ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
১৮ নভেম্বর, ২০২৩ | ১০:৩৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
ইউরোপে অভিন্ন পুঁজিবাজার চায় ইসিবি
১৮ নভেম্বর, ২০২৩ | ১০:৩৭ পিএম
![ইউরোপে অভিন্ন পুঁজিবাজার চায় ইসিবি](https://i.vatbondhu.com/images/wp-content/uploads/2023/11/news_361602_1.jpg)
ইউএস সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) আদলে অভিন্ন স্টক এক্সচেঞ্জ কমিশন গড়তে যাচ্ছে ইউরোপ। এর মাধ্যমে পর্যাপ্ত অর্থ সংগ্রহ করতে পারলে এ অঞ্চলের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা সহজ হবে। ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংকের (ইসিবি) প্রেসিডেন্ট ক্রিস্তিন লাগার্দ গতকাল এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন।
ফ্রাঙ্কফুর্টে একটি বক্তৃতায় ক্রিস্টিন লাগার্দ বলেন, ‘ভবিষ্যৎ পৃথিবীর জন্য তিনটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এগুলো হচ্ছে বিশ্বায়ন, জনসংখ্যা ও কার্বনশূন্যতা।"এ ত্রিমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য ইউরোপ অভিন্ন এসইসি তৈরি করবে।’
ইউরোপীয় ব্যাংকিং কংগ্রেসে বক্তৃতাকালে তিনি বলেন, ‘ইউরোপের জাতীয় আর্থিক বিনিময়ের মধ্যে একত্রীকরণ প্রয়োজন। একটি সত্যিকারের ইউরোপীয় পুঁজিবাজারের জন্য একীভূত বাজার পরিকাঠামো প্রয়োজন। যেখানে বেসরকারি খাত সহজে বিনিয়োগ করতে পারবে।’
দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে ইউরোপের প্রধান স্টক এক্সচেঞ্জগুলোকে একত্রিত করার জন্য অনেকবার চেষ্টা করা হয়েছে। এ চেষ্টা বার বার ব্যর্থ হয়েছে। প্রধান বাধাগুলোর মধ্যে রয়েছে ইলেকট্রনিক ট্রেডিং সিস্টেম এবং ট্রেডিং নিয়মের সমন্বয় করা। বিশেষ করে বলা যায়, ফ্রাঙ্কফুর্টের ডয়েচ বোর্স এবং লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জের ১৯৯০ সালে একীভূত করার চেষ্টা হয়েছিল। দুই পক্ষ রাজি ছিল। পরিকল্পনাটি সাফল্যের কাছাকাছি এসেছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তা সফল হয়নি।
এ অভিন্ন আর্থিক বাজারের স্বপ্ন ২০০১ সালে আবার ব্যর্থ হয়। তখন ইউএস এনএএসডিএকিউ ইএএসডিএকিউ কিনেছিল। ১৯৯৬ সালে ইউরোপীয় স্টক মার্কেটগুলোকে একীভূত করা এবং ডটকমের সুবিধা নেয়ার প্রয়াস হিসেবে নতুন মার্কেট এক্সচেঞ্জ শুরু হয়েছিল। এর মাধ্যমে এনএএসডিএকিউ পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম স্টক এক্সচেঞ্জে পরিণত হয়।
বিশেষ করে বিনিয়োগের জন্য সমর্থন থাকলেও খুঁটিনাটি নানা বিষয়ে মতপার্থক্য রয়ে গেছে।
একীভূত হওয়ার মধ্যে প্রি-ট্রেড ডাটা, বিড এবং অফার, পোস্ট-ট্রেড ডাটা এসব অন্তর্ভুক্ত থাকবে। মূল্যের স্বচ্ছতা ও প্রতিযোগিতা উন্নতির লক্ষ্যে ইক্যুইটি, এক্সচেঞ্জ-ট্রেডেড ফান্ড, বন্ড এবং অন্যান্য আর্থিক যোগাযোগের জন্য ওয়ানস্টপ সেন্টার স্থাপন করা হবে। এর মাধ্যমে ইউরোপে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করা হবে। তবে ইইউ সদস্য রাষ্ট্রগুলোর জাতীয় স্বার্থ যাতে লঙ্ঘন না হয়, সেদিকটিও নজর রাখতে হচ্ছে। এ কারণে অনেক দিন ধরে আলোচনা হলেও পরিকল্পনাটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।
বৈদেশিক ও সামরিক নীতিতে একমত হলেও ইইউর ইতিহাসে পুঁজিবাজারকে একীভূত করার প্রচেষ্টা এর আগে সফল করা যায়নি।
সাবেক ইউরোপীয় কমিশনার ফ্রাঙ্কফুর্ট অ্যালজেমেইন জেইতুংকে বলেছিলেন, তিনি চান ইইউ একটি অভিন্ন আর্থিক বাজার বিকাশে দ্রুত অগ্রসর হোক।
তিনি জানান, ইউরোপে প্রায় ৩০টি স্টক এক্সচেঞ্জ আছে। তাদের লক্ষ্য এ বাজারগুলোর কেন্দ্র তৈরি করা। এটা ইউরোপের তিন ডজন এক্সচেঞ্জকে আগামী ১০ বা ১২ বছরে প্রায় অর্ধ ডজনে রূপান্তর করবে। একীভূত স্টক এক্সচেঞ্জগুলো খরচ কমিয়ে দেবে। বিদেশী বিনিয়োগকারী ও সংস্থাগুলোকে তালিকাভুক্ত করার জন্য আকর্ষণীয় অফার করবে, যা নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জ এবং এনএএসডিএকিউর প্রতিদ্বন্দ্বী হবে। ইউরোপের এ অভিন্ন বাজার ব্যবস্থা ইইউ কোম্পানিগুলোকে তাদের মার্কিন সমকক্ষদের মতো সহজে পুঁজি অ্যাকসেস করার সুযোগ দেবে।
এসবের উদ্দেশ্য হচ্ছে লেনদেনের যাবতীয় তথ্য কেন্দ্রীভূত করা। এর মাধ্যমে আর্থিক খাতকে বৈশ্বিক মঞ্চে আরো প্রতিযোগিতামূলক করতে চায় ইউরোপ। এজন্য বিশদ পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। বাজারসম্পর্কিত সব তথ্য একত্রিত করার জন্য পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। কয়েক ডজন জাতীয় এক্সচেঞ্জ থেকে শেয়ারের মূল্য, লেনদেনের সূচক এবং অন্যান্য তথ্য সংগ্রহ করা হবে।
![ইউরোপে অভিন্ন পুঁজিবাজার চায় ইসিবি](https://i.vatbondhu.com/images/original/2024/04/22/20240422145104_original.png)