ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ১০:৪৬:১৮ এএম

রপ্তানি হচ্ছে তৈরি পোশাকের ২৮ ধরনের অ্যাকসেসরিজ

১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ১০:০ পিএম

রপ্তানি হচ্ছে তৈরি পোশাকের ২৮ ধরনের অ্যাকসেসরিজ

ছবি: সংগ্রহ

সাভারের আশুলিয়া অঞ্চলে তৈরি পোশাক কারখানাগুলোতে নিয়মিত বিরতিতে চলছে শ্রম অসন্তোষ। অন্যায্য দাবি মেনে নেওয়ার পরও নতুন নতুন দাবি তোলা হচ্ছে। সাধারণ শ্রমিকরা শান্তিপ্রিয়। তবে শ্রমিক নামধারী কিছু দুষ্কৃতকারী এ অঞ্চলের কারখানাগুলো অশান্ত করার চেষ্টা করছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে আশুলিয়া অঞ্চলের শিল্প মালিকদের নিয়ে স্বতন্ত্র একটি প্ল্যাটফর্ম গঠন করা হচ্ছে। মালিক শ্রমিক সবাই মিলে কারখানায় উৎপাদন কার্যক্রমের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করা এ প্ল্যাটফর্মের মূল লক্ষ্য।

 

শনিবার আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলের তৈরি পোশাক কারখানা মালিকদের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রাজধানীর উত্তরায় তৈরি পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের প্রশাসক আনোয়ার হোসেন। বৈঠকে ওই অঞ্চলের কারখানার ৩১ জন মালিক উপস্থিত ছিলেন।


বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে অনন্ত গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিজিএমইএর সহায়ক কমিটির সদস্য এনামুল হক খান বাবলু সমকালকে বলেন, আশুলিয়া অঞ্চলের পোশাক কারখানার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন তারা। তিনি বলেন, সারাদেশে সব কারখানা নির্বিঘ্নে চলছে। শুধু আশুলিয়ায় কেন, বার বার সমস্যা হচ্ছে তা বোঝার চেষ্টা করেছেন মালিকরা। ভালোমানের কারখানা এবং তুলনায় বেশি সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার পরও কেন সমস্যা হচ্ছে তা খতিয়ে দেখার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে বৈঠকে।

 

এদিকে শনিবারও কর্মবিরতি পালন করেছেন আশুলিয়ার বেশ কয়েকটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। সকালে ডংলিয়ান ও গিল্ডেন অ্যাক্টিভওয়্যার বাংলাদেশ লিমিটেড কারখানায় ভাঙচুর করে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির অভিযোগে দুই শ্রমিককে আটক করেছে শিল্প পুলিশ। তবে হা-মীম গ্রুপসহ কয়েকটি কারখানায় শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করেছেন বলে জানা গেছে।

 

শিল্প পুলিশ, শ্রমিক ও কারখানা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকালে আশুলিয়ার দক্ষিণ বাইপাইল এলাকার চীনা মালিকানাধীন ডংলিয়ন ফ্যাশন লিমিটেড কারখানায় ছাঁটাই করা শ্রমিকরা বিক্ষোভ করে। একপর্যায়ে তারা কারখানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ভাঙচুর চালায়। এ সময় পুলিশ বিক্ষোভকারী শ্রমিকদের ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দিলে তারা পার্শ্ববর্তী গিল্ডেন অ্যাক্টিভওয়্যার বাংলাদেশ লিমিটেড নামে আরেকটি বিদেশি মালিকানাধীন কারখানায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। এ সময় পুলিশ সেখান থেকে ধাওয়া দিয়ে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির অভিযোগে দুই শ্রমিককে আটক করেছে।

 

গত কয়েক দিনের ধারাবাহিকতায় শনিবার সকালেও কারখানায় হাজিরা নিশ্চিত করে কর্মবিরতি অব্যাহত রাখে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানের মালিকানাধীন স্টারলিং ক্রিয়েশন লিমিটেড, ক্রসওয়্যার লিমিটেড, আইডিএস, এইচ আর টেক্সটাইল ও ফ্যাশন ফোরামের শ্রমিকরা। এ পরিস্থিতিতে চারটি কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া শ্রম আইনের ১৩ (১) ধারা অনুযায়ী ‘নো ওয়ার্ক নো পে’ অর্থাৎ ‘কাজ নেই, মজুরি নেই’ নিয়মে বন্ধ রয়েছে চারটি তৈরি পোশাক কারখানা।

 

কর্মবিরতি পালনকারী শ্রমিকরা জানান, মূল্যস্ফীতি এবং নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির কারণে তাদের জীবনযাপন কঠিন হয়ে পড়েছে। বাধ্য হয়েই তারা বার্ষিক বেতন ১৫ শতাংশ বাড়ানোর দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেছেন। তবে বেতন বাড়ানোসহ ১৮ দফা দাবিতে টানা দুই মাস অচলাবস্থা সৃষ্টির পর শিল্পাঞ্চলে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসার মুহূর্তে পোশাক খাতে হঠাৎ করে অস্থিরতার পেছনে দেশি-বিদেশি ইন্ধন ও চক্রান্ত দেখছে মালিকপক্ষ।

 

আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া দু’জনকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শ্রমিকরা ইনক্রিমেন্ট বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলন ও কর্মবিরতি পালন করছেন। বিষয়টি আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে মীমাংসার চেষ্টা চলছে। সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতির উন্নতি করতে পুলিশ সক্রিয় আছে। এ ছাড়া যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, র‌্যাব, বিজিবি ও এপিবিএন সদস্য মোতায়েনসহ গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।

রপ্তানি হচ্ছে তৈরি পোশাকের ২৮ ধরনের অ্যাকসেসরিজ