ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ৯:১২:৪৩ পিএম

রমজান সামনে রেখে আমদানিতে জোর

৩১ অক্টোবর, ২০২৪ | ১০:৩৭ এএম

রমজান সামনে রেখে আমদানিতে জোর

ছবি: সংগ্রহ

ভোগ্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির এখনও অব্যাহত। এ জন্য টিসিবির মাধ্যমে যাতে দেশের মানুষকে কয়েকটি অতি প্রয়োজনীয় নিত্যপণ্য কম দামে দেওয়া যায়, সে জন্য খাদ্যপণ্য আমদানিতে জোর দিচ্ছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। সয়াবিন তেল, চিনি এবং ছোলার মতো কিছু নিত্যপণ্য কিনতে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ক্রয় কমিটিতে। একই সঙ্গে কৃষক যাতে পর্যাপ্ত সার পায় সে জন্য সারও আমদানি করবে সরকার।

 

ক্রয় কমিটির বৈঠক শেষে জানানো হয়, ২১৫ কোটি ৭৫ লাখ ৯ হাজার টাকার চিনি-ছোলা-সয়াবিন তেল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আগামী বছরের রমজান মাস সামনে রেখে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ফ্যামিলি কার্ডধারী ১ কোটি নিম্নআয়ের মানুষের কাছে স্বল্পমূল্যে বিক্রির লক্ষ্যে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে ৫ হাজার টন চিনি, ৬ হাজার টন ছোলা এবং ৩২ লাখ ৬০ হাজার লিটার সয়াবিন তেল কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়।

 

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে চিনি, তেল ও ছোলা কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। বুধবার অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে কমিটির বৈঠক হয়।

 

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ৫ হাজার টন চিনি ক্রয়ের একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারী ১ কোটি পরিবারের কাছে ভর্তুকি মূল্যে বিক্রির লক্ষ্যে ৫ হাজার টন চিনি ক্রয়ের জন্য স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে দুটি দরপ্রস্তাব জমা পড়ে।

 

দুটি দরপ্রস্তাবই আর্থিক ও কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপ্রস্তাবের সব প্রক্রিয়া শেষে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান সিটি সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড চিনি সরবরাহ করবে। প্রতি কেজি ১২০.৯২ টাকা হিসেবে মোট ব্যয় হবে ৬০ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। এই চিনি ২০২৫ সালের পবিত্র রমজান মাসে বিক্রয় করা হবে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে চিনি ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৪৪ হাজার টন।

 

সভায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ১০ হাজার টন ছোলা ক্রয়ের একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারী ১ কোটি পরিবারের কাছে আসন্ন রমজান মাসে ভর্তুকি মূল্যে বিক্রির লক্ষ্যে ১০ হাজার টন ছোলা ক্রয়ের জন্য আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ২টি দরপ্রস্তাব জমা পড়ে। ২টি দরপ্রস্তাবই আর্থিক ও কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়। এতে মোট ব্যয় হবে ১০১ কোটি ৯৯ লাখ ৪০ হাজার টাকা।

 

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আরেক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে বৈঠকে স্থানীয়ভাবে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ৩২ লাখ ৬০ হাজার লিটার সয়াবিন তেল কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

 

টিসিবি কর্তৃক ৩২ লাখ ৬০ হাজার লিটার সয়াবিন তেল সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ক্রয়ের জন্য স্থানীয় প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা মাল্টি ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেডের কাছ থেকে দরপ্রস্তাব চাওয়া হলে প্রতিষ্ঠানটি প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১৬৩.২৫ টাকায় দরপ্রস্তাব দাখিল করে। টিইসি কর্তৃক দরপ্রস্তাবটি পরীক্ষা শেষে রেসপনসিভ হয়।

 

দরপ্রস্তাবের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি কর্তৃক নেগোসিয়েশনের মাধ্যমে সুপারিশ করা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রতি লিটার ১৬৩.১৫ টাকা হিসেবে ৩২ লাখ ৬০ হাজার লিটার সয়াবিন তেল ক্রয়ে ব্যয় হবে ৫৩ কোটি ১৮ লাখ ৬৯ হাজার টাকা।

 

এ ছাড়া কৃষি খাতে ব্যবহারের জন্য ৯০ হাজার টন ইউরিয়া সার আমদানি করবে সরকার। এতে মোট ব্যয় হবে ৪০১ কোটি ৫ লাখ ৬২ হাজার টাকা। রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় বিভিন্ন দেশ থেকে পৃথক তিনটি প্রস্তাবের মাধ্যমে এই সার আমদানি করা হবে।

 

বৈঠকে সৌদি আরব থেকে পঞ্চম লটে ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনক্রমে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সৌদি আরব থেকে রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে ৫ লাখ ৪০ হাজার টন ইউরিয়া সার আমদানির জন্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সে চুক্তি অনুসারে সারের মূল্য নির্ধারণ করে পঞ্চম লটে ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার প্রতি টন ৩৮২.৬৭ মার্কিন ডলার হিসেবে ব্যয় হবে ১ কোটি ১৪ লাখ ৮০ হাজার ১০০ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৩৭ কোটি ৭৬ লাখ ১২ হাজার টাকা।

রমজান সামনে রেখে আমদানিতে জোর