ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ১০:২৪:৪০ পিএম

কমেছে বৈদেশিক সহায়তার প্রবাহ, ছাড় হচ্ছে না তহবিল, কি হতে পারে?

২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ৯:১৯ এএম

কমেছে বৈদেশিক সহায়তার প্রবাহ, ছাড় হচ্ছে না তহবিল, কি হতে পারে?

ছবি: সংগ্রহীত

বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানোর জন্য যখন ডলার প্রয়োজন, তখনই দেশের উন্নয়ন সহযোগীদের তহবিল ছাড়ে ধীরগতি দেখা যাচ্ছে। চীন, ভারত এবং এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক (এআইআইবি) এর মতো এশিয়ার বৃহৎ অংশীদাররা চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) কার্যত কোনো নতুন তহবিল প্রতিশ্রুতি দেয়নি।

 

অর্থ মন্ত্রণালয় এবং প্রকল্প বাস্তবায়নকারীরা জানিয়েছেন, তহবিল ছাড়ে এই অনীহার কারণে অন্তত এক ডজন চলমান উন্নয়ন প্রকল্পে প্রভাব পড়েছে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত চীন থেকে কোনো তহবিল ছাড় হয়নি, ভারত সামান্য পরিমাণ সহায়তা দিয়েছে এবং এআইআইবি মাত্র ৬৬ লাখ ডলার ছাড় করেছে।

 

 

চীন, ভারত এবং এআইআইবির পক্ষ থেকে সহযোগিতার ধীরগতি দেশে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে জটিলতা তৈরি করেছে। রেলওয়ে, সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় তাদের বার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনার আওতায় বরাদ্দকৃত তহবিলের ঘাটতির কথা জানিয়েছে।

 

ইআরডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা চীন, ভারত এবং এআইআইবির কাছ থেকে ২২৪ কোটি ডলার মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি ঋণ ও অনুদান ছাড়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন। কিন্তু প্রথম চার মাসে তহবিল ছাড়ের অগ্রগতি হতাশাজনক।

 

অন্যদিকে, বহুপক্ষীয় উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলো কিছুটা এগিয়ে এসেছে। বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), এবং জাপান এই সময়ে যথাক্রমে ১৭.৮১ কোটি ডলার, ২৬.৬১ কোটি ডলার এবং ২৬.৬৩ কোটি ডলার ছাড় করেছে। রাশিয়া থেকেও ১৯.৪৫ কোটি ডলার সহায়তা এসেছে।

 

 

ইআরডির কর্মকর্তারা আশাবাদী যে, চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধে (জানুয়ারি-জুন) চীন, ভারত এবং এআইআইবির কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখা যাবে। ইতোমধ্যে এসব দেশ এবং সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানো হয়েছে।

 

অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘‘আমরা আশা করছি, দ্বিতীয়ার্ধে চীন, ভারত এবং এআইআইবি থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ তহবিল ছাড় হবে, যা আমাদের উন্নয়ন প্রকল্পগুলোকে সচল করবে।’’

 

 

অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে এবং উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর অর্থায়ন নিশ্চিত করতে বহুপক্ষীয় এবং দ্বিপক্ষীয় অংশীদারদের সঙ্গে কৌশলগত যোগাযোগ আরও জোরদার করা জরুরি। একই সঙ্গে, স্থানীয় উন্নয়ন পরিকল্পনাগুলোতে অর্থায়নের বিকল্প উৎস সন্ধান করা প্রয়োজন।

 

বাংলাদেশে তহবিল প্রবাহ পুনরায় সক্রিয় করতে সরকারের এই উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্ট মহল। তবে এটি বাস্তবায়নে সময় এবং সুসমন্বিত কৌশল প্রয়োজন।

কমেছে বৈদেশিক সহায়তার প্রবাহ, ছাড় হচ্ছে না তহবিল, কি হতে পারে?