ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
৭ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৯:০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
শীতে সংকটে পঞ্চগড়ের পাথর শ্রমিক, আয় কমেছে অর্ধেক
৭ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৯:০ পিএম
![শীতে সংকটে পঞ্চগড়ের পাথর শ্রমিক, আয় কমেছে অর্ধেক](https://i.vatbondhu.com/images/original-webp/2025/01/07/20250107130948_original_webp.webp)
ছবি: সংগ্রহ
উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে ক্রমাগত শৈত্যপ্রবাহ এবং প্রচণ্ড ঠান্ডার কারণে পাথর-বালি শ্রমিকদের জীবন কঠিন হয়ে পড়েছে। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে শীতের তীব্র প্রভাবে এ শ্রমিকদের জীবন হয়ে ওঠে মানবেতর। জীবিকার তাগিদে ঠান্ডা পানি ও শীতের সঙ্গে লড়াই করে তাদের পাথর-বালি উত্তোলন করতে হয়। দীর্ঘদিন ধরে এসব পাথর-বালি দেশের বাড়ি, ঘর, রাস্তা এবং অবকাঠামো নির্মাণে ব্যবহৃত হয়ে আসছে, কিন্তু বিগত সরকারগুলো এই শ্রমিকদের কল্যাণে উল্লেখযোগ্য কোনো উদ্যোগ নেয়নি।
পঞ্চগড়ের ‘হিমালয়ান সমতল অঞ্চল’ হিসেবে পরিচিত এই জেলা দিয়ে বয়ে গেছে প্রায় ৫০টি নদী। মহানন্দা, ডাহুক, করোতোয়া, বেরং, চাওয়াই, তালমা এবং বুড়ি তিস্তা নদীসহ বিভিন্ন নদী থেকে প্রায় ২০ হাজার শ্রমিক দীর্ঘদিন ধরে পাথর-বালি উত্তোলনের কাজ করছেন। এছাড়া এই খাতের সঙ্গে জড়িত আরও ৩০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। তবে শীতকালে হিমালয় থেকে আসা হিম বাতাসে এসব নদীর পানি হয়ে যায় বরফ শীতল। শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়ে এই জেলার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। এবছরও নভেম্বরের শেষ থেকে শীতের তীব্রতা অনুভূত হচ্ছে।
তীব্র শীত এবং ঘন কুয়াশার কারণে দিনের অনেক পরে সূর্যের দেখা মিললেও তা যথেষ্ট উষ্ণতা দিতে পারছে না। সাধারণ মানুষ ঘর থেকে বের হতে না পারলেও পাথর-বালি শ্রমিকদের জীবিকার তাগিদে কাজে যেতে হচ্ছে। তবে তারা সময়মতো কাজ শুরু করতে পারছেন না, যার ফলে তাদের আয় কমে গেছে।
গ্রীষ্মকালে দৈনিক এক হাজার টাকা আয় করলেও বর্তমানে তারা মাত্র ৫০০-৬০০ টাকা আয় করতে পারছেন। এদিকে জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদের সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। অনেক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। ভজনপুর এলাকার শ্রমিক নজিবুল ইসলাম জানান, আগে ভোর থেকে কাজ করে বেশি আয় হতো, কিন্তু এখন দুপুরের দিকে কাজে যেতে হয় এবং বিকেলের আগেই কাজ শেষ করতে হয়।
অপর শ্রমিক করিমুল ইসলাম জানান, অনেক শ্রমিক অসুস্থ হওয়ায় তাদের আয়ের টাকা ওষুধ কিনতেই শেষ হয়ে যায়। তিনি অভিযোগ করেন, বিগত সরকার তাদের জন্য কোনো সহায়তা করেনি। তারা কখনো কম্বল বা অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাননি।
পাথর-বালি শ্রমিকদের দীর্ঘদিনের অবদানের পরও তাদের জীবনমান উন্নয়নে কোনো উদ্যোগ নেয়নি পূর্বের সরকার। তবে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, এবছর শ্রমিকদের তালিকা করে তাদের জন্য অনুদানের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। জেলা প্রশাসক মো. সাবেত আলী জানান, শীতকালে শ্রমিকদের আয়ে ধস নামে এবং অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের জীবনমান উন্নয়নে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে আবেদন জানানো হয়েছে।
![শীতে সংকটে পঞ্চগড়ের পাথর শ্রমিক, আয় কমেছে অর্ধেক](https://i.vatbondhu.com/images/original/2024/04/22/20240422145104_original.png)