ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ২:২০:৪০ পিএম

শ্রীলঙ্কাকে এলএনজি সরবরাহ করবে ভারত, নির্মাণ করবে পাইপলাইন

১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ১:৪ পিএম

শ্রীলঙ্কাকে এলএনজি সরবরাহ করবে ভারত, নির্মাণ করবে পাইপলাইন

ছবি: সংগ্রহ

ভারত প্রতিবেশী দ্বীপদেশ শ্রীলঙ্কার সাথে এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) সরবরাহের চুক্তি করেছে। পাশাপাশি, দুই দেশের মধ্যে বিদ্যুৎ গ্রিড সংযোগ স্থাপন এবং পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন নির্মাণ করার ঘোষণা দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

 

 ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমারা দিসানায়েকের সাথে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী মোদি এই ঘোষণা দেন। শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর এটিই দিসানায়েকের প্রথম বিদেশ সফর।


প্রধানমন্ত্রী মোদি জানান, ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান পেট্রোনেট এলএনজি চলতি বছরের আগস্টে শ্রীলঙ্কার সাথে পাঁচ বছরের জন্য এলএনজি সরবরাহ চুক্তি করেছে। ভারতের কেরালার কোচিতে অবস্থিত পেট্রোনেটের টার্মিনালের মাধ্যমে শ্রীলঙ্কাকে গ্যাস সরবরাহ করা হবে। এছাড়াও, শ্রীলঙ্কায় এলএনজি সংরক্ষণ, পুনঃগ্যাসীকরণ এবং যৌথ চক্রের বিদ্যুৎকেন্দ্রের অবকাঠামো নির্মাণে ভারত সহযোগিতা করবে।

 

এছাড়া, দুই দেশের মধ্যে একটি মাল্টি-প্রোডাক্ট পাইপলাইন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে, যা শ্রীলঙ্কাকে সাশ্রয়ী ও নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহে সহায়তা করবে।


শ্রীলঙ্কার চলমান অর্থনৈতিক সংকটের কথা উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট দিসানায়েকে ভারতের সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘ভারত আমাদের ঋণ পুনর্গঠনের মধ্যেও প্রকল্পগুলোতে সহায়তা অব্যাহত রেখেছে।’ প্রধানমন্ত্রী মোদি জানান, ভারত ইতোমধ্যে শ্রীলঙ্কাকে ৫ বিলিয়ন ডলারের ঋণ সহায়তা দিয়েছে।

 

মোদি আরও বলেন, চলতি বছরের শুরুতে ভারত, ফ্রান্স, জাপান এবং চীন শ্রীলঙ্কার ঋণ পুনর্গঠনে এগিয়ে আসে। এটি শ্রীলঙ্কার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল। কারণ ২০২২ সালে শ্রীলঙ্কা তার বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়। বর্তমানে দেশটি আইএমএফ-এর তত্ত্বাবধানে বেইলআউট কর্মসূচির আওতায় রয়েছে।


আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিষয়ে দুই নেতা একমত পোষণ করেন। প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, ‘ভারত ও শ্রীলঙ্কার নিরাপত্তা স্বার্থ পরস্পর সংযুক্ত।’ প্রেসিডেন্ট দিসানায়েকে আশ্বস্ত করেন যে, ‘শ্রীলঙ্কার ভূখণ্ড ভারতবিরোধী কোনো কাজে ব্যবহার হতে দেওয়া হবে না।’


দীর্ঘদিন ধরে চলমান মৎস্যজীবীদের জীবন-জীবিকা ও কচচাথিভু দ্বীপ সংক্রান্ত বিরোধ নিয়েও আলোচনা হয়। প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, ‘এই ইস্যুতে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে অগ্রসর হতে হবে।’


প্রেসিডেন্ট দিসানায়েকে বলেন, ভারতের সহায়তা শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তিনি ভারত-শ্রীলঙ্কা সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করার জন্য দুই দেশের নেতাদের মধ্যে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

 

উল্লেখ্য, এই চুক্তি ও বিদ্যুৎ সংযোগের উদ্যোগ শ্রীলঙ্কার জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় অন্যতম বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি, এটি ভারত-শ্রীলঙ্কা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

শ্রীলঙ্কাকে এলএনজি সরবরাহ করবে ভারত, নির্মাণ করবে পাইপলাইন