ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ | ৯:৫০ এএম
অনলাইন সংস্করণ
এ সম্পর্কিত আরো খবর
সরকারের অগ্রাধিকার সংস্কার, অর্থনীতি ও আইনশৃঙ্খলার গুরুত্ব
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ | ৯:৫০ এএম
![সরকারের অগ্রাধিকার সংস্কার, অর্থনীতি ও আইনশৃঙ্খলার গুরুত্ব](https://i.vatbondhu.com/images/original-webp/2024/11/16/20241116094935_original_webp.webp)
ছবি: সংগ্রহ
ভঙ্গুর অর্থনীতি, ভেঙে পড়া আইনশৃঙ্খলা ও বিধ্বস্ত প্রশাসনিক কাঠামোর ওপর দাঁড়িয়ে গত ৮ আগস্ট দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছিল শান্তিতে নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
গতকাল শুক্রবার ১০০ দিন পার করেছে ছাত্র-জনতার রক্তে ভেজা বাংলাদেশের দায়িত্ব নেওয়া এই সরকার। বিপুল প্রত্যাশার চাপ আর নানামুখী চ্যালেঞ্জ নিয়ে যাত্রা শুরু করা সরকারের অগ্রাধিকার ছিল অর্থনীতিকে সচল করা, আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক করা এবং রাষ্ট্র মেরামতে। আর এই শতদিনের মধ্যেই বিএনপিসহ গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলো থেকে তাগিদ এসেছে ‘যৌক্তিক’ সময়ের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের।
প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে দ্রুত নির্বাচনের জন্য দলগুলোর এই তাগিদের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস সর্বশেষ জবাব দিয়েছেন আজারবাইজানে জলবায়ু সম্মেলনে গিয়ে এএফপিকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে। এতে তিনি বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের মূল লক্ষ্য একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান গতকাল ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, সুষ্ঠু ও নিরপক্ষে নির্বাচন অনুষ্ঠানই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান দায়িত্ব। সেই নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে। বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক থেকে সরকারের কাছে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের রোড ম্যাপ চাওয়া হয়েছে। দলটির যুগপত্ আন্দোলনের সঙ্গী দলগুলোও নির্বাচনের রোড ম্যাপের দাবি জানিয়ে আসছে।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দলগুলোর সংলাপেও রোড ম্যাপের কথা উঠে এসেছে বারবার।নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে ইতিমধ্যেই সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে। সার্চ কমিটি দল-ব্যক্তি-সংগঠনের কাছ থেকে নতুন কমিশনারদের নামের প্রস্তাবও নিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, অল্প সময়ের মধ্যেই নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন হবে। নতুন কমিশন গঠনের পর নির্বাচনি প্রক্রিয়া দৃশ্যমান হতে শুরু করতে পারে।
যে কোনো নির্বাচিত সরকারেরই সাধারণত প্রথম ১০০ দিনের একটি কর্মসূচি থাকে। এ সময়ের মধ্যে কাজের অগ্রাধিকার নির্ধারণ করে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। বর্তমান সরকার অন্তর্বর্তী হলেও ইতিমধ্যে ১০০ দিন পার করেছে। সেই পর্যবেক্ষণ থেকে বলা যায়, সরকারের মধুচন্দ্রিমা শেষ। এখন অন্তর্বর্তী সরকারের কাজের মূল্যায়ন করা পুরোপুরি অযৌক্তিক হবে না, প্রত্যাশা-প্রাপ্তির সমীকরণে প্রশ্ন করাও ন্যায্যতা পাবে।
অবশ্য, এই তিন মাসে সরকারের মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো কী কী কাজ করেছে, সেটির তথ্য প্রকাশ করেছে সরকার। গত ১০ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে মন্ত্রণালয় ও বিভাগসমূহের তিন মাসের অগ্রগতি-কর্মপরিকল্পনা গণমাধ্যমকে সরবরাহ করা হয়েছে। সেখানে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর কাজ আলাদা আলাদাভাবে তুলে ধরা হয়।
জুলাই-আগস্টে হতাহতদের তালিকা প্রকাশ এবং তাদের সহায়তায় ‘জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’ গঠন। ভঙ্গুর অর্থনীতিকে সচল করতে অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন পদক্ষেপ ছিল লক্ষণীয় ও ফলদায়ক। এছাড়া, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনো পুরোপুরি স্বাভাবিক না হলেও উন্নতি হয়েছে।
তিন মাসে সরকারের অর্জন সম্পর্কে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে (বাসস) দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে বলেছেন, ‘বিগত শাসনামল থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া আর্থিক, পুঁজিবাজার ও ব্যাংকিংসহ বিভিন্ন খাতের সংকট নিরসনে অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। শ্বেতপত্র কমিটি, অর্থনীতি পুনঃকৌশলীকরণ কমিটি এবং অন্যান্য কমিটি গঠন—এসব খাতে সংস্কার জরুরি হয়ে পড়েছে, অন্যথায় সংকট নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। আর্থিক খাত, ব্যাংকিং খাত এবং পুঁজিবাজার সংস্কার করা হচ্ছে।
বাজারের প্রবণতা পর্যবেক্ষণ ও সিকিউরিটিজ ট্রেডিংয়ে হেরফের রোধে একটি টাস্কফোর্স কাজ করছে। সরকার ঋণ পরিশোধে চিন্তিত কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকার ব্যবহারে বেশি মনোযোগ দিচ্ছে এবং নিজের চাহিদাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। তিনি বলেন, বাজেটে আরো চাপ আসতে পারে, তবে বাজেট সংশোধনের সময় বিশেষ করে উন্নয়নের দিকে লক্ষ্য রেখে তা পর্যালোচনা করা হবে।
সরকার গত ১০০ দিনে সহিংসতায় অচল মেট্রোরেলের মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশন চালু, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ও আটটি জাতীয় দিবস বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ সময়ে সরকারকে নানা সংকটও মোকাবিলা করতে হয়েছে। নতুন সরকারের কাছে একের পর এক দাবি দাওয়া নিয়ে হাজির হতে থাকেন বিভিন্ন মহলের লোকজন।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ নিয়েও বেশ কয়েক দিন আন্দোলন চলছিল। সর্বশেষ নতুন দুই উপদেষ্টাকে নিয়ে সৃষ্ট বিতর্ক এবং সুচিকিত্সার দাবিতে জুলাই-আগস্টে আহতদের আন্দোলনও সামলাতে হয়েছে সরকারকে। আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল গতকাল ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের নির্যাতনের শিকার প্রত্যেকের জন্য।
- ট্যাগ সমূহঃ
- অর্থনীতি
- আইনশৃঙ্খলার
![সরকারের অগ্রাধিকার সংস্কার, অর্থনীতি ও আইনশৃঙ্খলার গুরুত্ব](https://i.vatbondhu.com/images/original/2024/04/22/20240422145104_original.png)