ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ১১:৩ এএম
অনলাইন সংস্করণ
এ সম্পর্কিত আরো খবর
যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে সৌদি আরব
২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ১১:৩ এএম

ছবি: সংগ্রহ
মো সোহাগ: মরু অঞ্চলের মাটির নিচে শক্তিশালী ব্যালিস্টিক মিসাইল ঘাঁটি নির্মাণ করছে সৌদি আরব। গত কয়েক দশক ধরে কোনরকম সরগোল ছাড়াই গোপনে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সব ক্ষমতা বাড়ানোর কার্যক্রম চালাচ্ছে দেশটির সামরিক বাহিনী। ফিলিস্তিন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ভারতের টানা পড়ানোর মাঝেই নতুন করে সামনে আসলো কিছু স্যাটেলাইট চিত্র।
সম্প্রতি মিডলইস্ট আইয়ের প্রকাশিত একটা রিপোর্ট অনুসারে সেন্ট্রাল সৌদির আল নাভানিয়া অঞ্চলে দেখা গেছে নতুন একটি ভূগর্ভস্থ মিসাইল ঘাটির নির্মাণ কাজ। মধ্যপ্রাচ্যের তেল সমৃদ্ধ দেশটি কেন মনোযোগ দিচ্ছে দূরপাল্লার মিসাইলে প্রতিরক্ষা নাকি যুদ্ধ? কোন লক্ষ্যে মিলিটারি পাওয়ারের দিকে ছুটছেন সৌদি যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান।
১৯৮০ এর দশকে ইরান ইরাক যুদ্ধের সময় চীন থেকে ডি এফ থ্রি এ মিসাইল সংগ্রহ করে সৌদি আরব। আল সুলাইল ঘাঁটিতে স্থাপন করা ক্ষেপণাস্ত গুলো আঘাত হানতে পারত চার থেকে পাঁচ হাজার কিলোমিটার দূরের লক্ষ বস্তুতে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পশ্চিমা মিত্র সহ আন্তর্জাতিক মহলের তেমন কোন মনোযোগ আকর্ষণ না করেই গতিশীল হয়েছে দেশটির মিসাইল সম্প্রসারণ কার্যক্রম। ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্রাটেজিক স্টাডিজিক এর বরাতে মিডল ইস্ট আয়ের দেয়া সংবাদের যে নতুন মিসাইল বেজের তথ্য দেয়া হয় সেটি নির্মাণ শুরু হয় ২০১৯ সালে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে সম্পূর্ণ হয় বেশিরভাগ কাজ। চলমান আন্ডারগ্রাউন্ড মিসাইল বেজ ছাড়াও এর আগেও আল হাড়িক, আল সুলাইল,রানিয়া এবং আলো ওয়াতাহে বেশ কিছু ভূগর্ভস্থ ঘাটি স্থাপন করে রয়েল সৌদি স্ট্রাটেজিক মিসাইল ফোর্স। লং লেন্স মিসাইল এর পুরো প্রকল্প সব সময়ই ছিল পর্দার আড়ালে। ২০১৪ সালে চীনের তৈরি ডং ফ্যাং ৩ ব্যালিস্টিক মিসাইল প্রদর্শনের পর সামনে আসে সৌদির ক্ষেপণাস্ত শক্তির বিষয়। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা জানায় চীনের সহায়তা নিয়ে নিজেরাই ব্যালিস্টিক মিসাইল তৈরি করছে সৌদি।
২০২২ সালের আরেকটা রিপোর্টে জানানো হয় প্রকোডাইল নামের একটি প্রকল্পের আওতায় চাইনিজ মিসাইল আমদানি পরিকল্পনা করছে রিয়াদ। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সবসময়ই তেলের বাজারে মুঘল হিসেবে নিজেদের পরিচিতি বজায় রাখলেও সৌদি স্ট্রাটেজিক মিসাইল ফোর্সের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড সৃষ্টি করছে নানা প্রশ্ন। নতুন মিসাইল বেজ তৈরির পাশাপাশি ওয়াদি আল দাওয়াছের সহ পুরনো বিভিন্ন ঘাঁটিতে অবকাঠামো নির্মাণ কার্যক্রম চালানোর খবর জানা গেছে বিভিন্ন রিপোর্টে। আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু না বললেও আরব রাষ্ট্রটির সামরিক শক্তি বৃদ্ধির দিকে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাদের রয়েছে সতর্ক নজর। তেলের উপর নির্ভরতা কমিয়ে আয়ের পুন্যান্য মাধ্যম তৈরিতে উঠে পড়ে লেগেছে সৌদি আরব।
দেশটির ভীষণ ২০৩০ কর্মসূচির অংশ হিসেবে পর্যটনের পাশাপাশি একাধারে চলছে অভ্যন্তরীণ প্রতিরক্ষা শিল্প জোরদারের চেষ্টা। নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের ধারণা সরাসরি যুদ্ধ প্রস্তুতির অংশ না হলেও আগামীতে সংকটের সময় ব্যালিস্টিক মিসাইল সমৃদ্ধ করার এমন কৌশল পদক্ষেপের ফায়দা তুলতে পারবে দেশটির সামরিক বাহিনী। তবে স্ট্রাটিজিক মিসাইল ফোর্সকে শক্তিশালী করার মধ্য দিয়ে আসলে কি চাইছেন সৌদি যুবরাজ সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না।
