ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
২৯ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৯:১১ এএম
অনলাইন সংস্করণ
উল্টো পথে দেশের অর্থনীতি
২৯ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৯:১১ এএম

ছবি: সংগ্রহীত
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের ছয় মাস পরও দেশের অর্থনীতি সঠিক গতিপথ খুঁজে পায়নি। মূল্যস্ফীতি, রাজস্ব ঘাটতি, বিনিয়োগ সংকট এবং নীতিগত দুর্বলতা অর্থনীতির প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রপ্তানি খাত তুলনামূলকভাবে কিছুটা স্থিতিশীল থাকলেও সামষ্টিক অর্থনীতির অন্যান্য সূচকগুলোর অবস্থা শোচনীয়। কারখানা বন্ধ, শ্রমিক ছাঁটাই, বিদেশি সহায়তা কমে যাওয়া এবং রাজস্ব আয়ে ঘাটতি দেশকে কঠিন অর্থনৈতিক বাস্তবতার সামনে দাঁড় করিয়েছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যমতে, গত ডিসেম্বর মাসে মূল্যস্ফীতি ছিল ১০.৮৯%, যা দুই অঙ্কের ঘরে রয়ে গেছে। নীতিনির্ধারকরা সুদহার বৃদ্ধির পরিকল্পনা করলেও এটি বেসরকারি খাতের সংকট আরও গভীর করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
অর্থনীতিবিদ মোস্তফা কামাল মুজেরির মতে, অন্তর্বর্তী সরকারের নীতি-সমন্বয়হীনতা এবং দুর্বল সিদ্ধান্ত গ্রহণের ফলে অর্থনৈতিক স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। বাজেট প্রণয়নে হিমশিম খাচ্ছে অর্থ বিভাগ, যার অন্যতম কারণ রাজস্ব ঘাটতি ও প্রত্যাশিত বৈদেশিক সহায়তা না পাওয়া।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর মেয়াদে বৈদেশিক সহায়তা ৩.৫৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে নেমে এসেছে, যা আগের বছরের তুলনায় কম। অন্যদিকে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫৭,৭২৪ কোটি টাকা কম রাজস্ব আদায় করেছে, যা সরকারকে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে ফেলেছে।
দেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতেও বিনিয়োগ কমছে। বেপজার (BEPZA) তথ্যমতে, গত ছয় মাসে ইপিজেডে (EPZ) সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ ২২% কমেছে। এর পেছনে প্রধান কারণ হিসেবে জ্বালানি সংকট ও অবকাঠামোগত সমস্যা চিহ্নিত করা হয়েছে।
বিশেষত মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে ১৩.৫ কোটি ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ প্রত্যাহার করা হয়েছে পানিসংকটের কারণে। দেশীয় বিনিয়োগেও ধস নেমেছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর মেয়াদে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির ঋণপত্র (LC) ২৬% কমেছে।
নীতিগত দুর্বলতা ও বিনিয়োগ সংকট অব্যাহত থাকলে দেশের অর্থনীতি আরও অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজস্ব ঘাটতি পূরণ, বিনিয়োগবান্ধব নীতি গ্রহণ এবং শিল্পখাতে সহায়তা বৃদ্ধি ছাড়া অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জন সম্ভব নয়।
