ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ৩:৪৩:১৮ পিএম

সুদহার আবার বাড়াতে চায় বাংলাদেশ ব্যাংক

১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ | ১১:১৫ এএম

সুদহার আবার বাড়াতে চায় বাংলাদেশ ব্যাংক

ছবি: সংগ্রহ

দেশের মুদ্রানীতি নিয়ে চলমান আলোচনা অনুযায়ী, উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নীতি সুদহার হিসেবে ব্যবহৃত রেপো সুদ আরেক দফা বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এই অর্থবছরের জানুয়ারি-জুন সময়ের মুদ্রানীতিতে রেপো সুদহার ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ দশমিক ৫০ শতাংশ করার ঘোষণা আসতে পারে। এর ফলে গ্রাহক পর্যায়ে ঋণের সুদ আরও বেড়ে যাবে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের খরচ বাড়বে।

 

 

বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে সুদহার কয়েক দফা বাড়ানোর পরও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কাঙ্ক্ষিত ফল না আসায় রেপো সুদ আরেক দফা বাড়ানোর সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের পদক্ষেপে ঋণের সুদ বাড়বে, যা ব্যবসা-বাণিজ্যের খরচ বাড়াবে এবং বেসরকারি বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধি আরও কমে যেতে পারে। গত নভেম্বরে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৬৬ শতাংশে নেমে এসেছে।

 

 

অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদহার বাড়ানোর পদক্ষেপ খুব বেশি কার্যকর হবে না। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম বলেছেন, “বাজার তদারকি বাড়ানোর মাধ্যমে সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সিন্ডিকেট ভাঙার বিকল্প নেই।”

 

 

করোনা-পরবর্তী সময়ে এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে মূল্যস্ফীতি বাড়তে থাকলেও বাংলাদেশ ব্যাংক সুদহার বাড়ানোর জন্য একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে। ২০২০ সালের জুন থেকে ২০২৩ সালের জুলাই পর্যন্ত সর্বোচ্চ সীমা ৯ শতাংশ আরোপ করা হলেও, জুলাই থেকে সুদহার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার পর থেকে তা দ্রুত বেড়ে ১৫ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে।

 

 

বর্তমানে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, ব্যাংকার এবং বিচার বিভাগের কর্মীদের জন্য ব্যাংক রেট ৪ শতাংশে অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে, যা ব্যাংকগুলোকে লোকসান করতে বাধ্য করছে। অন্যদিকে, সরকারি ঋণের সুদ ১২ শতাংশ বা তার বেশি, সঞ্চয়পত্রের সুদহার বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে এবং ব্যাংকগুলো ১০-১১ শতাংশ সুদে মেয়াদি আমানত নিচ্ছে।

 

 

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, মূল্যস্ফীতি না কমলে নীতি সুদহার আরও বাড়ানো হতে পারে। তবে ব্যাংক রেটের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, কারণ ব্যাংক রেট ৪ শতাংশ রেখে বেসরকারি ঋণের সুদহার আরও বাড়ছে।

 

 

এদিকে, সরকারের পণ্যমূল্য সংক্রান্ত শুল্ক-কর বৃদ্ধি এবং সরকারি চাকরিজীবীদের মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তের কারণে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়তে পারে। এসব পদক্ষেপের প্রভাব সামনে আরও স্পষ্ট হবে, তবে সুদহার বাড়ানো একমাত্র সমাধান হতে পারে না, বলে অনেকেই মত প্রকাশ করেছেন।

সুদহার আবার বাড়াতে চায় বাংলাদেশ ব্যাংক