বাংলাদেশ সরকার ভারতের আদানি গ্রুপের প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ আহ্বান জানিয়েছে। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে কম বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য ভারতীয় প্রতিষ্ঠানটি থেকে সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবি জানানো হয়েছে। ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যে অবস্থিত আদানি গ্রুপের ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়।

আরও পড়ুন

আদানির প্ল্যান্ট থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ আমদানি কমেছে এক তৃতীয়াংশ

বিপিডিবির চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম জানিয়েছেন, গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে আদানি গ্রুপ বাংলাদেশে কম বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। তিনি বলেন, "এ জন্য আমরা তাদের প্রতি সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ সরবরাহের আহ্বান জানিয়েছি।"

২০১৭ সালে আদানি পাওয়ারের সঙ্গে ২৫ বছরের জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, যার আওতায় বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে সম্প্রতি, আদানি পাওয়ার বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেকে নামিয়ে এনেছে। প্রতিষ্ঠানটি দাবি করেছে, বকেয়া বিলের অমীমাংসিত অবস্থা এবং শীতকালে চাহিদা কম থাকার কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম বলেন, "আমাদের বর্তমান চাহিদা অনুযায়ী আদানি তাদের দ্বিতীয় ইউনিটটি পুনরায় চালু করার পরিকল্পনা করেছিল, তবে প্রযুক্তিগত কিছু সমস্যার কারণে সেটি সম্ভব হয়নি।"

গত ডিসেম্বরে আদানি গ্রুপ জানিয়েছিল, বিপিডিবির কাছে তাদের ৯০০ মিলিয়ন ডলার পাওনা রয়েছে, তবে বিপিডিবির চেয়ারম্যান দাবি করেছেন, বকেয়া বিলের পরিমাণ প্রায় ৬৫০ মিলিয়ন ডলার। রেজাউল করিম আরও জানান, বিপিডিবি প্রতি মাসে আদানি পাওয়ারকে ৮৫ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করছে এবং বকেয়া কমানোর জন্য কাজ করছে।

এদিকে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে স্বাক্ষরিত এই চুক্তি নিয়ে বিতর্ক উঠেছে, বিশেষ করে চুক্তির শর্ত অনুযায়ী বিদ্যুতের দাম নির্ধারণের পদ্ধতি নিয়ে। বিশ্লেষকদের মতে, এই চুক্তির মূল্য নির্ধারণের পদ্ধতিতে ত্রুটি রয়েছে, যা অন্যান্য ভারতীয় বিদ্যুৎ সরবরাহের তুলনায় বাংলাদেশকে ৫৫ শতাংশ বেশি দাম পরিশোধ করতে বাধ্য করছে।

বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে চুক্তির শর্ত পর্যালোচনা করতে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছে। চলতি মাসের মধ্যে কমিটিটির প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে এবং এর সুপারিশের ভিত্তিতে চুক্তির শর্ত পুনর্নির্ধারণ করা হতে পারে।