আদালতের আদেশে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা, তাঁর পরিবার এবং দলের স্বার্থসংশ্লিষ্ট মোট ১২৪টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন এই আদেশ দেন।

আরও পড়ুন

মোদির শপথে যোগ দিতে আগামীকাল ভারত যাচ্ছেন শেখ হাসিনা

দুদকের আবেদনে বলা হয়, এসব ব্যাংক হিসাবে বিপুল পরিমাণ অর্থ জমা রয়েছে, যা তদন্তের স্বার্থে অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন।

দুদকের তথ্য অনুযায়ী, আওয়ামী লীগের ব্যাংক হিসাব (১০টি): ৩৭ কোটি ৮২ লাখ ৯৬ হাজার ৬১০ টাকা। শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাব (১৭টি): ৩ কোটি ৮৩ লাখ ৬৪ হাজার ৯৫৮ টাকা। সিআরআই-এর ব্যাংক হিসাব (১৫টি): ৪০ কোটি ৮৩ লাখ ৬৬ হাজার ১৩৬ টাকা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের ব্যাংক হিসাব (২৯টি): ৪৬৬ কোটি ২৬ লাখ ৮৮ হাজার ২৭৬ টাকা।

শেখ হাসিনার ১৭টি ব্যাংক হিসাবের মধ্যে একটি হিসাবে মাত্র পাঁচ টাকা, আরেকটিতে ১৫০ টাকা জমা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। তবে একটি যৌথ হিসাবে সর্বোচ্চ ১ কোটি ৬১ লাখ টাকা রয়েছে, যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার নামে খোলা।

শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের দুটি ব্যাংক হিসাবে ১ কোটি ১৭ লাখ ১৫ হাজার ২৭১ টাকা, শেখ রেহানার ছয়টি ব্যাংক হিসাবে ২ কোটি ২৩ লাখ ৯৬ হাজার ১৬৭ টাকা জমা থাকার তথ্য দিয়েছে দুদক।

আদালত শেখ হাসিনার পরিবারের বেশ কিছু স্থাবর সম্পদ জব্দের আদেশও দিয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে, সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদের ‘সুধা সদন’ (ধানমন্ডি),  শেখ রেহানা ও রাদওয়ান মুজিবের গাজীপুরের সম্পদ,  টিউলিপ সিদ্দিকের গুলশানের ফ্ল্যাট।

এছাড়া আদালত শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ, সায়মা ওয়াজেদ, শেখ রেহানা, টিউলিপ সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক ও রাদওয়ান মুজিবের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ–অভ্যুত্থানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হন এবং এরপর ভারতে পালিয়ে যান। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা, হত্যাচেষ্টা ও দুর্নীতিসহ তিন শতাধিক মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। দুদকও প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা দায়ের করেছে।

দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এই সিদ্ধান্ত ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। সংশ্লিষ্ট মহল বলছে, এটি একটি নজিরবিহীন ঘটনা, যা দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ভবিষ্যতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।