ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ১২:১১:৫৩ পিএম

ব্যাংক ও জ্বালানি- উন্নয়ন প্রকল্প লুটপাট হয়েছে বেশি : দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

১ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ১২:৫৫ পিএম

ব্যাংক ও জ্বালানি- উন্নয়ন প্রকল্প  লুটপাট হয়েছে বেশি : দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

ছবি: সংগ্রহ

গত ১৫ বছরের অর্থনৈতিক অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে শ্বেতপত্র প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি। আজ রবিবার কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আনুষ্ঠানিকভাবে এই শ্বেতপত্র প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে তুলে দেবেন।

 

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ব্যাংক খাত, জ্বালানি এবং উন্নয়ন প্রকল্পে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়েছে। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) সহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করা প্রায় ৬০ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে ১ হাজার ৪২৪ বিলিয়ন টাকা রাজনৈতিক চাঁদাবাজি, ঘুষ ও বাজেট অপচয়ের মাধ্যমে হারিয়ে গেছে।

 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবেদনে ব্যাংক খাতে দুর্নীতি ও অনিয়মের জন্য ঋণ কেলেঙ্কারি, প্রতারণা, ভুয়া ঋণ ও ঋণের অপব্যবহারের বিভিন্ন ঘটনা চিহ্নিত করা হয়েছে। এ ছাড়া রাষ্ট্রীয় মদদে ব্যাংক দখলে সহায়তা করা হয়েছে। ব্যাংক খাত থেকে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে যে অর্থ লুট করা হয়েছে, তার বড় অংশই পাচার হয়েছে।

 

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে যে শ্বেতপত্র প্রকাশিত হবে, তাতে ছয়টি বিষয় থাকবে। সেগুলো হচ্ছে সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনা, মূল্যস্ফীতি ও খাদ্য ব্যবস্থাপনা, বাহ্যিক ভারসাম্য, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, বেসরকারি বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থান।

 

যে ছয় বিষয়ে এ কমিটি কাজ করেছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনা। এতে অভ্যন্তরীণ সম্পদ, সরকারি ব্যয় (সরকারি বিনিয়োগ, এডিপি, ভর্তুকি ও ঋণ) ঘাটতি বাজেট অর্থায়ন বিষয়াদি থাকবে। এ ছাড়া মূল্যস্ফীতি ও খাদ্য ব্যবস্থাপনার মধ্যে থাকবে উৎপাদন, সরকারি কেনাকাটা ও খাদ্য বিতরণ। আর বাহ্যিক ভারসাম্যে থাকবে রপ্তানি, আমদানি, প্রবাসী আয়, সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই), বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, বিদেশি অর্থায়নের প্রভাব ও ঋণ।

 

বাংলাদেশে শ্বেতপত্র প্রকাশের ঘটনা এবারই প্রথম নয়। বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার ২০০১ সালে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করে। তাতে আওয়ামী লীগ সরকারের আগের মেয়াদের বিভিন্ন অসংগতির কথা তুলে ধরা হয়।

 

২০২১ সালে একদল বেসামরিক নাগরিকদের, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিরা একটি গণকমিশন গঠন করেন।

 

শ্বেতপত্রে কী থাকছে এর কিছুটা ধারণা গত বৃহস্পতিবার ইআরএফের ওই আলোচনা সভায় জানিয়েছিলেন ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি জানান, দেশের দুটি ফুসফুস ব্যাংক ও জ্বালানি খাত। এই দুই খাতে বড় ধরনের অনিয়মের কথা উল্লেখ করে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ব্যাংক ও জ্বালানি খাতে বেশি লুটপাট হয়েছে। এসব তুলে ধরা হবে প্রতিবেদনে।

 

তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর যতটা উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে, তা যদি সরকার দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করতে না পারে তবে দেশের মানুষকে ততটাই হতাশ করা হবে। এ জন্য বছর শেষে সরকারকে পাঁচ মাসের মূল্যায়ন উপস্থাপন করতে হবে। কী কী সরকারের দিক থেকে করা হয়েছে। এগুলো একত্রিত করে প্রকাশ করতে হবে। বাজেটের আগে চলমান পরিস্থিতিতে আগামী ছয় মাসের পরিকল্পনা প্রকাশ করতে হবে। এর মধ্যে মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগ, সরকারি ব্যয়, রাজস্ব আয় ও বৈদেশিক খাতের ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা তুলে ধরতে হবে।’

ব্যাংক ও জ্বালানি- উন্নয়ন প্রকল্প  লুটপাট হয়েছে বেশি : দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য