ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ৩:০৫:১৮ পিএম

কর্মে কমে যাচ্ছে নারীর অংশগ্রহণ

২০ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৮:৫৮ এএম

কর্মে কমে যাচ্ছে নারীর অংশগ্রহণ

ছবি: সংগ্রহীত

দেশে নারীর সংখ্যা পুরুষের তুলনায় বেশি এবং গড় আয়ুও বেশি হলেও অর্থনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ এখনো ৫০ শতাংশে পৌঁছায়নি। বিশেষ করে প্রধান অর্থনৈতিক খাত গার্মেন্টস সেক্টরে নারীর অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। অন্যদিকে ব্যাংকিং খাতে গত তিন বছর ধরে নারীর অংশগ্রহণ মাত্র ১৬ শতাংশে আটকে আছে। শ্রমে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি ও টেকসই করতে বিজ্ঞজনরা প্রতিবন্ধকতাগুলো চিহ্নিত করে ইনোভেটিভ পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর জোর দিচ্ছেন।

 

 

গার্মেন্টস খাতে নারীর অংশগ্রহণ কমছে

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) এর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালে গার্মেন্টস খাতে নারীর অংশগ্রহণ ছিল ৫৬ শতাংশ, যা ২০২৩ সালে কমে দাঁড়িয়েছে ৫৩ শতাংশে। ম্যাপড ইন বাংলাদেশ (এমআইবি)-এর তথ্য মতে, গার্মেন্টস খাতে নারীর সংখ্যা আরও কমে ৫৭ শতাংশে নেমেছে। যেখানে এক সময় এই খাতে ৮০ শতাংশ শ্রমিকই ছিলেন নারী। অটোমেশন, কম মজুরি ও সুযোগ-সুবিধার অভাবে তরুণ প্রজন্মের এই খাতে আগ্রহ কমছে।

জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আমিরুল হক আমিন জানান, "গার্মেন্টস শিল্পে শ্রমিক অধিকার পুরোপুরি নিশ্চিত করা যায়নি। কম মজুরি, মাতৃত্বকালীন ছুটি না দেওয়া এবং যৌন হয়রানির মতো সমস্যাগুলো এখনও বিদ্যমান। ফলে অনেক পরিবার নারীদের এই খাতে কাজ করতে দিতে চায় না।"

 

 

ব্যাংকিং খাতে নারীর স্থবিরতা

বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০২৩ সালের জুলাই-ডিসেম্বর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্যাংক খাতে নারীর অংশগ্রহণ গত তিন বছর ধরে ১৬ শতাংশে স্থবির। প্রতিবেদনে দেখা যায়, ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদেও নারীর সংখ্যা কমেছে। নারী কর্মীরা পদোন্নতির ক্ষেত্রে বৈষম্যের মুখোমুখি হন, যার ফলে অনেকেই চাকরি ছেড়ে দেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রথম নারী ডেপুটি গভর্নর নাজনিন সুলতানা বলেন, "নারীদের সন্তান ও সংসারের দ্বৈত দায়িত্ব পালনের বাধ্যবাধকতা তাদের পেশাগত উন্নতিতে অন্তরায় সৃষ্টি করে।"

 

 

নারী শ্রমশক্তি বাড়াতে করণীয়

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, "নারীকে সংসারের ৮০ শতাংশ কাজ করতে হয়, যা কর্মক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করে। দিবাযত্ন কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো এবং নারীদের জন্য কর্মবান্ধব পরিবেশ তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি।" সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, "বাল্যবিবাহের শিকার মেয়েদের কাজে ফিরিয়ে আনার জন্য কার্যকর উদ্যোগ প্রয়োজন।" বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) ২০২৪ সালের ‘গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ’ সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৬ দেশের মধ্যে ৯৯তম, যা নারীর অবস্থান আরও পিছিয়ে পড়ার ইঙ্গিত দেয়।

কর্মে কমে যাচ্ছে নারীর অংশগ্রহণ