ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ১১:০২:৫৩ এএম

মার্চে ইস্পাতের বৈশ্বিক উৎপাদন ৪.৩ শতাংশ কমেছে

২৮ এপ্রিল, ২০২৪ | ৮:৫২ এএম

মার্চে ইস্পাতের বৈশ্বিক উৎপাদন ৪.৩ শতাংশ কমেছে

চলতি বছরের মার্চে অপরিশোধিত ইস্পাতের বৈশ্বিক উৎপাদন গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ দশমিক ৩ শতাংশ কমেছে। সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ওয়ার্ল্ড স্টিল অ্যাসোসিয়েশন (ওয়ার্ল্ড স্টিল)। খবর দ্য হিন্দু বিজনেস লাইন।

 

মার্চে বৈশ্বিকভাবে মোট ইস্পাত উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ১৬ কোটি ১২ লাখ টন, গত বছর একই সময় যা ছিল ১৬ কোটি ৮৪ লাখ টন। এ সময় বিশ্বের শীর্ষ ইস্পাত উৎপাদনকারী দেশ চীনে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখা গেলেও ভারতে উৎপাদন বেড়েছে।

 


ওয়ার্ল্ড স্টিল অ্যাসোসিয়েশনের দেয়া তথ্যমতে, গত মার্চে চীনে ধাতুটির উৎপাদন ৮ কোটি ৮৩ লাখ টনে নেমে এসেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭ দশমিক ৮ শতাংশ কম।

 

চীনের ব্যুরো অব স্ট্যাটিস্টিকস জানায়, বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) চীনে ২৫ কোটি ৬৫ লাখ ৫০ হাজার টন ইস্পাত উৎপাদন হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১ দশমিক ৯ শতাংশ কম।

 

এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল প্ল্যাটসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় দ্বিতীয় প্রান্তিকে ইস্পাত উৎপাদন কিছুটা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে গত বছরের তুলনায় কমই থাকবে।

 

প্ল্যাটসের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, চীনে ইস্পাতের চাহিদা কমছে। বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকেও চাহিদায় নিম্নমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকবে। এর পেছনে প্রধান কারণ দেশটির প্রপার্টি খাতে চলমান অস্থিরতা।

 

এদিকে ভারত মার্চে ১ কোটি ২৭ লাখ টন অপরিশোধিত ইস্পাত উৎপাদন করেছে বলে জানায় ওয়ার্ল্ড স্টিল। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় উৎপাদন ৭ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে।

 

দেশটির খাতসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ২০৪৭ সালের মধ্যে ইস্পাতের বার্ষিক উৎপাদন সক্ষমতা তিন গুণ বাড়াতে চায় ভারত। এ লক্ষ্যে দেশটির সংশ্লিষ্ট দপ্তর এরই মধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে। তবে এ খাত থেকে কার্বন নিঃসরণও কমিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে দেশটির।

 

ভারতে গত মার্চে ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষ হয়েছে। এ বছর দেশটি ১৪ কোটি ৩৬ লাখ টন ইস্পাত উৎপাদন করে। আগের বছরের তুলনায় উৎপাদন বেড়েছে ১২ দশমিক ৯ শতাংশ। এর মধ্যে রোলড ইস্পাত উৎপাদন বেড়েছে ১২ দশমিক ৪ শতাংশ।

 

তবে উৎপাদন বৃদ্ধি সত্ত্বেও দেশটিতে বিপুল পরিমাণে ইস্পাত আমদানি হচ্ছে। সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে দেশটি ৮৩ লাখ টন রোলড ইস্পাত আমদানি করে, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ৩৮ দশমিক ১ শতাংশ বেশি। এর মধ্য দিয়ে ধাতুটির নিট আমদানিকারক দেশে পরিণত হয়েছে ভারত।

 

ওয়ার্ল্ড স্টিলের দেয়া তথ্যমতে, মার্চে তুরস্কে ইস্পাত উৎপাদন ১৮ শতাংশ বেড়ে ৩২ লাখ টনে উন্নীত হয়েছে। জার্মানিতে ধাতুটির উৎপাদন ৮ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে ৩৫ লাখ টনে পৌঁছেছে।

 

অন্যদিকে রাশিয়ায় ইস্পাতের উৎপাদন দশমিক ৮ শতাংশ বেড়ে ৬৬ লাখ টন হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার উৎপাদন ৯ দশমিক ৫ শতাংশ কমে ৫৩ লাখ টনে নেমেছে। জাপানেও ইস্পাতের উৎপাদন ৩ দশমিক ৯ শতাংশ কমে ৭২ লাখ টন হয়েছে।

 

ব্রাজিল ও ইরানে ইস্পাত উৎপাদন বেড়েছে যথাক্রমে ৫ দশমিক ৪ ও ২ শতাংশ। বর্তমানে দুই দেশেরই ইস্পাত উৎপাদনের পরিমাণ ৩৫ লাখ টন। যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন গত বছরের মতোই অপরিবর্তিত ছিল। মার্চে দেশটি সব মিলিয়ে ৬৯ লাখ টন ইস্পাত উৎপাদন করেছে।

 

অঞ্চল ভেদে আফ্রিকা মহাদেশে ইস্পাত উৎপাদন ১ দশমিক ১ শতাংশ বেড়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোয় উৎপাদনের পরিমাণ কমেছে ৪ দশমিক ৩ শতাংশ। তবে ইউরোপের অন্যান্য দেশে উৎপাদন ১১ শতাংশ বেড়ছে।

 

এশিয়া ও ওশেনিয়ায় ইস্পাত উৎপাদন ৫ দশমিক ৮ শতাংশ কমেছে। পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলের উৎপাদন বেড়েছে ৪ শতাংশ। উত্তর আমেরিকায় উৎপাদন ১ দশমিক ৪ শতাংশ উৎপাদন কমেছে। দক্ষিণ আমেরিকায় উৎপাদন গত বছরের মার্চের তুলনায় দশমিক ২ শতাংশ কমে গেছে। রাশিয়াসহ অন্যান্য কমনওয়েলথ অব ইনডিপেনডেন্ট স্টেটসে (সিআইএস) ইস্পাত উৎপাদন ১ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে।

 

সম্প্রতি ২০২৪ ও ২০২৫ সালের শর্ট রেঞ্জ আউটলুক প্রকাশ করেছে ওয়ার্ল্ড স্টিল। পূর্বাভাসে তারা জানিয়েছে, চলতি বছর ইস্পাতের বৈশ্বিক চাহিদা ১ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে ১৭৯ কোটি ৩০ লাখ টনে পৌঁছবে। ২০২৫ সালে চাহিদা ১ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে ১৮১ কোটি ৫০ লাখ টনে পৌঁছার সম্ভাবনা রয়েছে।

মার্চে ইস্পাতের বৈশ্বিক উৎপাদন ৪.৩ শতাংশ কমেছে