ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
৭ নভেম্বর, ২০২৪ | ১১:১ এএম
অনলাইন সংস্করণ
হাইটেক পার্ক এর কাজ ফেলে চলে গেছেন ভারতীয়রা
৭ নভেম্বর, ২০২৪ | ১১:১ এএম
![হাইটেক পার্ক এর কাজ ফেলে চলে গেছেন ভারতীয়রা](https://i.vatbondhu.com/images/original-webp/2024/11/07/20241107110027_original_webp.webp)
ছবি: সংগ্রহীত
ভারতীয় ঋণের অধীনে বাস্তবায়িত হচ্ছে ‘জেলা পর্যায়ে আইটি/হাইটেক পার্ক স্থাপন (১২ জেলা)’ শীর্ষক প্রকল্প। প্রকল্পটির অধিকাংশ কাজ চলছে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে, তবে ৫ আগস্টের পর ওই প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা কাজ ফেলে দেশে ফিরে গেছেন। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও কাজের অগ্রগতি মাত্র ৩৬ শতাংশ হয়েছে। নতুন করে ১২৭.৩৯ শতাংশ ব্যয় বৃদ্ধি করার প্রস্তাব দিলেও কমিশন তা অনুমোদন করেনি। তবে, অর্থনৈতিক নিষ্পত্তির জন্য প্রকল্পটির মেয়াদ ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব থাকতে পারে।
কাজ বন্ধ থাকার তিন মাস
৫ আগস্টের পর ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা দেশে ফিরে যাওয়ায় প্রকল্পের কাজ প্রায় তিন মাস বন্ধ থাকে। চলতি বছরের জুনে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু বর্তমানে কাজের অগ্রগতি মাত্র ৩৬ শতাংশ। এ কারণে প্রকল্পটি সম্পন্ন হতে আরও কত সময় লাগবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ প্রকল্পটির বাস্তবায়নকারী সংস্থা।
প্রকল্পের পরিচালক (যুগ্ম সচিব) এ কে এ এম ফজলুল হক জানান, "রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে ভারতীয় ঠিকাদাররা নিরাপত্তার আশঙ্কায় প্রকল্প এলাকা ত্যাগ করেছেন। তারা ৫ নভেম্বর ফেরত আসার কথা ছিল, কিন্তু এখনো আসেননি। তাদের ক্লিয়ারেন্স হলে তারা পুনরায় কাজে যোগ দেবেন। প্রকল্পের অনেক প্যাকেজের কাজ শুরু হয়নি, তবে কিছু ভারতীয় কর্মী সীমিত আকারে উপস্থিত রয়েছেন।"
ব্যয় বৃদ্ধি এবং সংশোধন প্রস্তাব
১২৭ শতাংশ ব্যয় বৃদ্ধি সম্পর্কে তিনি বলেন, "এটি মূলত সিডি ভ্যাট বৃদ্ধির কারণে। ব্যয়ের পরিমাণ এক হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকারি অর্থের স্থানান্তরের বিষয়টি সংশোধন করা হচ্ছে।"
ভারত থেকে নির্মাণসামগ্রী আনা সম্ভব না হওয়ায় প্রকল্পের কাজ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। মূল প্রকল্পটির মোট ব্যয় ছিল ১,৭৯৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা, যার মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ছিল ২৫২ কোটি ৪০ লাখ টাকা এবং প্রকল্প ঋণ ছিল ১,৫৪৪ কোটি টাকা। ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত বাস্তবায়ন পরিকল্পনা অনুমোদিত হলেও, পরে প্রকল্পটির মেয়াদ এক বছর বাড়ানো হয়, ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত। এরপর ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানোর জন্য সংশোধন করা হয়।
বর্তমানে, প্রকল্পটির মোট ব্যয় ৪,১৯৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে, যা ১২৭.৩৯ শতাংশ বৃদ্ধি। দ্বিতীয় সংশোধনে ২০২৭ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
কাজের বিলম্বের কারণ
বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, জমি বরাদ্দে বিলম্ব, দরপত্র আহ্বানে সমস্যা, কিছু প্যাকেজে দরদাতাদের অংশগ্রহণ না হওয়া, ভারতীয় পরামর্শক সংস্থার ডিজাইন ও সরবরাহে বিলম্ব ইত্যাদি কারণে প্রকল্পের বাস্তবায়ন বিলম্বিত হয়েছে।
চুক্তির জটিলতা
ভারতের সঙ্গে চুক্তির আওতায় সব দরদাতা ভারতীয় হতে হবে। কোভিড-১৯ মহামারির কারণে সীমানা বন্ধ থাকায় দরপত্র জমাদানের সময় ১০ বার বাড়ানো হয়েছিল। দ্বিতীয় এলওসি চুক্তি অনুযায়ী, ৭৫ শতাংশ নির্মাণসামগ্রী ভারত থেকে আমদানির কথা থাকলেও, পরবর্তীতে তা কমিয়ে ৫০ শতাংশ করার জন্য ভারতীয় দরদাতারা অনুরোধ করেন, যা ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন ও এক্সিম ব্যাংক (ভারত) ৬৫ শতাংশ পর্যন্ত কমানোর প্রস্তাব দেয়। বাকি ৩৫ শতাংশ সরঞ্জাম বাংলাদেশ থেকে সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পুনঃসংশোধনের প্রস্তাব
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সরকারের খাতে প্রায় ১,৬১৮ কোটি টাকা সংস্থান প্রয়োজন, যা বর্তমানে অনুপস্থিত। এছাড়া, নির্মাণকাজের প্রাক্কলন ২০১৮ সালের রেট শিডিউলে করা হলেও, বর্তমানে ২০২২ সালের রেট শিডিউলে তা সংশোধন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশন জানায়, প্রকল্পের সংশোধন চূড়ান্ত করতে প্রয়োজনীয় অর্থায়ন বিষয়ক চুক্তি নিষ্পত্তি করা জরুরি। অর্থনৈতিক জটিলতা নিরসন এবং প্রকল্পের কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে মেয়াদ এক বছর বাড়ানোর সুপারিশ করা হতে পারে, তবে এ প্রক্রিয়ার জন্য আইএমইডি ও ইআরডির মতামত গ্রহণ করা হবে।
- ট্যাগ সমূহঃ
- হাইটেক পার্ক
- ভারতীয়
![হাইটেক পার্ক এর কাজ ফেলে চলে গেছেন ভারতীয়রা](https://i.vatbondhu.com/images/original/2024/04/22/20240422145104_original.png)