ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
৪ মে, ২০২৪ | ৯:৪০ এএম
অনলাইন সংস্করণ
এ সম্পর্কিত আরো খবর
স্টার্টআপ বিনিয়োগে পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া
৪ মে, ২০২৪ | ৯:৪০ এএম
![স্টার্টআপ বিনিয়োগে পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া](https://i.vatbondhu.com/images/original-webp/2024/05/04/20240504094003_original_webp.webp)
কভিড-১৯ মহামারী শেষ হওয়ার পর থেকে মন্থর অবস্থায় রয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় স্টার্টআপ খাত। মূলত চুক্তি ও বিনিয়োগ সংগ্রহের দুর্বলতা এতে প্রভাব ফেলেছে। মহামারীর পর স্টার্টআপে পুনরুদ্ধারের কিছু সম্ভাবনা দেখা গিয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে সে সম্ভাবনা ক্ষীণ হচ্ছে বলে সাম্প্রতিক তথ্য-উপাত্তে দেখা যাচ্ছে। এরই মধ্যে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় স্টার্টআপ বিনিয়োগ পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে পৌঁছেছে।
সাম্প্রতিক চুক্তি ও বিনিয়োগের তথ্য বিশ্লেষণ করে এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সিঙ্গাপুরভিত্তিক ডিলস্ট্রিট এশিয়া। সংস্থার পর্যালোচনা অনুযায়ী, এ অঞ্চলের স্টার্টআপগুলো বছরের প্রথম প্রান্তিকে ১০০ কোটি ডলার ইকুইটি সংগ্রহ করেছে। এর পরিমাণ ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় ৪১ শতাংশ কম। এমনকি মার্চে শেষ হওয়া প্রান্তিকে অর্জিত ইকুইটি বিনিয়োগ ২০২৩ সালের চতুর্থ প্রান্তিকের (অক্টোবর-ডিসেম্বর) অর্ধেক।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এ সময়ে সব মিলিয়ে ১৮০টি চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে। অন্যদিকে গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে ১৯৩টি চুক্তি সম্পাদিত হয়েছিল বলে জানানো হয় বিশ্লেষণে।
এ অঞ্চল স্টার্টআপ বিনিয়োগ সংগ্রহে শীর্ষে ছিল ২০২১ সালে, কিন্তু এরপর থেকে গতি নিম্নমুখী। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় স্টার্টআপ বিনিয়োগ সংগ্রহের শুরু ২০১০-এর দশকের শেষ দিকে। এরপর মহামারী-পরবর্তী বছর ২০২১ সালে শীর্ষে পৌঁছে। তখন মহামারীজনিত পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ফিনটেক থেকে টেলিমেডিসিন পর্যন্ত ডিজিটাল ব্যবসাগুলো প্রচুর নগদ অর্থ সংগ্রহ করে। কিন্তু বিশ্বব্যাপী তারল্য সংকটের কারণে মূল সূচকগুলো পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন স্তরে নেমে এসেছে। তবে চলতি বছর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ভেঞ্চার ক্যাপিটাল বিনিয়োগে প্রত্যাবর্তনের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে প্রতিবেদনে।
২০২১ সালের চূড়ান্ত প্রান্তিকে প্রায় ৮০০ কোটি ডলারের স্টার্টআপ চুক্তি হয়। এরপর থেকে এ অঞ্চলে বিনিয়োগ নিম্নমুখী। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, ওই সময় থেকে বিশ্বব্যাপী মহামারীর প্রভাবে প্রযুক্তি অংশীদারত্ব স্থবির হয়ে পড়ে ও সুদহার বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক ভোক্তা পরিষেবার কারণে এশিয়ার এ অঞ্চলের স্টার্টআপগুলো উচ্চ ঝুঁকিতে পড়ে যায়।
ডিল স্ট্রিট এশিয়ার আগের জরিপে দেখা গেছে, ২০১৯ সালের প্রথম প্রান্তিকের পর বিনিয়োগ ধারাবাহিকভাবে ১০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়। তবে ঠিক কবে প্রান্তিক তহবিল ১০০ কোটি ডলারের নিচে ছিল তা প্রতিবেদনে নির্দিষ্ট করে উল্লেখ করা হয়নি।
ডিল স্ট্রিট এশিয়ার বিশ্লেষণ অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে শেয়ারবাজারের দুর্বলতার কারণে উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারীদের সামনে মুনাফা অর্জনের বিকল্প কমিয়ে দিয়েছে। এ কারণে স্টার্টআপ ও বিনিয়োগকারীদের চুক্তিগুলো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়ে যায়। আর্থিক প্রতিষ্ঠান ওপেনস্পেস ভেঞ্চারসের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা শেন চেসন ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, ‘বাজার স্থিতিশীল হতে ও কোম্পানিগুলোকে আর্থিকভাবে সবল হতে আরো এক বছর লেগে যেতে পারে।’
২০২৪ সালের প্রথম তিন মাসে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় স্টার্টআপগুলোর মাত্র পাঁচটির চুক্তি চূড়ান্ত পর্যায় পর্যন্ত সম্পন্ন হয়েছিল, যা পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম।
আকারে ছোট হওয়া সত্ত্বেও প্রথম প্রান্তিকে বৃহত্তম ইকুইটি চুক্তিটি করেছে ফিলিপাইন-ভিত্তিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান এশিয়ালিংক ফাইন্যান্স। ছোট ও মাঝারি আকারের সংস্থাগুলোকে ঋণ দিয়ে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। এ চুক্তির আওতায় বিনিয়োগ হবে ৭ কোটি ১৩ লাখ ডলার। ফিলিপাইনের আরেক ফিনটেক কোম্পানি ইউএনও ব্যাংক ডিজিটাল ব্যাংকিং ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য ৩ কোটি ২১ লাখ ডলার সংগ্রহ করে শীর্ষ ১০টি চুক্তির মধ্যে স্থান পেয়েছে।
প্রথম প্রান্তিকে অন্যান্য বড় বিনিয়োগ সংগ্রহকারীদের মধ্যে রয়েছে সিঙ্গাপুরের মোবিলিটি স্টার্টআপ সিংঅটো ও ভিয়েতনামি রাইড-হেলিং কোম্পানি বি গ্রুপ। তাদের সংগ্রহ যথাক্রমে ৪ কোটি ৫০ লাখ ও ৩ কোটি ৩ লাখ ডলার।
দীর্ঘদিন ধরে সিঙ্গাপুর ও ইন্দোনেশিয়া এ অঞ্চলের শীর্ষস্থানীয় স্টার্টআপ বাজার। তবে বড় চুক্তির মাধ্যমে আঞ্চলিক ইকুইটি তহবিলে অংশীদারত্ব বাড়িয়েছে ফিলিপাইন, যার পরিমাণ ১৪ দশমিক ২ শতাংশ। এ তহবিল ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ হিস্যা নিয়ে প্রথম স্থানে থাকা ইন্দোনেশিয়ার চেয়ে সামান্য কম।
![স্টার্টআপ বিনিয়োগে পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া](https://i.vatbondhu.com/images/original/2024/04/22/20240422145104_original.png)