ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ১০:১৬:২৫ পিএম

৭৫-৮০ ডলারের কয়লা আদানি নিয়েছে ৯৬ ডলার

২১ নভেম্বর, ২০২৪ | ৩:৪৬ পিএম

৭৫-৮০ ডলারের কয়লা আদানি নিয়েছে ৯৬ ডলার

ছবি: সংগ্রহ

আদানি গ্রুপের সঙ্গে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) করা বিদ্যুৎ চুক্তিতে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে করমুক্ত আমদানি নীতি, কয়লার দাম বাড়ানো, বিলম্বিত বিল পরিশোধে অতিরিক্ত সুদ আরোপ এবং শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী— চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর রুটে আসা বিদ্যুৎ শুল্ক স্টেশন না হওয়া।

 

২০১৭ সালের নভেম্বরে আদানি পাওয়ার লিমিটেডের ঝাড়খণ্ড পাওয়ার প্ল্যান্টের সঙ্গে ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেনার জন্য ২৫ বছরের চুক্তি করে পিডিবি। তবে, সম্পূর্ণ আমদানি করা কয়লায় চালিত এই পাওয়ার প্ল্যান্টটি ২০১৯ সালে ভারত সরকার বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের আওতায় কর ছাড় দেয়। চুক্তির সময় আদানি গ্রুপ এই তথ্য গোপন রাখে।

 

পায়রা, রামপাল ও চট্টগ্রামের বাঁশখালীর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লার দাম যেখানে টনপ্রতি ৭৫-৮০ ডলার, সেখানে আদানি গ্রুপ ৯৬ ডলার দরে কয়লা নিয়েছে। পিডিবি দাম নিয়ে আপত্তি জানালে আদানি গ্রুপ দাম কমাতে রাজি হয়।

 

২০১০ সালে ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান এনটিপিসি থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করার সময় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) শুল্ক-কর অব্যাহতির আদেশ দিয়েছিল, তবে আদানি গ্রুপের ক্ষেত্রে এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি এনবিআর।

 

কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বলেন, "পিডিবি যথাযথভাবে জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষিত হয়নি। চুক্তির প্রতিটি ধারা ও উপধারা প্রকাশ করা উচিত।"

 

শুল্ক গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর দিয়ে আদানির বিদ্যুৎ আসলেও তা কোনো শুল্ক স্টেশন নয়। আদানি গ্রুপের চুক্তিতে উল্লেখ রয়েছে, আমদানি পর্যায়ে শুল্ক-কর মওকুফের আদেশ পিডিবির মাধ্যমে অনুমোদন নেওয়ার দায়িত্ব ছিল। পরবর্তীতে শুল্ক-করের প্রসঙ্গে এলে তা পরিশোধের দায়ও পিডিবির ওপর বর্তাবে।

 

এছাড়া, বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে বিলম্বের জন্য আদানির চুক্তিতে ১৫ শতাংশ সুদ ধার্য করা হয়েছে, যা পায়রায় নেই। বর্তমানে, আদানি গ্রুপ বিদ্যুতের দাম ২২ শতাংশ বাড়ানোর জন্য নতুন করে দাবি তুলেছে। একই সঙ্গে বকেয়া বিল পরিশোধের চাপও বাড়ছে।

 

এদিকে, ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে করা সব বিদ্যুৎ চুক্তি পর্যালোচনার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী তিন মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। ১৯ নভেম্বর মঙ্গলবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরী হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

৭৫-৮০ ডলারের কয়লা আদানি নিয়েছে ৯৬ ডলার