ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ৮:৫৬:৫৩ পিএম

লড়াইয়ের পথে নিম্ন আয়ের আমেরিকানদের জীবন

২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ১:৩৯ পিএম

লড়াইয়ের পথে নিম্ন আয়ের আমেরিকানদের জীবন

ছবি: সংগ্রহীত

২৬ বছর বয়সী চিউগো আকুজুবি, যিনি এ বছরের শুরুতে হিউস্টন থেকে ব্যক্তিগত কারণে বাড়ি ছেড়েছেন, বর্তমানে খাবার সহায়তা এবং বন্ধুদের আর্থিক সাহায্যের উপর নির্ভর করছেন। রাতের বেলা তিনি নর্থ টেক্সাসে এক বন্ধুর সোফায় ঘুমান।

 

আকুজুবি ২০২১ সালে স্নাতক শেষ করেছেন, তবে একটি পূর্ণকালীন চাকরি খুঁজে পাওয়া তার জন্য এখনো বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি বর্তমানে গ্রাফিক ডিজাইন, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এবং কপিরাইটিংয়ের মতো খণ্ডকালীন কাজ করছেন।

 

আকুজুবি হচ্ছেন সেই লাখ লাখ আমেরিকানের মধ্যে একজন, যারা বর্তমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে একক ব্যক্তির জন্য দারিদ্র্যসীমা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৫,৪৮০ ডলার। কিন্তু তাদের আয় অনুমান করা হচ্ছে ১০,০০০ ডলারেরও কম।

 

যদিও গত কয়েক বছরে জীবনযাত্রার ব্যয় কিছুটা কমেছে, নিম্ন আয়ের আমেরিকানরা এখনও উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি এবং বাড়তি সুদের হারের প্রভাবে ভুগছেন। যদি ডোনাল্ড ট্রাম্প কানাডা ও মেক্সিকো থেকে আমদানি করা পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক এবং চীনের পণ্যের উপর ৬০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন, তাহলে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে।

 

আকুজুবি বলেন, “আমি জানি না কীভাবে এতদিন বেঁচে আছি। যদি পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়, দরিদ্র মানুষদের টিকে থাকার নতুন উপায় খুঁজতে হবে। আমরা যা আছে তা নিয়ে চলতে শিখেছি।”

 

 

মুদ্রাস্ফীতি ২০২২ সালে ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চে পৌঁছানোর পর বর্তমানে অনেক কমে এসেছে। কিন্তু গত নভেম্বরের মূল্যসূচক অনুযায়ী, জিনিসপত্রের দাম ২০২০ সালের জানুয়ারির তুলনায় ২২.২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

 

২০২৩ সালে ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার সর্বোচ্চ পর্যায়ে নেওয়ার পর সেপ্টেম্বর থেকে তা কমাতে শুরু করেছে। তবে অর্থনীতির কিছু অংশে ঋণের খরচ এখনও চাপ সৃষ্টি করছে। ব্যাংক অফ আমেরিকার একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রায় ৩০ শতাংশ আমেরিকান পরিবার তাদের আয়ের ৯৫ শতাংশের বেশি বাসাভাড়া, বাজার খরচ এবং গ্যাস-পানির বিলের মতো প্রয়োজনীয় খাতে ব্যয় করছে।

 

 

যদি ট্রাম্প নতুন শুল্ক আরোপ করেন, তাহলে নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোর ওপর এর বড় প্রভাব পড়বে। এর ফলে ২০২৩ সালের তুলনায় প্রতি পরিবারের বার্ষিক ক্রয়ক্ষমতা প্রায় ১,২০০ ডলার কমে যেতে পারে। যদিও দেশীয় পণ্য ব্যবহারে এই প্রভাব কিছুটা কমানো সম্ভব, তবুও এটি দীর্ঘমেয়াদি সমাধান নয়।

 

 

ওয়েলস ফার্গোর অর্থনীতিবিদ শ্যানন গ্রেইন বলেছেন, “আমরা এখন ভিন্ন ধরনের মুদ্রাস্ফীতি পরিস্থিতি মোকাবিলা করছি। ট্রাম্পের শুল্ক নীতির ফলে এককালীন মূল্য সমন্বয় হবে, তবে নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য এটি বড় ধরনের চাপ তৈরি করবে।”

 

তিনি আরও বলেন, “আগামী বছর ধীরগতিতে হলেও ব্যয় বাড়বে, যা নিম্ন আয়ের পরিবারের জন্য আরও অনিশ্চয়তা তৈরি করবে। তারা ইতোমধ্যেই মুদ্রাস্ফীতি এবং উচ্চ সুদের হারের চাপে আছে।”

 

 

বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য ক্রমাগত চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। তাদের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাচ্ছে, এবং ভবিষ্যতে শুল্ক নীতির কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে। তাই সবার জন্য সহনশীল অর্থনৈতিক নীতি নিশ্চিত করার পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

 

লড়াইয়ের পথে নিম্ন আয়ের আমেরিকানদের জীবন