ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
২০ অক্টোবর, ২০২৪ | ৯:২৪ এএম
অনলাইন সংস্করণ
শ্রমিক অসন্তোষে পোশাক শিল্পে ক্ষতি ৪৮০০ কোটি
২০ অক্টোবর, ২০২৪ | ৯:২৪ এএম
![শ্রমিক অসন্তোষে পোশাক শিল্পে ক্ষতি ৪৮০০ কোটি](https://i.vatbondhu.com/images/original-webp/2024/10/20/20241020092451_original_webp.webp)
ছবি: সংগ্রহ
সাম্প্রতিক শ্রমিক অসন্তোষে দেশের প্রধান রফতানি খাত তৈরি পোশাক শিল্প বহুমুখী ক্ষতির মুখে পড়েছে। শিল্প এলাকায় টানা শ্রমিক অসন্তোষে পোশাক শিল্পের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ৪০ কোটি ডলার, টাকার অঙ্কে যা প্রায় ৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। পোশাক শিল্পে শ্রমিক অসন্তোষ পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমএ কমপ্লেক্সে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
তিনি বলেন, পোশাক শিল্পে এখন স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসায় বিদেশি ক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলোর কাছ থেকে কার্যাদেশ ফিরতে শুরু করেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি কাজের শৃঙ্খলা বজায় রাখা পোশাক শিল্পের জন্য এখন বড় চ্যালেঞ্জ। কেননা কারখানাগুলো বর্তমানে চালু আছে।
শ্রমিক অসন্তোষের কারণে অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় শিল্প-কারখানায় তিন মাসের জন্য গ্যাস-বিদ্যুতের মতো জরুরি সেবা বিচ্ছিন্ন না করতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন রফিকুল ইসলাম। ব্যাংক সুদের হার এক অঙ্কে নামিয়ে আনার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, তৈরি পোশাক কারখানাগুলোর স্বাভাবিক উৎপাদন কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে জরুরি ভিত্তিতে সিএনজি স্টেশন থেকে সিলিন্ডারের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিতে হবে। পোশাক শিল্পে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা ও বিদ্যুতের যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণসহ একটি টেকসই বিদ্যুৎ ও জ্বালানিনীতি প্রণয়নের দাবি জানান।
ব্যাংক ঋণের সুদহার বৃদ্ধির কারণে তৈরি পোশাক শিল্প সমস্যায় পড়ছে; সে জন্য ব্যাংক ঋণের সুদহার ১০ শতাংশের নিচে নামানোর দাবি জানিয়ে এ ব্যবসায়ী নেতা বলেন, সব ধরনের ঋণের বিপরীতে ঋণ শ্রেণিকরণ না করা এবং ঋণ পরিশোধে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা তিন কিস্তি পরিশোধ না করলে খেলাপি করার নির্দেশনা বদলে ছয় কিস্তি করতে হবে।
চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য লোডিং ও আনলোডিংয়ে অহেতুক সময়ক্ষেপণ বন্ধ করা এবং এ ক্রান্তিকালে পরবর্তী তিন মাসের জন্য কারখানার ইউটিলিটি সংযোগ বিচ্ছিন্ন না করার দাবি জানান বিজিএমইএর সভাপতি।
দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে গাজীপুর, ঢাকার সাভার, আশুলিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে পোশাক শ্রমিকরা নানা দাবিতে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। কোথাও কোথাও সড়ক অবরোধের পাশাপাশি সহিংসতার ঘটনাও ঘটেছে। এ পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটিয়ে পোশাক খাত বর্তমানে ‘স্থিতিশীলতা অর্জন করেছে’ মন্তব্য করে রফিকুল ইসলাম বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং শ্রমিক অসন্তোষের কারণে কিছু কার্যাদেশ প্রতিযোগী দেশগুলোতে স্থানান্তরিত হয়েছে। তবে বর্তমানে স্থিতিশীলতা ‘পুনরুদ্ধার হওয়ায়’ আন্তর্জাতিক ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলো আবার ফিরে আসছে বলে দাবি করেন তিনি।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, বিজিএমইএ বোর্ডের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সরকারের নির্দেশনায় পোশাক কারখানাগুলোর নিরাপত্তায় সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথবাহিনী গঠন হয়েছে এবং যৌথবাহিনী গার্মেন্টস অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতে নিয়মিতভাবে টহল পরিচালনা করেছে। বিজিএমইএ সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় কমিউনিটি পুলিশিং চালু করেছে।
শ্রম অসন্তোষে আশুলিয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত ৩৯টি পোশাক কারখানার সেপ্টেম্বর মাসের বেতন-ভাতা পরিশোধের ক্ষমতা ছিল না জানিয়ে তিনি বলেন, ওইসব কারখানা যাতে বিপদে না পড়ে, সে জন্য তাদের সুদহীন সহজশর্তে ঋণ দিতে অর্থ মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো হয়েছে। রফিকুল বলেন, পোশাক শিল্পের ৪০ লাখ শ্রমিক যাতে ন্যায্যমূল্যে পণ্য পান, সে জন্য তাদের টিসিবির কর্মসূচিতে নেওয়া হয়েছে।
![শ্রমিক অসন্তোষে পোশাক শিল্পে ক্ষতি ৪৮০০ কোটি](https://i.vatbondhu.com/images/original/2024/04/22/20240422145104_original.png)