ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ১২:০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
শনিবারের মধ্যে জিম্মিদের ফেরত না দিলে গাজায় ফের যুদ্ধ শুরু হবে: নেতানিয়াহু
১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ১২:০ পিএম
![শনিবারের মধ্যে জিম্মিদের ফেরত না দিলে গাজায় ফের যুদ্ধ শুরু হবে: নেতানিয়াহু](https://i.vatbondhu.com/images/original-webp/2025/02/12/20250212152228_original_webp.webp)
ছবি: সংগ্রহ
হামাস শনিবার দুপুরের (বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টা) মধ্যে জিম্মিদের ফিরিয়ে না দিলে গাজায় আবারও তীব্র সামরিক অভিযান শুরু হবে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। হামাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা অস্ত্রবিরতি চুক্তি মেনে চলতে প্রস্তুত এবং ইসরায়েলকেই যে কোনো জটিলতার জন্য দায়ী করতে হবে।
নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, হামাসের ঘোষণার পরই ইসরায়েলি বাহিনী গাজার ভেতরে ও চারপাশে মোতায়েন করা হয়েছে এবং এই প্রস্তুতি খুব শিগগিরই সম্পন্ন হবে। তিনি বলেন, 'যদি শনিবারের মধ্যে হামাস আমাদের জিম্মিদের ফেরত না দেয়, তাহলে অস্ত্রবিরতি শেষ হবে এবং হামাসের চূড়ান্ত পরাজয় না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চলবে।'
তবে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের মধ্যে এ বিষয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, হামাস যদি শনিবারের জন্য নির্ধারিত তিনজন জিম্মিকে মুক্তি দেয়, তবে অস্ত্রবিরতি অব্যাহত থাকতে পারে। তবে ইসরায়েলের পরিবহনমন্ত্রী মিরি রেগেভ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, আমরা স্পষ্ট সিদ্ধান্ত নিয়েছি—শনিবার সব জিম্মিদের মুক্তি না দেওয়া হলে, যুদ্ধ অব্যাহত থাকবে।
হামাস অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল অস্ত্রবিরতি চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করছে এবং মানবিক সহায়তা আটকে দিচ্ছে। তবে ইসরায়েল এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও ইসরায়েলকে অস্ত্রবিরতি চুক্তি বাতিল করার পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, যদি শনিবারের মধ্যে সব জিম্মি মুক্তি না দেওয়া হয়, তাহলে যুদ্ধ শুরু হোক।
হামাস ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ট্রাম্পের প্রস্তাবিত 'পরবর্তী গাজার রূপরেখা' প্রত্যাখ্যান করেছে। ট্রাম্পের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, গাজায় মার্কিন প্রশাসন থাকবে এবং দুই মিলিয়ন ফিলিস্তিনিকে সরিয়ে সেখানে নতুন অবকাঠামো তৈরি করা হবে। হামাস এটিকে 'জাতিগত নির্মূলকরণের পরিকল্পনা' বলে অভিহিত করেছে।
চলমান অস্ত্রবিরতির প্রথম ধাপে ৩৩ জন ইসরায়েলি জিম্মির বিনিময়ে ১ হাজার ৯০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার কথা রয়েছে। গত ১৯ জানুয়ারি অস্ত্রবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ১৬ জন জীবিত জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, পাশাপাশি পাঁচজন থাই নাগরিককেও মুক্তি দিয়েছে হামাস।
তবে এখনও ১৭ জন ইসরায়েলি জিম্মি রয়ে গেছে, যাদের মধ্যে দুই শিশু, এক নারী, পাঁচজন ৫০ বছরের বেশি বয়সী পুরুষ এবং নয়জন ৫০ বছরের নিচে রয়েছেন। তাদের মধ্যে আটজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, তবে কেবল একজনের নাম প্রকাশ করা হয়েছে।
এদিকে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা দক্ষিণাঞ্চলে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করছে এবং যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত ।
উল্লেখ্য, হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলার জবাবে গাজায় ইসরায়েল সামরিক অভিযান শুরু করে। হামাসের হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হয় এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসেবে, এরপর থেকে গাজায় ইসরায়েলের অভিযানে এখন পর্যন্ত ৪৮ হাজার ২১০ জন নিহত হয়েছে।
এই যুদ্ধের কারণে গাজার জনসংখ্যার বেশিরভাগ মানুষ একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে, অবকাঠামোর প্রায় ৭০ শতাংশ ধ্বংস হয়ে গেছে এবং খাদ্য, ওষুধ ও আশ্রয়ের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
![শনিবারের মধ্যে জিম্মিদের ফেরত না দিলে গাজায় ফের যুদ্ধ শুরু হবে: নেতানিয়াহু](https://i.vatbondhu.com/images/original/2024/04/22/20240422145104_original.png)