আগামী মার্চ মাস থেকে বাংলাদেশে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে পেপারলেস বা অনলাইনে পরিচালিত হবে। এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো (বিএসডব্লিউ) প্ল্যাটফর্মের আংশিক উদ্বোধন করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

আরও পড়ুন

মোনেম গ্রুপের ব্যাংক হিসাব জব্দ, আমদানি-রপ্তানি স্থগিত

রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত বিএসডব্লিউ-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, "আগামী ফেব্রুয়ারির পর থেকে আমদানি ও রপ্তানি সংশ্লিষ্ট ১৯টি ডিপার্টমেন্টের সমস্ত লাইসেন্স এবং সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম শুধুমাত্র অনলাইনে সম্পন্ন হবে। ম্যানুয়াল পদ্ধতি ব্যবহার করা যাবে না।" তিনি আরও যোগ করেন, "যদি কেউ অনলাইনে আবেদন না করেন, তবে সংশ্লিষ্ট ডিপার্টমেন্টের বরাদ্দ আটকে দেওয়া হবে।"

বিএসডব্লিউ-এর আওতায় এখন সাতটি সংস্থা যুক্ত হয়েছে, যেগুলো হলো পরিবেশ অধিদপ্তর, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, বিস্ফোরক অধিদপ্তর, বাংলাদেশ ন্যাশনাল অথরিটি ফর কেমিক্যাল উইপনস কনভেনশন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ, এবং বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাকি ১২টি সংস্থাকে বিএসডব্লিউ-এর আওতায় আনা হবে, ফলে পুরো সিস্টেমটি সম্পূর্ণরূপে চালু হবে।

ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, "পূর্বে ডিজিটাল সেবার জন্য অনেক অর্থ ব্যয় করা হলেও তেমন ফলপ্রসূ হয়নি। তবে এবার আমরা কার্যকর ডিজিটাল ব্যবস্থা গড়ে তুলতে অর্থায়ন করব।" তিনি উদাহরণ হিসেবে যাত্রাবাড়ী থানার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা উল্লেখ করেন, যেখানে ডিজিটাল ডকুমেন্টের অভাবে সব নথি পুড়ে গিয়েছিল।

অনুষ্ঠানে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, "অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা আমাদের জন্য একটি বড় শিক্ষা। এটি প্রমাণ করে যে ডিজিটাল সিস্টেমের গুরুত্ব কতটা অপরিহার্য।"

এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান অনুষ্ঠানে বলেন, "আমরা দীর্ঘদিন ধরে 'স্মার্ট বাংলাদেশ' হওয়ার কথা বলছি, কিন্তু কোনো একটি থানার কাগজপত্র পুড়ে গেলে যদি অনলাইনে তথ্য পাওয়া না যায়, তবে আমাদের উন্নয়ন চিত্র সঠিকভাবে ফুটে ওঠে না।"

নতুন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা এখন থেকে অনলাইনে আমদানি ও রপ্তানি সংক্রান্ত সমস্ত শংসাপত্র, লাইসেন্স এবং পারমিট পাবেন। ফলে কাগজপত্র সংগ্রহের জন্য আর অফিসে গিয়ে সময় ব্যয় করতে হবে না।