ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ৬:৫৪:২৭ পিএম

২০২৫: মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার বছর

১ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৩:৪২ পিএম

২০২৫: মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার বছর

ছবি: সংগ্রহীত

২০২৫ সাল বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি বছর। অর্থনীতির চলমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এ বছরটি হবে স্থিতিশীলতার সন্ধানের। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বিভিন্ন খাতে সংস্কারের চেষ্টা চলছে। তবে অর্থনীতিতে বিদ্যমান সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান করা না গেলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও জটিল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

 

 

অর্থনীতিবিদদের মতে, জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাড়ানো, বিনিয়োগের গতি ত্বরান্বিত করা এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করা হবে ২০২৫ সালের মূল লক্ষ্য। তবে রপ্তানি খাত সংকোচন এবং বিনিয়োগে স্থবিরতার কারণে এগুলো অর্জন কঠিন হতে পারে।

 

 

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন জানান, মূল্যস্ফীতি বর্তমানে দেশের অর্থনীতির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এটি নিয়ন্ত্রণে কেবল মুদ্রানীতি নয়, রাজস্ব নীতির সঙ্গে সমন্বয় প্রয়োজন। বাজার ব্যবস্থাপনায় দৃঢ় পদক্ষেপ এবং চাঁদাবাজি বন্ধের মাধ্যমে মূল্যস্ফীতিকে নিয়ন্ত্রণে আনার পরামর্শ দেন তিনি।

 

 

বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখনো পিছিয়ে আছে বলে মনে করছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম। তিনি বলেন, দেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং ব্যবসা সহজ করার উদ্যোগ প্রয়োজন।

 

 

রপ্তানি খাতের সংকোচন এবং বৈদেশিক মুদ্রার অবমূল্যায়নের ফলে দেশীয় মুদ্রার মান কমছে, যা মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রপ্তানি আয় বাড়ানোর পাশাপাশি প্রবাসী আয় বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।

 

 

অর্থনীতির উন্নয়নে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা গুরুত্বপূর্ণ। সিপিডি’র সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ২০২৫ সালের শেষে যেন নির্বাচনী আবহাওয়ায় কোনো অনিশ্চয়তা তৈরি না হয়। শান্তিপূর্ণ ও সমঝোতাপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে হবে।

 

 

২০২৫ সালে বাংলাদেশের জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হবে এলডিসি থেকে উত্তরণের প্রস্তুতি বেগবান করা। এটি বাস্তবায়ন করতে হলে সুশাসন প্রতিষ্ঠা, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নত করা জরুরি।

 

 

২০২৫ সাল বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য সম্ভাবনা এবং চ্যালেঞ্জের এক যুগসন্ধিক্ষণ। সঠিক নীতিমালা ও কার্যকর উদ্যোগের মাধ্যমে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা গেলে দেশ ২০২৬ সালে ইতিবাচক অর্থনৈতিক অবস্থায় প্রবেশ করতে সক্ষম হবে বলে আশাবাদী অর্থনীতিবিদরা।

২০২৫: মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার বছর