ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
২৮ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৯:০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
ব্যাংকগুলোকে এলসি সংক্রান্ত বকেয়া দ্রুত পরিশোধের নির্দেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের
যথাসময়ে পেমেন্ট না করার ব্যাখ্যা জানতে চেয়ে ব্যাংকগুলোকে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক
২৮ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৯:০ পিএম
![ব্যাংকগুলোকে এলসি সংক্রান্ত বকেয়া দ্রুত পরিশোধের নির্দেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের](https://i.vatbondhu.com/images/original-webp/2025/01/28/20250128145758_original_webp.webp)
ছবি: সংগ্রহ
সাধারণ আমদানি ও ব্যাক-টু-ব্যাক আমদানির যেসব বিল বকেয়া হয়ে আছে, সেগুলো দ্রুত পরিশোধের জন্য ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
গতকাল সোমবার (২৭ জানুয়ারি) অন্তত ২৫টি ব্যাংকের অংশগ্রহণে বাংলাদেশ ব্যাংক অথরাইজড ডিলার্স ফোরামের ৩৭তম সভায় ব্যাংকগুলোকে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এ নির্দেশনার ব্যত্যয় ঘটলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারে বলেও ব্যাংকগুলোকে সতর্ক করা হয়েছে।
সভায় উপস্থিত বেশ কয়েকটি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঠিক সময়ে আমদানির পেমেন্ট কেন পরিশোধ করা হয়নি– তা জানতে চেয়ে বেশ কয়েকটি ব্যাংকের কাছে ব্যাখ্যা তলব করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এসব ব্যাংককে ওভারডিউ বিল (বকেয়া) পরিশোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
মেয়াদোত্তীর্ণ স্থানীয় ও বৈদেশিক স্বীকৃত বিল পরিশোধের বিষয়টি ফরেন এক্সচেঞ্জ অপারেশন ডিপার্টমেন্টের ইমপোর্ট ট্রেড শাখা ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে নিয়মিত মনিটরিং করে। সে ভিত্তিতেই এসব ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে বলে সভায় জানানো হয়েছে।
একটি বেসরকারি ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর জানিয়েছেন, অনেকগুলো কারণে ব্যাংকের আমদানি বিল পরিশোধ করতে দেরি হয়। বিশেষ করে, ব্যাক-টু-ব্যাক আমদানি এলসির পেমেন্ট করা হয় সংশ্লিষ্ট এক্সপোর্ট প্রসিড (রপ্তানির অর্থ) পাওয়ার পর। অনেক ক্ষেত্রে এক্সপোর্ট প্রসিড পেতে মাসখানেক দেরি হয়। এক্ষেত্রে অনেক ব্যাংক ঠিক সময়ে পেমেন্ট করতে পারে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ব্যাখ্যায় বিষয়টি বলা হয়েছে।
সভায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ব্যাংকগুলোকে যথাসময়ে বিল পরিশোধের আগের নির্দেশনা উল্লেখ করে বলেন, 'গাইডলাইনস ফর ফরেন এক্সচেঞ্জ ট্রান্সেকশন (জিইউইটি)-২০১৮' অনুযায়ী আমদানির বিপরীতে ব্যাংকগুলোকে স্থানীয় ও বৈদেশিক স্বীকৃত বিল যথাসময়ে পরিশোধ করার নিয়ম রয়েছে। আর যথাসময়ে আমদানিমূল্য পরিশোধ করা না হলে ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট অথরাইজড ডিলার্স শাখার লাইসেন্স বাতিলের নির্দেশনাও রয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক সার্কুলার জারির মাধ্যমে যথাসময়ে আমদানি মূল্য পরিশোধ করতে বলেছে। এক্ষেত্রে ব্যর্থতায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণসহ সংশ্লিষ্ট লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তা ব্যক্তিগতভাবে দায়বদ্ধ হবে বলে জানানো হয়েছে।
এ পরিস্থিতি বিবেচনায় ম্যাচিউরিটি ডেট অনুযায়ী বৈদেশিক ও স্থানীয় স্বীকৃত বিলের অর্থ পরিশোধে ব্যাংকগুলোকে বিশেষভাবে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক নীতিনির্ধারণী কর্মকর্তা জানিয়েছেন, "নির্দেশনা ও বিভিন্ন সময়ে জারিকৃত সার্কুলার অনুযায়ী যথাসময়ে ইমপোর্ট পেমেন্ট পরিশোধে ব্যর্থ হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। এ সময় ব্যাংকগুলো তাদের ওভারডিউ পেমেন্ট দ্রুত পরিশোধ করে দেবে বলে আমাদের কাছে অঙ্গীকার করেছে।"
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "ব্যাংকিং সেক্টরে বর্তমানে ডলারের তারল্য পরিস্থিতি ভালো। এমনকি, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও বেশ কয়েক মাস ধরে স্থিতিশীল রয়েছে। এখন ডলার সংকট তেমন নেই। এরপরেও ব্যাংকগুলোকে বারবার বকেয়া পরিশোধের জন্য নির্দেশনা দিতে হচ্ছে। আমরা আশা করি, এই পেমেন্টগুলো শীঘ্রই নিষ্পত্তি হবে।"
আমদানি ও রপ্তানি এলসি
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে ব্যাংকগুলো ২৮.১২ বিলিয়ন ডলারের আমদানি এলসি খুলেছে। এটি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় বেশি হলেও, খুব একটা বাড়েনি; বৃদ্ধির পরিমাণ ০.০৫ শতাংশ।
অন্যদিকে, অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসে আমদানি এলসি নিষ্পত্তি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ০.৮৩ শতাংশ কমেছে। ২০২৪ সালের জুলাই-নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে ব্যাংকগুলো ২৭.৯৪ বিলিয়ন ডলারের আমদানি এলসি নিষ্পত্তি করেছে।
এদের মধ্যে এক্সপোর্ট পণ্যের কাঁচামাল আমদানিতে জুলাই-নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে ব্যাক-টু-ব্যাক এলসি খোলা ও নিষ্পত্তি আগের অর্থবছরের তুলনায় যথাক্রমে ১৫.৩ শতাংশ ও ২০ শতাংশ বেড়েছে।
![ব্যাংকগুলোকে এলসি সংক্রান্ত বকেয়া দ্রুত পরিশোধের নির্দেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের](https://i.vatbondhu.com/images/original/2024/04/22/20240422145104_original.png)