ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ১২:০৭:৩৯ পিএম

ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সঙ্গে অংশীদারত্ব বাড়ছে, আলোচনা শুরু নভেম্বরে

১৮ অক্টোবর, ২০২৪ | ৮:৩০ পিএম

ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সঙ্গে অংশীদারত্ব বাড়ছে, আলোচনা শুরু নভেম্বরে

ছবি: সংগ্রহ

ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সঙ্গে বাংলাদেশের অংশীদারত্ব বাড়ছে। ফলে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সব উপাদানকে একটি কাঠামোয় আনতে চায় দুই পক্ষ। সবকিছু ঠিক থাকলে ওই অংশীদারত্ব ও সহযোগিতা চুক্তি (পিসিএ) নিয়ে আলোচনা শুরু হবে আগামী মাসে। এর মাধ্যমে দুই পক্ষের বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শান্তি ও নিরাপত্তা, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সহযোগিতাসহ অন্যান্য বিষয়ে কাঠামো তৈরি করা হবে।

 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ইইউ ২০০১ সালে সহযোগিতা চুক্তি করে। বর্তমানে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ওই কাঠামোর পরিবর্ধন, সংযোজন, বিয়োজন অর্থাৎ একটি সামগ্রিক পরিবর্তন প্রয়োজন।’


ইইউ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রফতানি বাজার এবং ইউরোপের দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সম্পর্ক এখন অনেক বেশি ঘনিষ্ঠ। ফলে অংশীদারত্বের মাত্রাও আগের থেকে বেশি বলে তিনি জানান।


এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমরা নতুন অংশীদারত্ব ও সহযোগিতা চুক্তি করতে চাই যেখানে সম্পর্কের সবগুলো উপাদানকে সংযুক্ত করা হবে।’

 

পিসিএ নিয়ে নেগোসিয়েশন কতদিন চলতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি অনেক বড় ডকুমেন্ট এবং এর সঙ্গে সরকারের প্রায় সব মন্ত্রণালয় ও এজেন্সি জড়িত এবং সবার সঙ্গে আলোচনা করা হবে। আমরা আশা করছি, এক থেকে দুই বছরের মধ্যে ইইউ-এর সঙ্গে এই আলোচনা শেষ করা সম্ভব হবে।’

 

বর্তমান সম্পর্ক

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রফতানি বাজার ইইউ। গত বছর বাংলাদেশ ২৫০০ কোটি ডলারের পণ্য ইইউতে রফতানি করেছিল। অন্যদিকে ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক থেকে বাংলাদেশ প্রকল্প সহায়তার জন্য প্রায় ১০০ কোটি ইউরো ঋণ নিয়েছে।

 

দুই পক্ষের মধ্যে রাজনৈতিক যোগাযোগ অত্যন্ত নিবিড়। ইইউভুক্ত প্রায় ১০টি দেশের দূতাবাস বাংলাদেশে আছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের প্রায় ইইউভুক্ত ১০টি দেশে দূতাবাস আছে।

 

কী আছে অংশীদারত্ব চুক্তিতে

২০০১ সালে সহযোগিতা চুক্তিতে অনুচ্ছেদ ছিল ২১। অন্যদিকে খসড়া অংশীদারত্ব চুক্তিতে অনুচ্ছেদ আছে ৮৩টি। আকারে ও বিষয়বস্তুতে এটি অনেক বড় এবং প্রচুর উপাদান এখানে সংযুক্ত করা হয়েছে।

 

মোটা দাগে যে উপাদানগুলো রয়েছে সেগুলো হচ্ছে–– শান্তি ও নিরাপত্তা; আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সহযোগিতা; বাণিজ্য ও বিনিয়োগ; স্বাধীনতা, নিরাপত্তা ও সুবিচার; এবং অন্যান্য খাতে সহযোগিতা।

 

শান্তি ও নিরাপত্তা উপাদানের মধ্যে যে বিষয়গুলো রয়েছে সেগুলো হচ্ছে ডিসআর্মামেন্ট, ছোট অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ, সন্ত্রাসবাদ দমনসহ অন্যান্য বিষয়। আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সহযোগিতায় জাতিসংঘ, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা, আসিয়ানসহ অন্যান্য ফোরামে দুই পক্ষের অবস্থান ও স্বার্থ নিয়েও আলোচনা হবে।

 

বাণিজ্য ও বিনিয়োগ উপাদানে স্যানেটারি ও ফাইটোস্যানেটারি, টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা, বাণিজ্যে প্রতিবন্ধকতা, কাস্টমস সহযোগিতা, অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক, বিনিয়োগ, মেধাস্বত্ত, সেবা ও ডিজিটাল ট্রেডসহ অন্যান্য বিষয় থাকবে।

 

স্বাধীনতা, নিরাপত্তা ও সুবিচার উপাদানের বিষয়বস্তু অনেক বড় এবং অনেকগুলো ছোট ছোট উপাদান এখানে সংযুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে লিঙ্গ সমতা, নারী ক্ষমতায়ন, পারসোনাল ডাটার সুরক্ষা, বিচার বিভাগ ও আইনি সহযোগিতা, কনসুল্যার সুরক্ষা, অভিবাসন, মানবিক সহযোগিতা, অর্গানাইজড অপরাধ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ, অর্থপাচার ও সন্ত্রাসবাদ অর্থায়ন প্রতিরোধ, ওষুধ নীতি সহযোগিতাসহ অন্যান্য উপাদান।

ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সঙ্গে অংশীদারত্ব বাড়ছে, আলোচনা শুরু নভেম্বরে