পাকিস্তানি হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ জানিয়েছেন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ সরাসরি আকাশপথে যোগাযোগ স্থাপন করতে একযোগে কাজ করছে এবং চলতি বছরেই এই ফ্লাইট চালু হবে। এতে দুই দেশের ব্যবসায়ীরা মধ্যপ্রাচ্য ও সেন্ট্রাল এশিয়ার রপ্তানি বাজারে পাকিস্তানকে একটি গুরুত্বপূর্ণ করিডোর হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন।

আরও পড়ুন

চলতি বছরের ১৮ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১২০ কোটি ডলার

১৩ জানুয়ারি, সোমবার, ঢাকা সফররত পাকিস্তানি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে একটি মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, "বাংলাদেশি এয়ারলাইনস বা পাকিস্তান এয়ারলাইনস কোনটি ফ্লাইট চালু করবে, তা গুরুত্বপূর্ণ নয়। মূল লক্ষ্য হলো দুই দেশের মানুষের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করা।"

এ সময় পাকিস্তানের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিত্বকারী সংস্থা, দ্য ফেডারেশন অব পাকিস্তান চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফপিসিসিআই)-এর সভাপতি আতিফ ইকরাম শেখ বলেন, "বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের মধ্যে ব্যাপক বাণিজ্য সম্ভাবনা রয়েছে, বিশেষত কৃষি, ঔষধ, চামড়া, মেশিনারি, কেমিকেল ও আইসিটি খাতে। আঞ্চলিক যোগাযোগের সুবিধা কাজে লাগিয়ে আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারি।"

ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)-এর প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান এ সময় বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, "বিগত বছরগুলোতে দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যে ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে, তবে কৃষি, বস্ত্র, ঔষধ ও আইসিটি সহ আরও অনেক সম্ভাবনাময় খাত এখনও অগোলাপিত রয়েছে। যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বহুগুণ বাড়ানো সম্ভব।"

এ সময় তিনি আরও যোগ করেন, "দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) এবং ইসলামি সহযোগিতা সংস্থাকে (ওআইসি) কাজে লাগিয়ে দুই দেশের মধ্যে নিবিড়ভাবে কাজ করার সুযোগ রয়েছে, বিশেষত জ্বালানি, শিক্ষা, প্রযুক্তি, মানবসম্পদ উন্নয়ন, গবেষণা ও উদ্ভাবন খাতে।"

এফবিসিসিআই প্রশাসক উল্লেখ করেন, "এফবিসিসিআই এবং এফপিসিসিআই সম্মিলিতভাবে কর্মশালা, সেমিনার, বিটুবি মিটিং ও সিঙ্গেল কান্ট্রি ট্রেড ফেয়ার আয়োজনের উদ্যোগ নিতে পারে, যা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধি করতে সহায়ক হবে।"

এ সভার শেষে বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠনের মধ্যে একটি জয়েন্ট বিজনেস কাউন্সিল গঠনের জন্য একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।

এটি উল্লেখযোগ্য যে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সম্পর্ক আবারও আলোচনায় এসেছে। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দুই দেশের বাণিজ্যিক এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং এরই মধ্যে করাচি ও চট্টগ্রাম বন্দরের মধ্যে সরাসরি জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে এবার দুই দেশের মধ্যে সরাসরি আকাশপথে যোগাযোগ চালুর ঘোষণা দেওয়া হলো।