ঢাকা শুক্রবার, ৪ জুলাই, ২০২৫ - ৫:৩৮:০৭ পিএম

উন্নয়ন বাজেট কমে ২ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা

৩ মার্চ, ২০২৫ | ৪:১৯ পিএম

উন্নয়ন বাজেট কমে ২ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা

ছবি: সংগ্রহ

 

২০২৪-২৫ অর্থবছরের সংশোধিত উন্নয়ন বাজেটে (এডিপি) রেকর্ড পরিমাণ কাটছাঁট করা হয়েছে। একযোগভাবে, ৪৯ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে এডিপির মোট বরাদ্দ নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকায়, যা আগের বরাদ্দের তুলনায় প্রায় ১৮ শতাংশ কম। পূর্বে বরাদ্দ ছিল ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। আজ (৩ মার্চ) দুপুরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় সংশোধিত বাজেট অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

 

অর্থনীতিবিদরা এই বাজেট কাটছাঁটকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। তাদের মতে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে সরকার করদাতাদের টাকার সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারবে এবং ঋণের টাকার ব্যবহারে স্বচ্ছতা আনবে।

 

এছাড়া, পরিকল্পনা কমিশনের সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরে এডিপির অভ্যন্তরীণ অর্থায়ন ছিল ১ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা, যা ৩০ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকায় নামানো হয়েছে। বৈদেশিক ঋণ থেকেও ১৯ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে ৮১ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এর ফলে, এডিপির আকার ৪৯ হাজার কোটি টাকা কমছে। তবে, ৭৭০টি নতুন প্রকল্প এডিপি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, এবং ৩১৩টি প্রকল্প সমাপ্ত ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

 

পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাজেট কাটছাঁটের পেছনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে। অন্যতম প্রধান কারণ সরকার পরিবর্তন। যেখানে পূর্ববর্তী সরকার অবকাঠামো উন্নয়নকে প্রাধান্য দিলেও, অন্তর্বর্তী সরকার মানবসম্পদ উন্নয়ন ও সামাজিক খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়া, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে উন্নয়ন সহযোগীদের অর্থছাড়ও কমে গেছে, যার ফলে প্রকল্প বাস্তবায়নেও বাধা সৃষ্টি হয়েছে।

 

বর্তমানে এডিপি বাস্তবায়নে ধীরগতি দেখা যাচ্ছে। গত ডিসেম্বরে তিনটি মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাদ্দের এক শতাংশও খরচ করতে পারেনি। এছাড়া, ১৯টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের বাস্তবায়ন হার ১০ শতাংশের নিচে রয়েছে, ফলে সার্বিক বাস্তবায়ন হার ১৭ দশমিক ৯৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় কম।

 

গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “সরকার অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পগুলো থেকে সরে এসেছে, এবং অতিরিক্ত ব্যয় কমানোর মাধ্যমে বাজেটের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে চাচ্ছে। এতে সামষ্টিক অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে, যদিও নির্মাণ খাতের কিছু সমস্যা হতে পারে।”

 

এভাবে, সরকারের এই ব্যয়সাশ্রয়ী পদক্ষেপটি, যদি যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয়, তবে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি ও প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘমেয়াদী সুবিধা নিয়ে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

উন্নয়ন বাজেট কমে ২ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা