ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
২২ নভেম্বর, ২০২৪ | ৩:৪০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
চীনা পণ্যে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র
২২ নভেম্বর, ২০২৪ | ৩:৪০ পিএম

ছবি: সংগ্রহ
চীন থেকে আমদানীকৃত পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্র আগামী বছরের শুরুতে প্রায় ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করতে পারে। ফলে এশিয়ার দেশটির প্রবৃদ্ধি প্রায় ১ শতাংশীয় পয়েন্ট কমে যেতে পারে।
গত ৫ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয়ের পর চীনের অর্থনীতি নিয়ে বার্তা সংস্থাটির এটিই প্রথম জরিপ। সেখানে বলা হচ্ছে, নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট প্রাথমিকভাবে চীনা পণ্যের ওপর ৬০ শতাংশ শুল্ক আরোপ এড়িয়ে যেতে পারেন।
এর আগে নির্বাচনী প্রচারণার সময় ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ বাণিজ্য নীতির অংশ হিসেবে চীনা পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। তার এ বাণিজ্য নীতির ফলে চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
প্রথম দফা ক্ষমতায় আসার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন চীনা পণ্যের ওপর ৭ দশমিক ৫ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছিল। এবারে প্রস্তাবিত শুল্ক হার আগের তুলনায় অনেক বেশি।
কয়েক বছর ধরে মন্থর প্রবৃদ্ধির কারণে ধুঁকছে চীনের অর্থনীতি। বিশেষ করে রিয়েল এস্টেট খাতে দীর্ঘমেয়াদি মন্দা, ঋণঝুঁকি ও অভ্যন্তরীণ চাহিদা হ্রাস দেশটির অর্থনীতিকে প্রভাবিত করছে।
গত ১৩-২০ নভেম্বর পরিচালিত রয়টার্সের জরিপে ৫০ জনের বেশি অর্থনীতিবিদ অংশ নেন। তাদের মধ্যে বেশির ভাগ অর্থনীতিবিদ মনে করেন, ট্রাম্প আগামী বছরের শুরুতেই শুল্ক আরোপ করবেন। তারা ১৫-৬০ শতাংশের মধ্যে শুল্কারোপের পূর্বাভাস দিয়েছেন। এর গড় হার ৩৮ শতাংশ।
তবে বেশির ভাগ বিশেষজ্ঞ মনে করেন, ২০২৫ সালের শুরুতেই চীনা পণ্যের ওপর ৬০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে না। কারণ এটি যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি বাড়াতে পারে।
এএনজেডের প্রধান অর্থনীতিবিদ রেমন্ড ইয়ুংয়ের পূর্বাভাস অনুসারে, ‘নতুন মার্কিন প্রশাসন ট্রাম্পের আগের মেয়াদের পরিকল্পনা ফিরিয়ে আনবে। চীনা পণ্যের ওপর গড় শুল্ক হার ৩২-৩৭ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে।’
বিশ্লেষকরা বলছেন, সেপ্টেম্বরের শেষ থেকে প্রবৃদ্ধি বাড়াতে উদ্দীপনা প্যাকেজ ঘোষণা করছে চীনা নীতিনির্ধারকরা। তবে আগামী বছর রফতানি কমার সম্ভাবনার কারণে অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়াতে তাদের ওপর চাপ আরো বেড়েছে।
জরিপে আরো বলা হয়েছে, নতুন মার্কিন শুল্কনীতি চীনের আগামী বছরের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি প্রায় দশমিক ৫ থেকে ১ শতাংশীয় পয়েন্ট পর্যন্ত কমিয়ে দিতে পারে।
তবে জরিপে অংশগ্রহণকারী অর্থনীতিবিদদের বেশির ভাগই চলতি বছরে চীনের প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস ৪ দশমিক ৮ ও আগামী বছর ৪ দশমিক ৫ শতাংশ অপরিবর্তিত রেখেছেন। ২০২৬ সালে এটি আরো কমে ৪ দশমিক ২ শতাংশে নেমে আসার পূর্বাভাসও দেয়া হয়েছে।
ডিবিএসের প্রধান চীন অর্থনীতিবিদ মো জি বলেছেন, ‘বিশ্বব্যাপী চাহিদা স্থিতিশীল রয়েছে। এ অবস্থায় রফতানি প্রবৃদ্ধির মূল স্তম্ভ হবে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্কনীতি জিডিপি প্রবৃদ্ধি থেকে ১ শতাংশীয় পয়েন্ট পর্যন্ত কমিয়ে দিতে পারে।’
এদিকে জরিপে অংশ নেয়া ২৩ জনের মধ্যে ১৯ জন অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘চীনা সরকারের সাম্প্রতিক উদ্দীপনাগুলো অর্থনীতিতে সামান্যই প্রভাব ফেলতে পেরেছে। তাই আরো উদ্দীপনার প্রয়োজন।’ কেবল চার অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘এসব পদক্ষেপ প্রবৃদ্ধি বাড়াবে।’
চীনা কর্তৃপক্ষ আশা করছে, সেপ্টেম্বরের শেষ থেকে বাস্তবায়িত উদ্দীপনা অর্থনীতি চলতি বছরের ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়তা করবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যেকোনো বাণিজ্যিক উত্তেজনা থেকে অর্থনীতিকে রক্ষা করতে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা পদক্ষেপ ঘোষণা করতে পারে। যদিও নীতিগত সহায়তা সত্ত্বেও অর্থনীতির মন্থর গতি অব্যাহত থাকবে।
বার্কলেসের প্রধান চীন অর্থনীতিবিদ জিয়ান চ্যাং বলেছেন, ‘আমরা মনে করি চীনা সরকার এখনো মার্কিন নীতির প্রভাব এবং চীনের প্রবৃদ্ধির ওপর এর প্রভাব পর্যবেক্ষণ ও সাড়া দেয়ার সময় পাবে।’
