দেশের সব স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের আইন ও সাংগঠনিক কাঠামোতে বড় ধরনের সংস্কার প্রস্তাব করেছে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন। বর্তমানে দেশের গ্রামীণ স্থানীয় সরকারের তিনস্তর বিশিষ্ট কাঠামো বিদ্যমান, যার মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ এবং জেলা পরিষদ অন্তর্ভুক্ত। এছাড়াও, নগর স্থানীয় সরকারের অধীনে ৩৩০টি পৌরসভা এবং ১২টি সিটি করপোরেশন চলছে। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে এসব কাঠামোর সংস্কারের জন্য কমিশন প্রস্তাব করেছে ব্যাপক পরিবর্তন।

আরও পড়ুন

প্রাথমিক সুপারিশমালা দিয়েছে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন

সম্প্রতি, স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রধান তোফায়েল আহমেদ প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তাদের প্রাথমিক সুপারিশমালা জমা দেন। এ সুপারিশমালায় তিনটি গ্রামীণ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের কাঠামোতে মৌলিক পরিবর্তন আনতে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

কমিশন প্রস্তাব করেছে যে, জেলা পরিষদকে একটি বিকেন্দ্রীভূত পরিকল্পনা ইউনিট হিসেবে গঠন করা হবে। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে জেলার সকল উন্নয়ন সংক্রান্ত দপ্তরগুলো জেলা পরিষদে ন্যস্ত করা হবে। জেলা পরিষদের মুখ্যনির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে একজন যুগ্মসচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে। পাশাপাশি, ডেপুটি কমিশনারের অফিসকে পৃথকভাবে জাতীয় সরকারের প্রতিনিধিত্বকারী ইউনিট হিসেবে কাজ করতে হবে এবং ভূমি ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত থাকতে হবে।

উপজেলা পরিষদ এবং ইউনিয়ন পরিষদেও বিভিন্ন দপ্তরের কার্যক্রম এবং অর্থনৈতিক সম্পদ পরিষদে ন্যস্ত করা হবে। এই পরিবর্তনগুলো স্থানীয় সরকারের কার্যক্রমকে আরও কার্যকর ও স্বচ্ছ করতে সহায়ক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উপ–প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন তাদের প্রাথমিক সুপারিশমালা জমা দিয়েছে। ৮ সদস্যবিশিষ্ট এই কমিশন ১৫টি ক্ষেত্রের ওপর সুপারিশ করেছে, এবং প্রতিটি ক্ষেত্রের জন্য সুনির্দিষ্ট অধ্যায় নির্ধারণ করা হয়েছে।

কমিশন প্রধান তোফায়েল আহমেদ বলেন, “যেহেতু কাজ শুরু করতে বিলম্ব হয়েছে, তাই পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন তৈরি করতে কিছু সময় লাগবে। তবে সরকার জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করে জাতীয় নেতাদের সঙ্গে সংস্কার বিষয়ে আলোচনা করছে, তাই কমিশন প্রাথমিক কিছু মৌলিক সুপারিশ সরকারের কাছে উপস্থাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”

এই প্রস্তাবিত সংস্কারের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার কাঠামোকে আরও শক্তিশালী এবং জনগণের জন্য আরও কার্যকরী করে তোলার লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।