিশালীকরণের পাশাপাশি বহুমুখীকরণের বিষয়টি প্রাধান্যের সঙ্গে বিবেচিত হচ্ছে, যা ২০৪১ সালের মধ্যে আমাদের একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার রূপকল্প বাস্তবায়নে সত্যিকার অর্থেই সহায়তা করবে।

 

এমন বাস্তবতায়, আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থাগুলো ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের অবকাঠামো খাতে প্রায় ৬০৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের প্রয়োজন প্রাক্কলন করেছে। যদিও অবকাঠামো এবং লজিস্টিক খাতের বিদ্যমান চ্যালেঞ্জগুলো আমাদের জন্য এখনও উদ্বেগের বিষয়। দেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণের পাশাপাশি বাংলাদেশের প্রতি বৈশ্বিক সম্প্রদায়ের আকাক্সক্ষার বাস্তবায়নে একটি সমন্বিত, নিরবচ্ছিন্ন এবং টেকসই লজিস্টিক নীতিমালার কার্যকর বাস্তবায়ন একান্ত অপরিহার্য। এমন বাস্তবতায় সরকার কর্তৃক লজিস্টিক নীতিমালাটি প্রণয়নের জন্য দেশের বেসরকারি খাতের অন্যতম বাণিজ্য সংগঠন ডিসিসিআইর পক্ষ থেকে সরকারকে সাধুবাদ জানানো হয়।

 


উল্লেখ্য, লজিস্টিক নীতিমালাটি প্রথমবারের মতো দেশের বেসরকারি খাতের প্রয়োজনের নিরিখে সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সরকার প্রণয়ন করেছে। এ প্রেক্ষিতে বলা যায়, আমাদের বেসরকারি খাতের আশা-আকাক্সক্ষা, উদ্যোগ ও গবেষণার তথ্যাদি নীতিমালাটি প্রণয়নের প্রতিটি স্তরে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। নতুন প্রণীত লজিস্টিক নীতিমালাটি যদি সফলভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, তা হলে উদ্যোক্তাদের ব্যবসা পরিচালন ব্যয় উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পাবে, সেই সঙ্গে দেশের অবকাঠমো খাতের প্রভূত উন্নয়ন সাধিত হবে মনে করে ঢাকা চেম্বার। এটা ধারণা করা হয় যে, লজিস্টিক অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ করা হলে, প্রতিটি ডলার বিনিয়োগের বিপরীতে জিডিপিতে অবদান রাখবে বহুগুণ।

 

ডিসিসিআইর পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০৪১ সালে বাংলাদেশের উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে লজিস্টিক নীতিমালাটি সময়োপযোগী ও আবশ্যকীয় একটি উদ্যোগ। এ ধরনের সময়োপযোগী উদ্যোগ গ্রহণের পরও, ঢাকা চেম্বার বিশ্বাস করে দেশের অর্থনীতিতে লজিস্টিক নীতিমালার কার্যকর প্রভাব প্রতীয়মান করতে একটি ফাইন্যান্সিং স্ট্র্যাটেজি একান্ত আবশ্যক। যেটি দেশের অর্থনীতির বিকাশের লক্ষ্যে লজিস্টিক খাতে বিনিয়োগ সম্প্রসারণে আমাদের বেসরকারি খাত ও বিনিয়োগকারীদের সম্যক ধারণা প্রদানে সক্ষম হবে।

 

ঢাকা চেম্বার মনে করে, লজিস্টিক নীতিমালার বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রায় পিপিপি বাজেট প্রক্রিয়ার সমন্বয় করা প্রয়োজন। লজিস্টিক খাতের অগ্রাধিকারমূলক প্রকল্পগুলোর বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থার পাশাপাশি বেসরকারি খাতের সম্পৃক্তকরণ অতীব জরুরি। এ ছাড়াও লজিস্টিক খাতে অর্থায়ন, বিশেষত অবকাঠামো খাতে দীর্ঘমেয়াদি ও ইক্যুইটি ফাইন্যান্সিংয়ের কোনো বিকল্প নেই। বাজেট সহায়তা অথবা পেমেন্ট অ্যাসিউরেন্সের মাধ্যমে সরকার নিজেকে এ ধরনের খাতগুলোতে সম্পৃক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে।

 

স্থানীয় ও বহুমুখী অর্থায়ন নিশ্চিতের মাধ্যমে একটি সমন্বিত নীতিমালা আমাদের অবকাঠামো খাতের সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি আগামীতে দেশের অর্থনীতিতে একটি শক্তিশালী ভিত্তি তৈরিতে অবদান রাখতে সক্ষম হবে।

ব্যবসা পরিচালন ব্যয় সূচকে বাংলাদেশ নিচের দিকে