ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
৩ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৯:১৫ এএম
অনলাইন সংস্করণ
৬৫ টাকার নিচে মিলছে না চাল
৩ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৯:১৫ এএম
![৬৫ টাকার নিচে মিলছে না চাল](https://i.vatbondhu.com/images/original-webp/2025/01/03/20250103091459_original_webp.webp)
ছবি: সংগ্রহ
সরবরাহ বাড়ায় বাজারে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম কমেছে। এতে খানিকটা স্বস্তি পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। তবে চাল ও ভোজ্য তেল নিয়ে ভোক্তাদের অস্বস্তি এখনও কাটেনি। বছরের ব্যবধানে নিত্যপণ্যের অত্যাবশ্যকীয় উপাদান চাল, তেল ও আদাসহ আরও বেশ কয়েকটি পণ্যের দাম বাড়তিই রয়েছে। অথচ ভোক্তা পর্যায়ে নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখতে খাদ্যে মজুদ বাড়াচ্ছে সরকার। তারপরেও স্বস্তির খবর মিলছে না বাজারে। বাজার সিন্ডিকেটকেই দায়ী করছেন ক্রেতারা। অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা দোষারোপের তীর ছুড়ছেন একে অন্যের দিকে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মোটা চাল কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। স্বর্ণা ও পায়জাম আমনের চাল বাজারে উঠলেও এসব চালের দাম বেড়েছে। এ ছাড়া খুচরা পর্যায়ে বেশ কয়েকটি দোকানে ৬৫ টাকার নিচে মিলছে না চালের কেজি।
আফসানা খাতুন নামে এক ক্রেতা বলেন, যে চাল ১০ দিন আগে ৫৫ টাকায় কিনেছি সেই চাল এখন ৬৫ টাকায় কিনতে হচ্ছে। সরকার এত চাল-তেল আমদানি করছে এসব যাচ্ছে কোথায় বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে মিল পর্যায়ে চালের দাম বাড়তি। এর প্রভাবেই খুচরা ও পাইকারিতে দাম বেড়েছে। মিনিকেট চাল ৭২ থেকে ৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি নাজিরশাইল জাতের চালের দাম উঠেছে ৮০ টাকায়। পাইকারিতে নাজিরশাইল জাতের ২৫ কেজি বস্তার চাল বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার টাকায়।
এদিকে দীর্ঘদিন চড়া থাকা দুই নিত্যপণ্য আলু ও পেঁয়াজের দাম অনেকটাই নাগালের মধ্যে এসেছে। এ ছাড়া সরবরাহ বাড়ায় বাজারে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম কমেছে। এতে খানিকটা স্বস্তি পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
এর মধ্যে বাজারে নতুন পেঁয়াজ আসা ও ভারতের পেঁয়াজের আমদানি বাড়ায় দাম নেমেছে ৫০-৭০ টাকা কেজির মধ্যে। যা কিনতে আগে ১০০-১২০ টাকা গুনতে হতো। অন্যদিকে নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা দরে। আলুর দাম কয়েক সপ্তাহ আগের তুলনায় কেজিপ্রতি ২০-২৫ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
অন্যদিকে ফুলকপি, শিম, শালগম, মুলার মতো শীতকালীন সবজির দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে রয়েছে। ফুলকপি বিক্রি হতে দেখা গেছে ২০ থেকে ৩০ টাকা প্রতি পিস। শিম, শালগম, মুলার কেজি ৩০-৫০ টাকার মধ্যে। বরবটি, ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, কচুর লতি, উস্তাসহ অন্য সবজিগুলোর দামও আগের তুলনায় কেজিপ্রতি ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
অন্যদিকে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাব বলছে, এক বছরের ব্যবধানে আটাশ চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ১৭ দশমকি ৪ শতাংশ। মিনিকেট চালের দাম বেড়েছে ১৪ দশমিক ৪ শতাংশ। মোটা চালের দাম বেড়েছে ৭ দশমিক ১৪ শতাংশ।
তথ্য মতে, এক মাস আগে আটাশ চালের কেজি ছিল ৫৯ থেকে ৬৫ টাকা। মিনিকেট চাল ৬৮ থেকে ৮০ টাকা এবং মোটা চাল ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা।
নিত্যপণ্যের অত্যাবশ্যকীয় উপাদান আদার দাম বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ৭৯ দশমিক ২৫ শতাংশ। এক মাসে দেশীয় আদার দাম ছিল ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা। পাম অয়েল (লুজ) বেড়েছে ২২ দশমিক ৩৫ শতাংশ। পাম অয়েল সুপার ১৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ। টিসিবির হিসাবে আরও বলা হয়েছে, বছরের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ। আর গরুর মাংসের দাম কেজিতে বেড়েছে ১৯ দশমিক ২৩ শতাংশ।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ-সভাপতি এসএম নাজের হোসাইন বলেন, ভোক্তা পর্যায়ে নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখতে হলে প্রথম মতো আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। দ্বিতীয়ত বিকল্প উপায়ে বাজারে পণ্য বাড়াতে হবে। তৃতীয়ত সরকার আমদানিতে শুল্ক কমিয়েছে তা ভোক্তা পর্যায়ে বাজার তদারকি নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া কৃষক যেন তার ন্যায্যমূল্য পায় সে জন্য পণ্য বিক্রির মাধ্যম যেমন জেলা-উপজেলা পর্যায়ে সরাসরি বিক্রির ব্যবস্থা করা। হাত বদলে পণ্যের দাম দ্বিগুণ হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে কমিশন এজেন্ট এবং মধ্যসত্বভোগীদের বিষয়ে খতিয়ে দেখা দরকার। বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় গঠন করা দরকার।
এদিকে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান জানিয়েছিলেন, জুলাই বিপ্লবের আগে থেকেই ব্যবসায়ী চক্র নষ্ট সংস্কৃতি চালিয়ে আসছে। কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। ব্যবসায় নষ্টের এই সংস্কৃতি এখনও বহাল তবিয়তে।
![৬৫ টাকার নিচে মিলছে না চাল](https://i.vatbondhu.com/images/original/2024/04/22/20240422145104_original.png)