ঢাকা শনিবার, ৫ জুলাই, ২০২৫ - ৪:৫৩:০১ এএম

ব্যর্থতায় রূপ নিতে চলেছে চীনা ঋণের আরেক বৃহৎ প্রকল্প

২২ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৮:০ পিএম

ব্যর্থতায় রূপ নিতে চলেছে চীনা ঋণের আরেক বৃহৎ প্রকল্প

ছবি: সংগ্রহ

২০২৩ সালের জুলাইয়ে দাশেরকান্দি পয়োবর্জ্য শোধনাগার নির্মাণকাজ শেষে চালু হলেও প্রকল্পটি কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পাচ্ছে না। চীনা এক্সিম ব্যাংকের ঋণ সহায়তায় বাস্তবায়িত এই প্রকল্পে মোট ৩,৪৮২ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে, যার ৭০ শতাংশই ঋণ সহায়তা থেকে পাওয়া। যদিও এই বিপুল অংকের ঋণে নির্মিত শোধনাগারটি উদ্বোধনের পর এখনো কার্যকর হতে পারেনি, কারণ সংযোগ লাইন নির্মাণের অভাবে অনেক এলাকাই এর আওতায় আসছে না।

 

ঢাকা ওয়াসার তথ্যমতে, দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম পয়োবর্জ্য শোধনাগারটি আড়াই শতাংশ এলাকার বর্জ্য পরিশোধন করতে পারছে, কিন্তু বাস্তবে এর ক্ষমতার মাত্র ২৫ শতাংশ এলাকায় কাজ হচ্ছে। ২০১৩ সালে ঢাকার পয়োবর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়নে একটি মহাপরিকল্পনা তৈরি হয়, যার অংশ হিসেবে দাশেরকান্দি শোধনাগারটি নির্মিত। তবে, এখনও এটি পুরোপুরি কার্যকর হতে পারছে না, কারণ সংযোগ লাইন তৈরি না হওয়ায় বেশিরভাগ এলাকার বর্জ্য শোধন করা সম্ভব হচ্ছে না।

 

ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুর রহমান স্বীকার করেছেন যে, প্রকল্পের জন্য সংযোগ লাইন নেই এবং পূর্ণ কার্যকারিতা অর্জনের জন্য এর নির্মাণ প্রয়োজন। বর্তমানে হাতিরঝিল এলাকা থেকে কিছু পরিমাণ বর্জ্য দাশেরকান্দিতে যাচ্ছে, তবে এটি খুবই সীমিত। এছাড়া, পুরনো সুয়ারেজ লাইনের সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।

 

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পরিকল্পনার অভাব এবং বাস্তবায়নে ভুল পদ্ধতির কারণে চীনা ঋণে নির্মিত অন্যান্য প্রকল্পগুলোর মতো দাশেরকান্দি প্রকল্পও ব্যর্থতার মুখোমুখি হয়েছে। স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, পয়োবর্জ্য শোধনাগারের উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়েছে, কারণ সেখানে পয়োবর্জ্যের পাশাপাশি অন্যান্য পানি মিশছে। তিনি দ্রুত পৃথক পয়োবর্জ্য সংযোগ লাইন নির্মাণের পরামর্শ দিয়েছেন।

 

চীনা ঋণে বাস্তবায়িত অন্যান্য মেগা প্রকল্পগুলোর মতো, দাশেরকান্দি শোধনাগারও একাধিক দিক থেকে ব্যর্থতার সম্মুখীন হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রকল্পগুলোর উপযোগিতা এবং প্রয়োজনীয়তা সঠিকভাবে নির্ধারণ না করে এগুলো গ্রহণ করা হয়েছিল। তাই সরকারের উচিত, টেকসইভাবে এই প্রকল্পগুলোর ব্যবহার নিশ্চিত করা।

ব্যর্থতায় রূপ নিতে চলেছে চীনা ঋণের আরেক বৃহৎ প্রকল্প