ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ | ২:৪০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
রেমিট্যান্স ও রপ্তানিতে ভর করে জুলাই–নভেম্বরে বৈদেশিক লেনদেন ভারসাম্যে উন্নতি
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ | ২:৪০ পিএম
![রেমিট্যান্স ও রপ্তানিতে ভর করে জুলাই–নভেম্বরে বৈদেশিক লেনদেন ভারসাম্যে উন্নতি](https://i.vatbondhu.com/images/original-webp/2025/01/10/20250110110236_original_webp.webp)
ছবি: সংগ্রহ
রেমিট্যান্স প্রবাহ ও রপ্তানিতে ভালো প্রবৃদ্ধি থাকায় চলতি অর্থবছরের জুলাই–নভেম্বর সময়ে দেশের বৈদেশিক লেনদেন ভারসাম্য হিসেবে পরিচিত ব্যালান্স অভ পেমেন্টের ঘাটতি প্রায় ৪৯.৫ শতাংশ কমে এসেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে ব্যালান্স অভ পেমেন্টের সার্বিক ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২.৪৭ বিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ২.৪৩ বিলিয়ন ডলার কম।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-এর (সিপিডি) ডিস্টিংগুইশড ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান এই ঘাটতি হ্রাসকে দেশের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেন, 'এই অর্জনে রপ্তানি ও রেমিট্যান্স মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে। কারণ, বৈদেশিক ঋণ বা অনুদানের মতো উপাদানগুলোতে আমরা তেমন প্রবৃদ্ধি দেখিনি।'
বৈদেশিক ঋণে কম প্রবৃদ্ধি থাকার পরও ঘাটতি কমার একটা ভালো দিকও আছে মন্তব্য করে এ অর্থনীতিবিদ বলেন, 'আমাদের বুঝতে হবে, এই ঘাটতি কমেছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার আয় থেকে, এটা ভবিষ্যতে ঋণ পরিশোধের চাপ বাড়াবে না।'
বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে ২০ শতাংশ চলতি অর্থবছরের জুলাই–নভেম্বর সময়ে রপ্তানি ও আমদানির মধ্যে ব্যবধান বা বাণিজ্য ঘাটতি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ২০ শতাংশ কমেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা এ উন্নতির পেছনে রপ্তানির শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি ও আমদানি হ্রাসকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
চলতি অর্থবছরের জুলাই–নভেম্বর শেষে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৭.৮৮ বিলিয়ন ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৯.৮৬ বিলিয়ন ডলার। পাঁচ মাসে রপ্তানি দেশের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০.১ শতাংশ, আর আমদানি কমেছে ১.২ শতাংশ।
আমদানি প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলার কমে যাওয়া এবং রপ্তানি আয় প্রায় ১.৬৬ বিলিয়ন বেড়ে যাওয়ায় বাণিজ্য ঘাটতি কমানো গেছে।
অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, 'বাণিজ্য ঘাটতি কমে যাওয়াকে ইতিবাচকভাবেই দেখছি। গত অর্থবছরে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি অনেক কম ছিল, এখন সেটি বেড়েছে।
'অন্যদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংকোচনমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার কারণে আমদানিতে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি আছে। তবে বছর শেষে এটি ইতিবাচক ধারায় ফিরে আসবে বলে ধারণা করছি।'
চলতি হিসাবে ঘাটতি কমেছে ৯৪ শতাংশ ঊর্ধ্বমুখী রেমিট্যান্স প্রবাহের ওপর ভর করে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই–নভেম্বর সময়ে দেশের ব্যালান্স অব পেমেন্টের অন্যতম উপাদান চলতি হিসাবে ঘাটতি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৯৪ শতাংশ কমেছে।
নভেম্বর শেষে দেশের চলতি হিসাবে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২২৬ মিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৩.৯৪ বিলিয়ন ডলার।
চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ১১.১৪ বিলিয়ন ডলার। গত বছরের এই পাঁচ মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ৮.৮১ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২.৩৩ বিলিয়ন ডলার বা ২৬ শতাংশ।
এ বিষয়ে অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, 'মূলত রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি হওয়ার কারণে চলতি হিসাবের ঘাটতি কমে এসেছে। গত কয়েক বছর ধরে চলতি হিসাবের ঘাটতি ধারাবাহিকভাবে বাড়ছিল। এই ঘাটতিটা কমিয়ে আনা পুরো অর্থনীতির জন্য খুব ভালো দিক।'
আর্থিক হিসাবে ঘাটতি ৫৮১ মিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে ওভারডিউ রপ্তানি আয়গ্যল দেশে আসায় এবং স্বল্পমেয়াদি লোনের বহিঃপ্রবাহ কমার কারণে চলতি অর্থবছরের জুলাই–নভেম্বর সময়ে দেশের ব্যালান্স অভ পেমেন্টের আরেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান আর্থিক হিসাবে ঘাটতিও কমেছে।
জুলাই–নভেম্বর সময় শেষে দেশের আর্থিক হিসাবে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৫৮১ মিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৮১১ মিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ চলতি অর্থবছরে এই ঘাটতি প্রায় ২৩০ মিলিয়ন ডলার কমেছে।
![রেমিট্যান্স ও রপ্তানিতে ভর করে জুলাই–নভেম্বরে বৈদেশিক লেনদেন ভারসাম্যে উন্নতি](https://i.vatbondhu.com/images/original/2024/04/22/20240422145104_original.png)