ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
১০ জুলাই, ২০২৪ | ৪:৩২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
মোংলা বন্দরে বাড়ল আমদানি-রপ্তানি, সক্ষমতা বাড়াতে নতুন প্রকল্প
১০ জুলাই, ২০২৪ | ৪:৩২ পিএম
![মোংলা বন্দরে বাড়ল আমদানি-রপ্তানি, সক্ষমতা বাড়াতে নতুন প্রকল্প](https://i.vatbondhu.com/images/original-webp/2024/07/10/20240710163054_original_webp.webp)
মোংলা বন্দর খুলনার অন্যতম শ্রেষ্ঠ আকর্ষণ এবং বাংলাদেশের দ্বিতীয় সমুদ্র বন্দর। এ বন্দরকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে নতুন নতুন শিল্প কারখানা, সস্প্রসারিত হয়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য। ফলে কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে বেকারত্ব দূরীকরণসহ দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চল তথা দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে এ বন্দর ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। তারই ধারাবাহিকতায় মোংলা বন্দরে বেড়েছে আমদানি-রপ্তানি, বিদেশী জাহাজের আগমনসহ সব সূচকের ঊর্ধগতি।
জানা যায়, ২০২২-২০২৩ ও ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে বন্দরের উল্লেখযোগ্য অর্জন হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৮২৭টি জাহাজ এসেছিল। অন্যদিকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৮৪৬টি জাহাজ এসেছে। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় এ বছরের মোট ১৯টি জাহাজ বেড়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে জাহাজ আগমনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮৪০টি। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ৬টি জাহাজ বেশি এসেছে।
কার্গো হ্যান্ডলিং: ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৯৯ দশমিক ০৫ লাখ টন কার্গো হ্যান্ডলিং করা হয়েছিল। অন্যদিকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১০৮ দশমিক ৬৮ লাখ টন কার্গো হ্যান্ডলিং করা হয়েছে।
কন্টেইনার হ্যান্ডলিং: ২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট ২৬ হাজার ৫৮৩টি ইইউজ কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করা হয়েছিল। অন্যদিকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৩১ হাজার ৪৪টি ইইউজ কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করা হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট ৩০২ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছিল। অন্যদিকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৩১৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। পূর্ববর্তী অর্থ বছরের তুলনায় চলতি অর্থ বছরের অর্জিত রাজস্ব আয় ২৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ বেড়েছে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল শাহীন রহমান জানান, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে মোংলা বন্দরের গতিশীলতা বেড়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে এ বন্দর দিয়ে ৮৪৬টি বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ আগমন করে। রিকন্ডিশন গাড়ি আমদানি হয় ১৫ হাজার ৩৪০ ইউনিট। এ সময়ে কার্গো হ্যান্ডলিংও কন্টেইনার হ্যান্ডলিং বেড়েছে। সব সূচক পজিটিভ ধারায় থাকায় বন্দরে নিট মুনাফা ২৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ বেড়েছে।
চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল শাহীন রহমান আরো জানান, মোংলা বন্দর দিয়ে যেসব পণ্য আমদানি হয় তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে খাদ্যশস্য, সার, গাড়ি, এলপি গ্যাস, স্লাগ, লাইম স্টোন, সয়াবিন তেল, জিপসাম, মেশিনারি, কয়লা, পাথর, ক্লিংকার, পামওয়েল, ক্রুড ওয়েল, ফ্লাই এ্যাস ইত্যাদি। কন্টেইনারে আমদানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে ইলেকট্রনিক্স পণ্য, মোবাইল এক্সোসরিজ, ট্রাইসাইকেল পার্টস, ডাল, ক্যালসিয়াম কার্বনেট, পাটজাতপণ্য, খালি গ্যাস সিলিন্ডার, খেলনা, মেশিনার, রেফ্রিজারেন্ট গ্যাস, মটরপার্টস, লগ, উডেন লগ ইত্যাদি।
এছাড়া রপ্তানি করা প্রধান পণ্যসমূহ হচ্ছে গার্মেন্টস, পাট, পাটজাত পণ্য, চিংড়ি, সাদা মাছ, শুকানো মাছ, ক্লেটাইলস, কাঁকড়া, মেশিনারি, কটন ইয়ার্ন ইত্যাদি। এছাড়া মোংলা ইপিজেড থেকে বিশ্বের প্রায় ৩৮টি দেশে গার্মেন্টস, কাগজের তৈরি পণ্য, ইলেকট্রনিক্স পণ্য, ব্যাগ, পাটজাত পণ্য, গাড়ির সিট, হিটার, মারবেল টাইলস, হিউম্যান হেয়ার, জিপার, সিগারেট, জ্যাকেট এবং নেট ইত্যাদি পণ্য রপ্তানি হয়।
মোংলা বন্দরের অবকাঠামোগত সক্ষমতার (জেটি/গুদাম/ইয়ার্ড সুবিধাদি) মধ্যে রয়েছে ৫টি জেটি প্রতিটির দৈর্ঘ্য ১৮২ মিটার, ৪টি ট্রানজিট শেড এর ধারণক্ষমতা ৩০ হাজার টন, স্টাফিং ও আনস্টাফিং শেড ১টি আয়তন ৪ হাজার ৭৪৩ বর্গমিটার (প্রায়), ২টি ওয়্যারহাউজ এর ধারণক্ষমতা ৩০ হাজার টন, ৬টি কন্টেইনার ইয়ার্ডের আয়তন ৬৮ হাজার ৬৬৭ বর্গমিটার (প্রায়)। কার ইয়ার্ড ২টি যেখানে প্রায় ২ হাজার গাড়ি সংরক্ষণ করা যায়।
আপগ্রেডেশন অব মোংলা পোর্ট প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বার্ষিক ১ দশমিক ৫০ কোটি টন কার্গো, ৩ দশমিক ৫০ থেকে ৪ লাখ ইইউজ কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করা সম্ভব হবে। এতে করে বন্দরের কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিপিং এজেন্ট, সিএন্ডএফ এজেন্ট, স্টিভেডরিং এবং শ্রমিক শ্রেণির জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
এছাড় বন্দরের ২টি অসম্পূর্ণ জেটি নির্মাণ (পিপিপি এর মাধ্যমে) প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বার্ষিক ১ লাখ ইইউজ কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করা সম্ভব হবে। এতে করে বন্দরের কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিপিং এজেন্ট, সিএন্ডএফ এজেন্ট, স্টিভেডরিং এবং শ্রমিক শ্রেণির জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
- ট্যাগ সমূহঃ
- মোংলা বন্দর
- আমদানি
- রপ্তানি
![মোংলা বন্দরে বাড়ল আমদানি-রপ্তানি, সক্ষমতা বাড়াতে নতুন প্রকল্প](https://i.vatbondhu.com/images/original/2024/04/22/20240422145104_original.png)