ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ৩:০৯:৫৪ পিএম

মূল্যস্ফীতি জুনের মধ্যে ৭ শতাংশে আনা হবে: গভর্নর

৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ১১:২৯ এএম

মূল্যস্ফীতি জুনের মধ্যে ৭ শতাংশে আনা হবে: গভর্নর

ছবি: সংগ্রহ

দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং ব্যাংকিং খাতের চ্যালেঞ্জ নিয়ে বিস্তারিত বক্তব্য দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। গতকাল বুধবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) আয়োজিত ‘টিপিং পয়েন্টস অব রিফর্ম অ্যাজেন্ডা ফর দ্য টার্ন অ্যারাউন্ড অব দ্য ব্যাংকিং সেক্টর অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।


গভর্নর বলেন, দেশে বন্যার কারণে সবজি ও খাদ্যদ্রব্যের দাম বৃদ্ধি পেলেও সরকারের নানা উদ্যোগের ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। তিনি জানান, আগামী জুনের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে এবং পরবর্তী অর্থবছরের মধ্যে তা ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। দীর্ঘমেয়াদে মূল্যস্ফীতি ৪-৫ শতাংশে নামিয়ে আনাই মূল লক্ষ্য বলে তিনি উল্লেখ করেন।

 

তিনি আরও বলেন, "মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসলে ব্যাংকের সুদ ও নীতি সুদহার কমিয়ে আনা হবে, যা অর্থনীতির উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।"


গভর্নর বলেন, "বাংলাদেশের অর্থনীতির চারটি স্তম্ভ—ব্যাংকিং, স্টক মার্কেট, ইনস্যুরেন্স, এবং বন্ড মার্কেট—কোনোটাই এখনও শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছাতে পারেনি। বন্ড মার্কেট গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি, আর ইনস্যুরেন্স এবং স্টক মার্কেটের অবস্থাও সন্তোষজনক নয়। ফলে ব্যাংকিং খাতের ওপরই বড় দায়িত্ব চাপছে।"

 

তিনি বলেন, ব্যাংকিং খাতের ওপর নির্ভরতা কমানোর জন্য বিকল্প দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক উৎস খুঁজে বের করতে হবে।দেশে চলমান তারল্য সংকট এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ার বিষয়টি গভর্নর তুলে ধরেন। তিনি জানান, "রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার থেকে কমে এখন ২৪ বিলিয়নে নেমে এসেছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে আমানত বৃদ্ধি এবং অর্থ পাচার বন্ধ করা অত্যন্ত জরুরি।"


অর্থ পাচার বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, "যদি অর্থ পাচার বন্ধ করা না যায় এবং টাকা বাইরে চলে যায়, তবে ব্যাংকিং ও অর্থনৈতিক খাতের প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হবে।"


বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ব্যাংক ও অর্থনৈতিক খাতের বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন। সংলাপে দেশের ব্যাংকিং খাতকে শক্তিশালী করার জন্য কাঠামোগত সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হয়।

 

সংলাপ শেষে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, "যেকোনো উপায়ে ব্যাংকিং খাতকে চাপমুক্ত করতে হবে এবং অন্যান্য আর্থিক খাতগুলোকে উন্নত করার মাধ্যমে অর্থনীতির ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে হবে।"

 

এই সংলাপ দেশের আর্থিক খাতের টেকসই উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে নতুন দিকনির্দেশনা দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।

মূল্যস্ফীতি জুনের মধ্যে ৭ শতাংশে আনা হবে: গভর্নর