ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
৫ জুলাই, ২০২৪ | ১২:৩৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
মতিউরের সঙ্গে আরজিনার ব্যক্তিগত ফোনালাপ ফাঁস
৫ জুলাই, ২০২৪ | ১২:৩৪ পিএম

ছাগলকাণ্ডে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদ্য সাবেক সদস্য মতিউর রহমান ও তার অধস্তন নারী কর্মকর্তা আরজিনা খাতুনের মধ্যে মোবাইল ফোনে ব্যক্তিগত আলাপচারিতার অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়েছে। এতে নতুন করে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
এদিকে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিযোগ, শুধু মতিউর রহমানের বান্ধবী হিসেবে বহু সুবিধা হাসিল করেছেন আরজিনা। অবৈধ পথে উপার্জিত অর্থে বনেছেন অঢেল সম্পত্তির মালিক। এছাড়া ঢাকায় অভিজাত অ্যাপার্টমেন্ট, গ্রামে বিলাসবহুল বাড়ি, ৫০০ ভরি স্বর্ণালংকারসহ নামে-বেনামে গড়েছেন বিপুল সম্পদ। আরজিনার দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদের অভিযোগ গড়িয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পর্যন্ত।
ফাঁস হওয়া ফোনালাপ
মতিউর : ‘তোমার কাছে ... চাই, কখন দিতে পারবা?
আরজিনা : আজকে...!
মতিউর : আজকের প্রোগ্রাম ঠিক আছে?
আরজিনা : আজকে... কালকে যাই। আজ শুক্রবারতো, মানে কি বলে বের হব, কোনো ইয়ে পাচ্ছি না। বাসায় আছেতো। কালকে হলে ভালো হয়। কালকেতো থাকবা ঢাকায়।
মতিউর : দীর্ঘশ্বাস... ঠিক আছে। কালকে মনে হয় পারব না।
আরজিনা : কষ্ট পেলে... মানে শুক্রবারতো, কোনো ইয়ে খুঁজে পাচ্ছি না। বাইরে যে থাকব, আবার মাইন্ড... মানে যদি কোনো সন্দেহ তৈরি হয়।
মতিউর : ফের দীর্ঘশ্বাস... ওকে।
জানা গেছে, মতিউর রহমানের সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে নানা অনৈতিক সুবিধা নিয়ে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন এনবিআরের ওই আরজিনা খাতুন। রাজধানীতে বিলাসবহুল ইন্টেরিয়রে মোড়ানো ফ্ল্যাট, গ্রামে আলিশান বাড়ি, পরিবারের সদস্যদের নামে-বেনামে জমিসহ বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন এনবিআরের ওই আরজিনা খাতুন। মাত্র ৩ বছরে আরজিনা কিনেছেন অন্তত ৫০০ ভরি স্বর্ণালংকার। যার ২০০ ভরিই চোরাচালানের মাধ্যমে বিদেশ থেকে আনা হয়েছে বলে দুদকের কাছে অভিযোগ জমা পড়েছে। আরজিনা খাতুন বর্তমানে রাজস্ব বোর্ডের মূসক মনিটরিং, পরিসংখ্যান ও সমন্বয়ের দ্বিতীয় সচিব। এর আগে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের উপকমিশনার ছিলেন তিনি।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, ১০ জুন আরজিনার দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদের খতিয়ান তুলে ধরে দুদকে অভিযোগ জমা দেন এক ব্যক্তি। তাতে বলা হয়, মিথ্যা তথ্য দিয়ে পণ্য আমদানি, মানি লন্ডারিং, স্বর্ণ চোরাচালান চক্রের সঙ্গে যোগসাজশ আর আলোচিত এনবিআরের সদ্য সাবেক সদস্য মতিউর রহমানের সংস্পর্শে এসে দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল সম্পদ অর্জন করেছেন আরজিনা।
দুদকে জমা অভিযোগের সূত্র ধরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর মিরপুরে প্রায় ২ হাজার বর্গফুটের একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট রয়েছে তার। ১ কোটি ৩০ লাখ টাকায় কেনা ফ্ল্যাটটিতে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। কিন্তু রেজিস্ট্রেশনসহ দলিলে ফ্ল্যাটটির দাম দেখানো হয়েছে মাত্র ৬৮ লাখ। ফ্ল্যাটটি কেনার জন্য তিনি ২০২০ সালে ব্যাংক থেকে ঋণ নেন। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ঋণ নেওয়ার ১ বছর আগেই ফ্ল্যাট কিনে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেন। তাও ঋণের টাকার দ্বিগুণ দামে। প্রায় ৫০ লাখ টাকা খরচ করে বাসায় বিলাসবহুল আসবাব ও অত্যাধুনিক ইন্টেরিয়র করেছেন। আরজিনার গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ীর নারোয়া ইউনিয়নের তালুতপারা গ্রামে। কাস্টমসে চাকরির ৩ বছরের মধ্যে গ্রামের ছন আর টিনের বাড়িটিকে বদলে করেছেন আলিশান এক ভবন।
অভিযোগ আছে-মতিউর রহমানের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্কে জড়ানোর পর থেকে ‘আলাদিনের চেরাগ’ হাতে পান আরজিনা। তরতর করে বাড়তে থাকে তার সম্পত্তি। মতিউরের সঙ্গে একই ব্রোকারেজ হাউজে শেয়ার ব্যবসায় বিনিয়োগ ছিল আরজিনার। অভিযোগ আছে, কারসাজি করে মতিউরই আরজিনাকে শেয়ার বাজারে মুনাফা তুলে দেন।
- ট্যাগ সমূহঃ
- ফোনালাপ
