ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ৭:৫৪:৩০ এএম

ঘাটতি পুষিয়ে নিতে ছুটির দিনেও খোলা ছিল অনেক কারখানা

২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ | ১১:৩ এএম

ঘাটতি পুষিয়ে নিতে ছুটির দিনেও খোলা ছিল অনেক কারখানা

ছবি: সংগ্রহ

বকেয়া বেতন-ভাতাসহ বিভিন্ন দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে চলা শ্রমিক অসন্তোষের জেরে বন্ধ ছিল পণ্য উৎপাদন। তাই ঘাটতি পূরণে গতকাল ছুটির দিনেও গাজীপুর ও আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলের অনেক কারখানা খোলা ছিল। এদিন সকাল থেকেই এসব কারখানায় উৎপাদন কার্যক্রম চলেছে পুরোদমে। তবে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের সাতটি কারখানা এখনো চালু হয়নি।

 

শিল্প পুলিশের গাজীপুর জোনের পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, ‘শুক্রবার মূলত পোশাক শ্রমিকদের সাপ্তাহিক ছুটির দিন। তবে নানা কারণে অনেক কারখানায় গত কয়েকদিন উৎপাদন বন্ধ ছিল। এরই মধ্যে পণ্যের শিপমেন্টের সময় ঘনিয়ে এসেছে। সময়মতো শিপমেন্ট দিতে না পারলে বিশাল অংকের ক্ষতি হবে। তাই শিপমেন্টের কাজ উঠিয়ে নিতে আগের শুক্রবারের মতো গতকালও কারখানা খোলা রাখেন অনেক মালিক। এসব কারখানার সার্বিক নিরাপত্তা দিতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রস্তুত ছিল। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কোথাও কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।’


গাজীপুর শিল্প পুলিশের তথ্যমতে, গতকাল গাজীপুর মহানগর ও মহানগরের বাইরে সব মিলিয়ে প্রায় ২৫ শতাংশ কারখানা খোলা ছিল। এসব কারখানায় সকাল থেকে চলছে উৎপাদন কার্যক্রম। এর আগের শুক্রবার প্রায় ৩০ শতাংশ কারখানা খোলা ছিল। তবে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা কারখানাগুলো খোলার ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

 

এদিকে ঢাকার অদূরে আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও ১৬০টি কারখানায় ওভার টাইম ভিত্তিতে উৎপাদন কার্যক্রম চলমান ছিল। আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, ‘সাপ্তাহিক ছুটির অংশ হিসেবে শুক্রবার সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাইয়ের অধিকাংশ কারখানা বন্ধ ছিল। তবে ওষুধ, জুতা প্রস্তুত, তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন ধরনের ১৬০টি কারখানায় ওভার টাইম হিসেবে শ্রমিকরা কাজ করেছেন। এদিন এ শিল্পাঞ্চলের সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল।’

 

আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১-এর আওতাধীন সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাইয়ে তৈরি পোশাক, ওষুধ, সিরামিক, প্লাস্টিক, চামড়াজাত পণ্য প্রস্তুতকারীসহ বিভিন্ন ধরনের শিল্প-কারখানার সংখ্যা ১ হাজার ৮৬৩।

 

গাজীপুরের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর জানিয়েছে, গাজীপুর শিল্পাঞ্চলে মোট নিবন্ধিত কারখানা রয়েছে ২ হাজার ৬৩৩টি। এর মধ্যে তৈরি পোশাক কারখানা ১ হাজার ১২০টি এবং অন্যান্য কারখানার সংখ্যা ১ হাজার ৫১৩। এছাড়া অনিবন্ধিত কারখানা রয়েছে ৪০০-৫০০। সব মিলিয়ে এসব কারখানায় ২২ লাখের মতো শ্রমিক কাজ করেন।

 

এদিকে বকেয়া বেতন ও বিভিন্ন দাবিতে এখনো গাজীপুরের সাতটি পোশাক কারখানা পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। এসব কারখানা খোলার ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এর মধ্যে তিনটি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বাকি চারটি কারখানায় শ্রমিকদের সাধারণ ছুটি দিয়েছে মালিক পক্ষ।

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুজন কর্মকর্তার পদত্যাগসহ বিভিন্ন দাবির মুখে ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয় নগরের হাজিপুকুর এলাকার ফুল এভার বিডি লিমিটেড। সহিংসতা ও কারখানায় বেআইনি ধর্মঘটের কারণে গত বুধবার বন্ধ ঘোষণা করা হয় কুনিয়া এলাকার সিনড্রেলা ফ্যাশন লিমিটেড। শ্রমিকদের ১৪ দফা দাবির মুখে গত ১৫ আগস্ট বন্ধ ঘোষণা করা হয় বাঘেরবাজার এলাকার হাই ফ্যাশন লিমিটেড। এসব কারখানা খোলার ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

ঘাটতি পুষিয়ে নিতে ছুটির দিনেও খোলা ছিল অনেক কারখানা