ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ২:৪৬:২৭ এএম

মন্দা কাটছে না, কমেছে কাঁচামাল আমদানি

২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ১২:৩৫ পিএম

মন্দা কাটছে না, কমেছে কাঁচামাল আমদানি

ছবি: সংগ্রহ

২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে দেশে কাঁচামাল আমদানি কমে ৫২৭ কোটি ডলারে নেমে এসেছে, যা গত অর্থবছরের একই সময় ছিল ৫৬০ কোটি ডলার। এই পতন ব্যবসাবাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়ার ইঙ্গিত দেয় এবং বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর ফলে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পেতে পারে এবং ভোক্তার ওপর এর প্রভাব পড়বে।

 

সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের নভেম্বরে ঋণপত্র খোলার (এলসি) মাধ্যমে আমদানি লেনদেনের পরিমাণ ৬ শতাংশ কমে ৫২৭ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। একই সময়ে পাঁচ মাসের (জুলাই-নভেম্বর) মধ্যে আমদানি লেনদেনের জন্য খোলা ঋণপত্রের মোট মূল্যও ১ শতাংশ কমে ২ হাজার ৭৯৭ কোটি ডলারে নেমে এসেছে।

 

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, চলতি বছরে ঋণপত্র (এলসি) নিষ্পত্তির পরিমাণও ১ শতাংশ কমে ২ হাজার ৭৮৮ কোটি ডলারে নেমে এসেছে। ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, বর্তমানে ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীরা কিছুটা বিরতি নিয়েছেন, যার প্রভাব পড়েছে আমদানির পরিমাণে। এছাড়া, চলতি বছরের জুলাই-আগস্টে দেশে ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তনও ব্যবসায়িক কার্যক্রমে স্থবিরতা তৈরি করেছে। এর ফলে কারখানায় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে, যা আরও অর্থনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে।

 

তবে বিশেষজ্ঞরা আশাবাদী যে, পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে উঠবে এবং ব্যবসাবাণিজ্য আগের মতো পুরোদমে শুরু হবে। সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানির ওপর কর প্রত্যাহার করেছে এবং রমজান মাস ঘনিয়ে আসার কারণে আমদানি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন তারা।

 

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা এম মাসরুর রিয়াজ বলেন, “বিদেশি মুদ্রার (ডলার) বিনিময় হার স্থিতিশীল হওয়ায় আমদানি বৃদ্ধি পাবে এবং এর মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি কমানোর সম্ভাবনা রয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের অর্থনীতি আমদানির ওপর অত্যন্ত নির্ভরশীল, তাই আমদানি বাড়লে তা দেশীয় অর্থনীতির জন্য ভালো ফল বয়ে আনবে।”

 

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যমতে, ২০২৪ সালের নভেম্বরে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ১১ দশমিক ৩৮ শতাংশ এবং খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে ১২ দশমিক ৮ শতাংশে পৌঁছেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে জানা যায়, চলতি বছরের পাঁচ মাসে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি ২৯ শতাংশ কমে ৬ কোটি ৯০ লাখ ডলারে নেমে এসেছে। একই সময়ে মধ্যবর্তী পণ্য আমদানি ১২ শতাংশের বেশি কমে ১৬৯ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে।

 

তবে শিল্প উৎপাদন কার্যক্রমে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত পাওয়া গেছে, কারণ শিল্পের কাঁচামাল আমদানি ৪ দশমিক ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৯৮০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। বিশ্লেষকরা আশা করছেন, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল হওয়ার সাথে সাথে অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে আমদানি কার্যক্রম বাড়বে এবং ব্যবসাবাণিজ্য আবার চাঙা হবে।

মন্দা কাটছে না, কমেছে কাঁচামাল আমদানি