ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ৩:৪৫:২৭ পিএম

ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক

২ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৯:১৫ এএম

অনলাইন সংস্করণ

২০২৪ সালের অর্থনৈতিক সংকট: শ্বেতপত্রে বাস্তব চিত্র, ২০২৫-এর চ্যালেঞ্জ এবং সম্ভাবনা

২ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৯:১৫ এএম

২০২৪ সালের অর্থনৈতিক সংকট: শ্বেতপত্রে বাস্তব চিত্র, ২০২৫-এর চ্যালেঞ্জ এবং সম্ভাবনা

ছবি: সংগ্রহীত

২০২৪ সাল বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য ছিল কঠিন একটি বছর। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক পরিবর্তন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের প্রেক্ষাপটে দেশের অর্থনীতির প্রকৃত অবস্থা শ্বেতপত্রের মাধ্যমে সামনে আসে। এতে দেশ থেকে অর্থ পাচার, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগের স্থবিরতা এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ব্যর্থতার মতো বিষয়গুলো স্পষ্ট হয়েছে।

 

অর্থনীতির শ্বেতপত্রে দেখা গেছে, গত দেড় দশকে প্রায় ২৮ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। সরকারি প্রকল্পে দুর্নীতি, ঘুষ এবং শেয়ার বাজার থেকে আত্মসাৎ করা অর্থের পরিমাণও উল্লেখযোগ্য। এসব তথ্য দেশের অর্থনৈতিক সংকটের গভীরতাকে প্রকাশ করেছে।

 

 

২০২৪ সালজুড়ে সাধারণ মানুষকে সবচেয়ে বেশি ভুগিয়েছে উচ্চ মূল্যস্ফীতি। খাদ্য মূল্যস্ফীতি সারা বছর ধরে দুই অঙ্কে ছিল। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, নভেম্বর মাসে খাদ্যমূল্যস্ফীতি ছিল ১৩.৮০ শতাংশ। এটি গত সাড়ে ১৩ বছরের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

 

 

২০২৪ সালে বিনিয়োগের গতি শ্লথ ছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানির ঋণপত্র খোলা এবং নিষ্পত্তি গত বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমেছে। ফলে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগ কমে গেছে।

 

 

জুলাই-নভেম্বর মেয়াদে রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্য পূরণ হয়নি। রাজস্ব ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৪২ হাজার কোটি টাকা। এদিকে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নের হার মাত্র ১২.২৯ শতাংশ।

 

 

২০২৪ সালে রেমিট্যান্সে ইতিবাচক প্রবণতা দেখা গেছে। ডিসেম্বর মাসে ২.৬ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, যা মাসভিত্তিক রেকর্ড। ডলারের দাম স্থিতিশীল রাখার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভেও উন্নতি আনতে সক্ষম হয়েছে।

 

অর্থনীতিবিদরা ২০২৫ সালের জন্য তিনটি মূল বিষয়কে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন:

  1. মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ
    বিশেষ করে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমানো এবং বাজার ব্যবস্থাপনায় স্থিতিশীলতা আনতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।

  2. আর্থিক খাতের সংস্কার
    ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংকট মোকাবিলা করতে হবে। এতে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনা যাবে।

  3. প্রাসঙ্গিক বাজেট প্রস্তুতি
    ২০২৫ সালের বাজেটে সামাজিক খাতকে অগ্রাধিকার দিতে হবে এবং বাজেট ঘাটতি ২ লাখ কোটি টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।

অর্থনীতির বর্তমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে বিনিয়োগ, রপ্তানি, এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধির মাধ্যমে ২০২৫ সালে দেশের অর্থনীতিকে ইতিবাচক পথে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য স্থির করা প্রয়োজন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সঠিক নীতিমালা এবং কার্যকর উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতি একটি স্থিতিশীল পর্যায়ে যেতে সক্ষম হবে।

২০২৪ সালের অর্থনৈতিক সংকট: শ্বেতপত্রে বাস্তব চিত্র, ২০২৫-এর চ্যালেঞ্জ এবং সম্ভাবনা