ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ৫:১২:৪৯ পিএম

মুরগির বাচ্চার দাম বাড়িয়ে ৫৪০ কোটি টাকা মুনাফা করেছে কোম্পানিগুলো: পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন

১৬ নভেম্বর, ২০২৪ | ১০:৩৯ এএম

মুরগির বাচ্চার দাম বাড়িয়ে ৫৪০ কোটি টাকা মুনাফা করেছে কোম্পানিগুলো: পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন

ছবি: সংগ্রহ

 

গত ১৫ সেপ্টেম্বর মুরগির বাচ্চা ও ডিমের দাম সরকার নির্ধারণ করলেও, পরের দিন থেকেই কোম্পানিগুলো মুরগির বাচ্চার দাম বাড়াতে শুরু করে। এক দিন বয়সী মুরগির বাচ্চার দাম ৫৫ থেকে ৮০ টাকা, এবং ব্রয়লার, সোনালী কালার বার্ড ও লেয়ার মুরগির বাচ্চার দাম ৫৫ থেকে ১১০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।

 

অতিরিক্ত মুনাফা ৫৪০ কোটি টাকা

 

বাংলাদেশ পোল্ট্রি এসোসিয়েশনের (বিপিএ) পক্ষ থেকে শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) জানানো হয়েছে, গত ৬০ দিনে শুধুমাত্র মুরগির বাচ্চার দাম বাড়িয়ে পোল্ট্রি কোম্পানিগুলো মোট ৫৪০ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। প্রতিদিন ৩০ লক্ষ মুরগির বাচ্চা উৎপাদন হওয়ায় কোম্পানিগুলো গড়ে প্রতিটি বাচ্চা থেকে ৩০ টাকা বেশি মুনাফা করছে। এর ফলে, প্রতিদিন ৯ কোটি টাকা মুনাফা হওয়ায় মোট ৬০ দিনে ৫৪০ কোটি টাকার বেশি লাভ হয়েছে।

 

সিন্ডিকেটের অভিযোগ

 

বিপিএ সভাপতি সুমন হাওলাদার অভিযোগ করেছেন, কোম্পানিগুলো ফিড ও মুরগির বাচ্চার বাজারে সিন্ডিকেট গঠন করে আসছে, যার ফলে প্রান্তিক খামারিদের উৎপাদন খরচ বাড়ছে এবং তারা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। তিনি বলেন, "সরকার প্রান্তিক খামারিদের উৎপাদিত ডিম ও মুরগির লাভের হার ৫ শতাংশ নির্ধারণ করলেও, কোম্পানিগুলোর মুনাফার কোনো নির্দিষ্ট হিসাব নেই।"

 

তিনি আরো বলেন, "কোম্পানিগুলো একদিকে মুরগির বাচ্চার দাম বাড়াচ্ছে, অন্যদিকে সরকারের কাছে ভালো থাকতে ডিম ও মুরগির দাম কমিয়ে রাখছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন প্রান্তিক খামারিরা, আর বাজারে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে।"

 

সিন্ডিকেট ভাঙার সুপারিশ

 

সুমন হাওলাদার বলেন, "এই সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। পোল্ট্রি খাতের সংকট সমাধানে সরকারকে ফিড ও মুরগির বাচ্চার বাজারে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।" তিনি সুপারিশ করেছেন, "মুরগির বাচ্চা ও ফিডের দামে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সুনির্দিষ্ট মূল্যসীমা নির্ধারণ করা উচিত, এবং বাজারে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে একটি নিয়ন্ত্রক কমিটি গঠন করা দরকার।"

 

সংশোধনী পদক্ষেপের প্রয়োজন

 

বিপিএ মনে করে, ফিড ও মুরগির বাচ্চার বাজারে সিন্ডিকেট ভেঙে সঠিক মূল্য নির্ধারণ করলে খামারিরা সঠিক মূল্যে পণ্য সংগ্রহ করতে পারবেন, যা তাদের উৎপাদন খরচ কমাবে। এতে খামারিরা লাভজনকভাবে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবেন এবং সাধারণ মানুষ সাশ্রয়ী মূল্যে ডিম ও মুরগি ক্রয় করতে সক্ষম হবেন।

 

এছাড়া, মুরগির বাচ্চা ও ফিডের বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য একটি নিয়ন্ত্রক কমিটি গঠন করার প্রস্তাবও দিয়েছে বিপিএ।

 

ভোক্তা ও খামারির জন্য বাজার স্থিতিশীল করার আহ্বান

 

বিপিএ মনে করে, সরকার যদি সঠিক পদক্ষেপ নেয়, তবে দেশের ডিম ও মুরগির বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে এবং খামারিরা ক্ষতির সম্মুখীন না হয়ে সঠিক দামে পণ্য বিক্রি করতে পারবেন। এতে সাধারণ ভোক্তারাও সাশ্রয়ী মূল্যে পোল্ট্রি পণ্য ক্রয় করতে পারবেন, যা পুরো বাজারে স্বস্তি বয়ে আনবে।

মুরগির বাচ্চার দাম বাড়িয়ে ৫৪০ কোটি টাকা মুনাফা করেছে কোম্পানিগুলো: পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন