ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ৬:৫০:৪২ পিএম

রাজস্ব ঘাটতি কমাতে ১২ হাজার কোটি টাকা বাড়তি আদায়

১২ জানুয়ারি, ২০২৫ | ১১:৪৭ এএম

রাজস্ব ঘাটতি কমাতে ১২ হাজার কোটি টাকা বাড়তি আদায়

ছবি: সংগ্রহ

গত বছর নিত্যপণ্যের বাজার ছিল একেবারে অস্থির, মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের জন্য দৈনন্দিন খরচ বহন করা কঠিন হয়ে পড়েছিল। এমন পরিস্থিতিতে, সরকারের নতুন শুল্ক-কর বৃদ্ধির পদক্ষেপ জীবনযাত্রাকে আরও কঠিন করে তুলবে, বিশেষ করে মধ্যম ও নিম্নমধ্যম আয়ের মানুষের জন্য। ৯ জানুয়ারি, ২০২৫ তারিখে সরকার নতুনভাবে মূল্য সংযোজন কর (মূসক/ভ্যাট) এবং সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর প্রজ্ঞাপন জারি করেছে, যা ইতিমধ্যেই কার্যকর হয়েছে।

 

 

অর্থনীতিবিদদের মতে, নতুন শুল্ক-কর বৃদ্ধির কারণে জীবনযাত্রার প্রভাব পড়বে এমন পণ্যের মধ্যে রয়েছে ফল, মুঠোফোন সেবা, ইন্টারনেট, রান্নার গ্যাস, পোশাক, রেস্তোরাঁর খাবার ইত্যাদি। এসব পণ্য ও সেবা এখন মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে, এবং শুল্ক-কর বৃদ্ধির ফলে এর দাম বাড়বে, যা খরচ বহন করা আরও কঠিন করে তুলবে।

 

 

ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, সরকারের উচিত ছিল শুল্ক-কর বৃদ্ধি না করে, বরং করের আওতা বাড়ানোর মাধ্যমে রাজস্ব বাড়ানো। অনেক ব্যবসায়ী ভ্যাট প্রদান করেন না, এবং তাদের করের আওতায় আনলে সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি পেত। তবে সরকারের এই সিদ্ধান্ত ব্যবসায়ীদের উপর আরও বোঝা চাপাবে এবং ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, এমন আশঙ্কা রয়েছে।

 

 

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) দাবি করেছে, নতুন শুল্ক-কর বৃদ্ধির মাধ্যমে বছরে ১২ হাজার কোটি টাকা বাড়তি রাজস্ব আদায় হবে, যা সরকারের রাজস্ব ঘাটতি কমাতে সহায়ক হবে। তবে, অর্থনীতিবিদরা এতে বিভক্ত মতামত প্রকাশ করেছেন। বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন এই সিদ্ধান্তকে বাস্তবতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ মনে করছেন না এবং বলছেন, এমন একটি সময়ে শুল্ক-কর বাড়ানো উচিত হয়নি যখন মূল্যস্ফীতি ইতোমধ্যে দুই অঙ্কের ঘরে রয়েছে।

 

 

এছাড়া, বিভিন্ন পণ্যে ভ্যাট এবং সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির পাশাপাশি, বেশ কিছু পণ্যে শুল্কের হারও বাড়ানো হয়েছে। যেমন, কিচেন টাওয়াল, টয়লেট টিস্যু, মুঠোফোন সিম কার্ড, রান্নার গ্যাস, পোশাক, রেস্তোরাঁর খাবার, এবং অনেক ধরনের ফলমূল ও পণ্যেও শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। এসবের ফলে সাধারণ মানুষের জন্য জীবনযাত্রা আরও কঠিন হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

 

 

এই নতুন শুল্ক-কর বৃদ্ধির ফলে, সরকারি রাজস্ব বৃদ্ধি হলেও সাধারণ জনগণের খরচ আরও বাড়বে, এবং তাদের জীবনযাত্রায় চাপ সৃষ্টি হবে। সরকারের উচিত, ভ্যাট ব্যবস্থা সহজ করে এবং প্রয়োজনীয় পণ্য ও সেবায় ভ্যাট কমিয়ে মানুষের উপর চাপ কমানো।

রাজস্ব ঘাটতি কমাতে ১২ হাজার কোটি টাকা বাড়তি আদায়