ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
৩০ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৩:৩৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
২০২৩-২৪ অর্থবছর বিদেশি ঋণ শোধ ছাড়ায় ৬ বিলিয়ন ডলার
৩০ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৩:৩৯ পিএম
ছবি: সংগ্রহ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকারের শেষ কয়েক বছর বিদেশি ঋণ গ্রহণ দ্রুত বেড়েছে, বিশেষ করে কঠিন শর্তযুক্ত ঋণের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়। এসব ঋণ ছিল তুলনামূলকভাবে কম মেয়াদি ও উচ্চ সুদের, যার জন্য বিশেষজ্ঞরা বারবার সতর্ক করেছিলেন। তবে এসব সতর্কতা উপেক্ষা করে বায়ার্স ও সাপ্লায়ার্স ক্রেডিট নামের ঋণ নেয়া হয়। এর ফলে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরকারের বিদেশি ঋণ পরিশোধ (ডেট সার্ভিসিং) এক লাফে ছয় বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়।
অর্থনীতিবিদরা আগেই পূর্বাভাস দিয়েছিলেন যে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সরকারের বিদেশি ঋণ পরিশোধ পাঁচ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করবে। তবে এক বছর আগেই তা ছয় বিলিয়ন ছাড়িয়েছে, যার মূল কারণ হিসেবে দায়ী করা হচ্ছে ঋণের উচ্চ সুদের হার। এসব ঋণের সুদ সাধারণত সোফরের (সিকিউরড ওভারনাইট ফাইন্যান্সিং রেট) সঙ্গে দুই বা তিন শতাংশ যোগ করে নির্ধারণ করা হয়। গত অর্থবছরে সোফরের হার পাঁচ শতাংশের উপরে ছিল, ফলে কিছু ঋণের জন্য সুদের হার সাত থেকে আট শতাংশ পর্যন্ত হয়েছে।
করোনা এবং পরবর্তী বছরের অর্থনৈতিক মন্দার কারণে উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর গতি কিছুটা কমে যাওয়ায় বিদেশি ঋণ গ্রহণের হার ধীর হয়েছিল। তবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শেষের দিকে বিদেশি ঋণের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে, যদিও এর মূল কারণ ছিল সুদের পরিশোধের চাপ।
ইআরডির তথ্যমতে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের শেষে সরকারের বিদেশি ঋণের মোট পরিমাণ ছিল ৭০.৭৭ বিলিয়ন ডলার, যার মধ্যে ৬২.৪০ বিলিয়ন ডলার ছিল সরকারের নিজস্ব ঋণ এবং ৮.৩৬ বিলিয়ন ডলার ছিল সভরেন গ্যারান্টিযুক্ত ঋণ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এই পরিমাণ বেড়ে ৭৮.১৭ বিলিয়ন ডলার হয়েছে, যেখানে সরকারের নিজস্ব ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৮.৮২২ বিলিয়ন ডলারে, এবং সভরেন গ্যারান্টিযুক্ত ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯.৩৫ বিলিয়ন ডলারে।
গত অর্থবছরে বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধের পরিমাণ বেড়ে ৬০৬ মিলিয়ন ডলার, যা আগের বছর ছিল ১.৩০৬ বিলিয়ন ডলার। এটি প্রায় ৪৬.৪০ শতাংশ বেড়েছে। ২০১7-18 অর্থবছরের পরিমাণ ছিল মাত্র ৩৮৮ মিলিয়ন ডলার, যা গত দুই বছরে প্রায় তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিদেশি ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি হয়েছে, কারণ সরকারের ঋণের পরিমাণ গত কয়েক বছরে দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৭-১৮ থেকে ২০২১-২২ অর্থবছরের মধ্যে সরকারের বিদেশি ঋণ স্থিতি ১০৪.৪৬ শতাংশ বেড়েছে এবং পরিশোধের পরিমাণ বেড়েছে ১৭৬.৫২ শতাংশ।