ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
১৬ নভেম্বর, ২০২৩ | ১০:৩৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
এ সম্পর্কিত আরো খবর
বাংলাদেশ রাজস্ব আহরণে এখনও পিছিয়ে
১৬ নভেম্বর, ২০২৩ | ১০:৩৭ পিএম
![বাংলাদেশ রাজস্ব আহরণে এখনও পিছিয়ে](https://i.vatbondhu.com/images/wp-content/uploads/2023/11/NBR-3.jpg)
আয়কর ব্যবস্থা আসে কোথা থেকে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে শুরুতেই আসতে হয় প্রথমবারের মতো আয়কর প্রবর্তন করেন কে। ইতিহাসের পাতা থেকে খুঁজে পাওয়া যায়, ফ্রান্সের সম্রাট নেপোলিয়ন বোনাপাটের সঙ্গে যুদ্ধে ব্যয় নিয়ে হিমশিম খেতে হয়েছিল ব্রিটিশদের। তখন সাময়িকভাবে একটি উদ্যোগ নেন সে সময়কার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইলিয়াম পিট। সময়টা ছিল ১৭৯৮ সাল। তবে প্রথমে এই কর চালু হয় যুদ্ধকালীন কর হিসেবে। এরপর ১৮৪২ সালে এটি আয়কর হিসেবে আবির্ভূত হয়।
ব্রিটিশ ভারতে আয়কর ব্যবস্থা আসে ১৮৬০ সালে সিপাহি বিপ্লবের পর। স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড গঠনের মাধ্যমে আয়কর রাজস্ব সংগ্রহের হাতিয়ার হিসেবে শুরু হয়। অর্থ জোগানের প্রধান উৎস হিসেবে আয়কর ধরা হলেও এখনও এই আয়কর কর জিডিপির অনুপাত হিসেবে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে এখনও ভালো অবস্থানে নেই।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০২১ সালে বাংলাদেশের রাজস্ব আহরণ জিডিপির ১০ দশমিক ০১ শতাংশ। কম্বোডিয়া ২৩ দশমিক ৯৯ শতাংশ, ভারত ১৯ দশমিক ৭ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়া ১৩ দশমিক ৬ শতাংশ, লাওস ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ, মালয়েশিয়া ১৮ দশমিক ৩ শতাংশ, মিয়ানমার ১৪ দশমিক ১ শতাংশ, নেপাল ২৪ দশমিক ২ শতাংশ, ফিলিপাইন ২০ দশমিক ৪ শতাংশ, শ্রীলঙ্কা ৮ দশমিক ৯ শতাংশ, থাইল্যান্ড ২০ দশমিক ৩ শতাংশ ও ভিয়েতনাম ১৬ দশমিক শূন্য শতাংশ।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) তাদের আউটলুক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, রাজস্ব আদায়ের দিক থেকে অন্যান্য দেশের চেয়ে কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। অন্যান্য স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের বিগত পাঁচ বছরের রাজস্ব আদায়ের সঙ্গে বাংলাদেশের তুলনা করলে দেখা যায়, নেপালের গড় রাজস্ব জিডিপির ২২ দশমিক ৩৬ শতাংশ। যা বাংলাদেশের ১০ দশমিক ০১ শতাংশর চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি। লাওসের গড় রাজস্ব জিডিপির হার ১৪ দশমিক ৮৪ শতাংশ। যা বাংলাদেশের দেড়গুণ। এই দুটি দেশেরও বাংলাদেশের সঙ্গে ২০২৬ সালে একই সময়ের স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণ ঘটবে। কম্বোডিয়ার রাজস্ব জিডিপির হার ২৩ দশমিক ৯৯ শতাংশ যা বাংলাদেশ থেকে অনেক বেশি।
এদিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে শুধু ই-টিএনআই রেজিস্ট্রেশন এখনও সংখ্যায় কোটিতে উত্তীর্ণ হয়নি। আয়কর দিয়ে রিটার্ন জমার সংখ্যা প্রায় ৩২ লাখ। সিপিডির গবেষণাপত্র অনুযায়ী করযোগ্য হয়েও আয়কর দেন না দেশের ৬৮ শতাংশ মানুষ। তবে আইএমএফ তাদের গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, কর জিডিপির অনুপাত কম হওয়ার প্রধান কারণ হলো জটিল কর ব্যবস্থা, দুর্বল কর প্রশাসন, করদাতার হয়রানি, কর ফাঁকি, কর অব্যাহতি দানের সংস্কৃতি ও দুর্নীতি।
জানা গেছে, আয়কর আইন অনুযায়ী সরকারি সেবা পেতে হলে রিটার্ন বাধ্যতামূলক। একই বিধান সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। রিটার্ন দাখিল না করলে গণ কর্মচারীর বেতন-ভাতাসহ অন্য সুবিধা বন্ধ। এ ব্যাপারে সম্প্রতি দেশের সব কর অঞ্চলে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আয়কর রিটার্ন ও সম্পদ বিবরণী দাখিল নিশ্চিত করতে পারলে অপরাধ ও দুর্নীতি কমে যাবে বলে মনে করছে এনবিআর।
![বাংলাদেশ রাজস্ব আহরণে এখনও পিছিয়ে](https://i.vatbondhu.com/images/original/2024/04/22/20240422145104_original.png)