ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
২৪ অক্টোবর, ২০২৪ | ৯:৫৯ এএম
অনলাইন সংস্করণ
শেয়ারবাজার ছেড়ে যাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা
২৪ অক্টোবর, ২০২৪ | ৯:৫৯ এএম
![শেয়ারবাজার ছেড়ে যাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা](https://i.vatbondhu.com/images/original-webp/2024/10/24/20241024095910_original_webp.webp)
ছবি: সংগ্রহ
শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে হতাশা লক্ষ করা যাচ্ছে। পতন থামাতে কোনো পর্যায় থেকে উদ্যোগ না থাকায় বাজারবিমুখ হতে শুরু করেছেন বিনিয়োগকারীরা। তাতে বাজারে ক্রেতার সংকট দেখা দিয়েছে। তার বিপরীতে বিক্রেতা বেশি। এ অবস্থায় গতকাল বুধবার শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়েছে।
গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর টানা চার দিন পুঁজিবাজারে বড় ধরনের সূচকের উত্থান হয়। এরপর থেকে চলছে পতন। গত দুদিন বিরতি দিয়ে গতকাল ফের বড় দরপতনের শিকার দেশের শেয়ারবাজার। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স এদিন ৭১ পয়েন্ট বা ১ দশমকি ৩৭ শতাংশ কমেছে। এমন পরিস্থিতিতে দুই স্টক এক্সচেঞ্জ এবং বাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর দুই সংগঠন ডিবিএ ও বিএমবিএ নেতারা কিছু বলছেন না।
বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, টানা দরপতনে বেশি সমস্যায় পড়েছেন ঋণগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা। তাদের অনেকের শেয়ার জোরপূর্বক বিক্রি বা ফোর্সড সেলের আওতায় পড়ছে। শেয়ারের দাম কমে যখন একটি নির্দিষ্ট সীমার নিচে নেমে যায়, তখন ঋণদাতা ব্রোকারেজ হাউস বা মার্চেন্ট ব্যাংক থেকে সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীকে নতুন করে অর্থ বিনিয়োগের তাগাদা দেওয়া হয়। যদি কোনো বিনিয়োগকারী নতুন বিনিয়োগ না করেন, তখন ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংক তার শেয়ার বিক্রি করে ঋণ সমন্বয় করে নেয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি মার্চেন্ট ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা সম্প্রতি যেসব সিদ্ধান্ত নিচ্ছে তাতে বাজার ঘুরে দাঁড়াবে না। এতে দীর্ঘ মেয়াদে বাজার লাভবান হতে পারে। বাজারে সবচেয়ে বড় সংকট তারল্য সরবরাহ। বাজারে সুদের হার বাড়ছে। অন্যদিকে শেয়ারবাজারে ব্যাংকগুলো জন্য স্পেশাল ফান্ডের মেয়াদ আগামী ১৩ জানুয়ারি শেষ হচ্ছে। এ মেয়াদ বাড়াতে হবে। কিন্তু সে বিষয়েও কোনো উদ্যোগ নেই। মেয়াদ না বাড়লে ব্যাংকগুলো শেয়ার বিক্রি করে দিতে হবে।
গতকাল বুধবার শেয়ারবাজারে দরপতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন শুরু হয়। দিনশেষে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৭১ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ১৬৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮৯২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৬২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। লেনদেনে অংশ নেওয়া অধিকাংশ
প্রতিষ্ঠানের দরপতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মাত্র ৫২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩০৬টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৪১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩২১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৫৮ কোটি ২২ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৩৬ কোটি ২৩ লাখ টাকা।
এদিকে, লেনদেন খরার বাজারে টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে লাভেলো আইসক্রিমের শেয়ার। কোম্পানিটির ১৭ কোটি ৯৬ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা অগ্নি সিস্টেমের ১৩ কোটি ৬৪ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১২ কোটি ৫৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইসলামী ব্যাংক। এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছেÑ এনআরবি ব্যাংক, গ্রামীণফোন, টেকনো ড্রাগস, ব্র্যাক ব্যাংক, ফারইস্ট নিটিং, মিডল্যান্ড ব্যাংক এবং সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১২১ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৯৪ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৩১টির এবং ২৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৩ কোটি ১২ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১৩ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।
![শেয়ারবাজার ছেড়ে যাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা](https://i.vatbondhu.com/images/original/2024/04/22/20240422145104_original.png)