ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ২:০১:৪৭ পিএম

ব্যাংকব্যবস্থা ও বাজার নিয়ন্ত্রণের ভূমিকা

১২ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৭:৪৫ পিএম

ব্যাংকব্যবস্থা ও বাজার নিয়ন্ত্রণের ভূমিকা

ছবি: সংগ্রহ

বেশ কিছুদিন ধরেই বাংলাদেশ ব্যাংক সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অনুসরণ করে আসছে। সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অনুসরণের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে অর্থনীতিতে বিদ্যমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনা। দুই বছরের বেশি সময় ধরে দেশের অর্থনীতিতে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। নানাভাবে চেষ্টা চালিয়েও উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। 

 

 

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ হিসাব মতে, গত নভেম্বর মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ১১.৩৮ শতাংশে। গত চার মাসের মধ্যে এটাই সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতির হার। শহর, গ্রাম-সর্বত্রই মূল্যস্ফীতি ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। এর মধ্যে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১৩.৮০ শতাংশ। খাদ্য মূল্যস্ফীতির এই হার গত সাড়ে ১৩ বছরের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। গত জুলাই মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার ১৪.১০ শতাংশে উপনীত হয়েছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘোষিত মুদ্রানীতির উদ্দেশ্য অর্থনীতিতে মুদ্রার জোগান কমিয়ে এনে চাহিদা সংকোচনের মাধ্যমে উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা। কিন্তু বাস্তব অবস্থা হচ্ছে, নানা প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হলেও এখনো উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

 

 

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের ব্যাংকিং খাতের ছয়টি দুর্বল ব্যাংককে তারল্য সংকট মোকাবেলার জন্য সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা মূলধন সহায়তা দিয়েছে। এর আগেও বাংলাদেশ ব্যাংক দুর্বল ব্যাংকগুলোকে মূলধন সহায়তা দিয়েছে। কিন্তু আগে যেসব ব্যাংকে উদ্বৃত্ত তারল্য বিদ্যমান ছিল, সেইসব ব্যাংক নির্দিষ্ট সুদহারে (১৩ শতাংশ)

 

 

মূলত দুর্বল ব্যাংকগুলোকে তারল্য সহায়তা প্রদান এবং আমানতকারীদের নিশ্চিত করার জন্যই বাংলাদেশ ব্যাংক এই ব্যবস্থা নিয়েছে। বর্তমানে ব্যাংকগুলোর যে অবস্থা, তাতে এটা ছাড়া গ্রহণযোগ্য তেমন কোনো বিকল্প নেই।

 

 

 

এখন প্রশ্ন হলো, যেসব ব্যাংক নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী চলতে পারছে না, বাংলাদেশ ব্যাংক টাকা ছাপিয়ে কত দিন তাদের এভাবে সহায়তা দেবে? বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণের পর 

 

 

তারা আগামীতে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে? অতীতে এসব ব্যাংক দুর্নীতি, অনিয়ম বা অন্য যেসব কারণে দুর্দশাগ্রস্ত হয়েছে, সেই অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাতে তারা কতটা উদ্যোগী হয়েছে এবং এ ক্ষেত্রে অর্জিত সাফল্য বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন। যেসব ব্যাংক সমস্যাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে তাদের বিভিন্ন তথ্য জনসমক্ষে আনা প্রয়োজন। বিশেষ করে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর বিগত চার মাসে তাদের খেলাপি ঋণের পরিমাণ কি কমেছে, না বেড়েছে?

 

 

বিগত চার মাসে তারা কী পরিমাণ খেলাপি ঋণ আদায় করতে সক্ষম হয়েছে, তারা খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে তা জনগণকে জানানো দরকার। খেলাপি ঋণ সৃষ্টির পেছনে ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তা প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে যুক্ত ছিলেন কি না?

 

 

খেলাপি ঋণ আদায়সহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য প্রতিটি ব্যাংককে একটি নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করে দেওয়া যেতে পারে।

ব্যাংকব্যবস্থা ও বাজার নিয়ন্ত্রণের ভূমিকা