ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ৯:৩৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
স্বাস্থ্যখাতে প্রান্তিক পর্যায় থেকে সংস্কারের তাগিদ
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ৯:৩৫ পিএম
ছবি: সংগ্রহ
স্বাস্থ্যখাতে সংস্কারের জন্য হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসক, নার্স এবং যন্ত্রপাতির সংকট নিরসনের পাশাপাশি স্বাস্থ্যখাতে বাজেট বরাদ্দ বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেছেন বিশেষজ্ঞরা। শনিবার (২২ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শাহ আলম বীর উত্তম মিলনায়তনে স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের আয়োজনে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এ সভায় স্বাস্থ্য খাতের প্রান্তিক পর্যায় থেকে সংস্কারের প্রস্তাব দেওয়া হয়। উপস্থিত বক্তারা চিকিৎসা শিক্ষার মান, চিকিৎসকদের পেশাগত নিরাপত্তা এবং সুবিধা নিয়ে আলোচনা করেন।
স্বাস্থ্য খাতের কমিশনের চেয়ারম্যান জাতীয় অধ্যাপক একে আজাদ সভায় বলেন, “মতবিনিময় সভায় উঠে আসা সব পরামর্শ আমরা গ্রহণ করব এবং সেগুলো বিশ্লেষণ করে আমাদের প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত করব।”
বেসরকারি অ্যাপোলো ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের ল্যাবরেটরি মেডিসিনের অধ্যাপক আকরাম হোসেন স্বাস্থ্য খাতে বাজেটের বরাদ্দ বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, “আফ্রিকায় স্বাস্থ্য খাতে বাজেটের ১১ ভাগ রাখা হলেও বাংলাদেশে তা মাত্র ৫ ভাগ।” তিনি বলেন, “বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানো ছাড়া কোনো সংস্কার সম্ভব নয়।”
অধ্যাপক আব্দুল আলীম বলেন, “সরকারি হাসপাতালে এক হাজার শয্যার বিপরীতে সাড়ে তিন হাজার রোগী থাকে। এভাবে স্বাস্থ্য সেবা উন্নয়ন অসম্ভব।” তিনি চিকিৎসক সংকট নিরসনের পাশাপাশি দেশে মানসম্মত চিকিৎসক ও নার্স তৈরি করার তাগিদ দেন।
প্রাইভেট ক্লিনিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ডা. আব্দুল মোতালেব বলেন, “দেশে চিকিৎসা ও শিক্ষা খাত অবহেলিত, তাই উন্নয়ন হচ্ছে না। আমাদের চিকিৎসা শিক্ষার পাঠ্যক্রম বিদেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে হালনাগাদ করতে হবে।” তিনি বেসরকারি চিকিৎসা খাতে নজরদারি রাখার পরামর্শ দেন।
অফথামোলজিস্ট সাইফুদ্দিন মো. তারিক বলেন, “বহু হাসপাতাল মানসম্মত নয়, এগুলোর মান বাড়াতে হবে এবং আধা সরকারি করতে হবে।” তিনি মেডিকেল কলেজে ভর্তির প্রক্রিয়া সংস্কারের প্রস্তাবও দেন।
এছাড়া, চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ওমর ফারুক ইউসুফ বলেন, “চিকিৎসকদের ওয়ার্ডেও কাজ করতে হয়, আবার ক্লাসও নিতে হয়, এ ক্ষেত্রে সমতা খুঁজে বের করতে হবে।”
মতবিনিময় সভায় চিকিৎসকরা কর্মস্থলে নিরাপত্তা, পদোন্নতি, ক্যাডার ভিত্তিক বৈষম্য দূরীকরণ, কর্মঘণ্টা নির্ধারণ এবং দ্রুত কাজের জন্য চিকিৎসকদের বিভাগওয়ারী টাকা বরাদ্দ দেওয়ার পরামর্শ দেন। নার্সিং পেশার সাথে জড়িতরা নিরাপত্তা, পদোন্নতি এবং নার্সিং ক্যাডার যুক্ত করার দাবি জানান।
এছাড়া, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্র প্রতিনিধি জসীম উদ্দিন বলেন, “স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশন যদিও নাম, তবে এটি ‘মেডিকেল শিক্ষা সংস্কার কমিশন’ হয়ে গেছে। এখানে যারা সেবা নিচ্ছেন, তাদের কোনো প্রতিনিধি নেই।” তিনি হাসপাতাল পরিচালকদের সঙ্গে রোগীদের যোগাযোগ সহজ করার পরামর্শ দেন।
মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দিন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক অং সুই প্রু মারমা, চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম এবং অন্যান্য মেডিকেল কলেজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
- ট্যাগ সমূহঃ
- স্বাস্থ্যখাতে
- পর্যায়