ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ৪:০৫:৪১ পিএম

সর্বজনীন পেনশনে যুক্ত হচ্ছে এককালীন গ্র্যাচুইটি

১৯ অক্টোবর, ২০২৪ | ৯:৩০ পিএম

সর্বজনীন পেনশনে যুক্ত হচ্ছে এককালীন গ্র্যাচুইটি

ছবি: সংগ্রহ

সর্বজনীন পেনশনে মানুষকে আকৃষ্ট করতে ৬০ বছর বয়স থেকে মাসিক পেনশন সুবিধার বাইরে গ্র্যাচুইটি হিসেবে দেওয়া হবে এককালীন অর্থ। গ্র্যাচুইটি বাবদ পেনশনারদের কী পরিমাণ অর্থ এককালীন পরিশোধ করা হবে, সে ক্ষেত্রে মাসিক পেনশনের পরিমাণ কতটা কমতে পারে, তা বিশ্লেষণের কাজ শুরু করেছে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার আওতায় স্বাস্থ্য বীমার সুবিধা অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। এটি হলে যারা সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত হবেন, সবাই স্বাস্থ্য বীমার সুবিধা পাবেন।

 

গত ১৪ অক্টোবর পেনশন পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ও অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা বিশ্লেষণ করে এ ব্যবস্থাকে জনপ্রিয় করতে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

 

প্রতিবেশী দেশ ভারতে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় পেনশন বয়সে পৌঁছানো নাগরিকদের মাসিক পেনশন সুবিধার বাইরেও গ্র্যাচুইটি বাবদ এককালীন অর্থ পরিশোধ করা হয়। ভারতের আদলে বাংলাদেশে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করা হলেও বিগত সরকার গ্র্যাচুইটি সুবিধা বা মাসিক পেনশন সুবিধার বাইরে পেনশনারদের এককালীন অঙ্কের অর্থ পরিশোধ করার ব্যবস্থা রাখেনি।

 

দেশে সরকারি চাকরিজীবীরা মাসিক পেনশন পাওয়ার পাশাপাশি গ্র্যাচুইটি সুবিধাও পেয়ে থাকেন। একজন চাকরিজীবী তাঁর প্রতিবছর চাকরির জন্য দুটি করে গ্র্যাচুইটি পান। এ ক্ষেত্রে প্রতিটি গ্র্যাচুইটির পরিমাণ তাঁর সর্বশেষ মূল বেতনের সমান। শ্রম আইনেও গ্র্যাচুইটি দেওয়ার বিধান রয়েছে।

 

জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাকে আরও জনপ্রিয় করতে গ্র্যাচুইটি যুক্ত করার বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। ভারতসহ অনেক দেশে এককালীন গ্র্যাচুইটি দেওয়ার বিধান রয়েছে। আবার কন্ট্রিবিউটরি পেনশন ব্যবস্থায় অনেক দেশ গ্র্যাচুইটি ব্যবস্থা রাখে না।
তিনি বলেন, এককালীন গ্র্যাচুইটি দেওয়ার বিধান যুক্ত হলে মাসিক পেনশনের পরিমাণ কমে যাবে। যেহেতু সর্বজনীন পেনশনারদের মূল বেতন বলে কিছু নেই, তাই এককালীন গ্র্যাচুইটি হিসেবে তাদের জমা দেওয়া চাঁদার একটি অংশ পরিশোধ করতে হবে।

 

অন্যান্য দেশে কীভাবে গ্র্যাচুইটি পরিশোধ করা হচ্ছে, সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে অর্থ উপদেষ্টার সম্মতিক্রমে তা উপদেষ্টা পরিষদের সভায় উপস্থাপন করা হবে। উপদেষ্টা পরিষদ সম্মতি দিলে এককালীন গ্র্যাচুইটি পরিশোধের বিধান যুক্ত করা হবে। তবে গ্র্যাচুইটি বাবদ এককালীন অর্থ দেওয়ার বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি।
দেশে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় সুদহারও অনেক কম। সরকারি চাকরিজীবীদের জেনারেল প্রভিডেন্ট ফান্ডে সুদহার ১৩ শতাংশ এবং সঞ্চয়পত্রে সুদহার ১১ শতাংশের বেশি হলেও সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় সুদহার মাত্র ৮ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। যারা সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে টাকা জমা দিয়েছেন, গত অর্থবছরের জন্য তাদের এ হারে সুদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

 

মূলত প্রবাসী ও বেসরকারি খাতে নিয়োজিতদের আকৃষ্ট করতে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করা হলেও স্কিমগুলো তাদের আকৃষ্ট করতে পারছে না। প্রবাসী ও বেসরকারি খাতে নিয়োজিতদের জন্য চালু করা তিনটি স্কিমে নিবন্ধনকারীর সংখ্যা মাত্র ৮৬ হাজার ৪৯৪ জন। এদের মধ্যে অনেকে দু-এক মাস কিস্তি পরিশোধ করার পর আর কিস্তি দিচ্ছেন না।

 

অর্থ মন্ত্রণালয় ও পেনশন কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, সমতা স্কিমে নিবন্ধনকারীদের তালিকা যাচাই করা হবে। এর মধ্যে যারা অতিদরিদ্র নয় বা এই স্কিমে যুক্ত হওয়ার অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন, তাদের সমতা স্কিম থেকে বের করে অন্য স্কিমে স্থানান্তর করা

সর্বজনীন পেনশনে যুক্ত হচ্ছে এককালীন গ্র্যাচুইটি