ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ | ১:০ এএম
অনলাইন সংস্করণ
এ সম্পর্কিত আরো খবর
চীনে ভোক্তা ব্যয় বাড়লেও নাজুক আবাসন খাত
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ | ১:০ এএম
![চীনে ভোক্তা ব্যয় বাড়লেও নাজুক আবাসন খাত](https://i.vatbondhu.com/images/original-webp/2024/11/16/20241116153121_original_webp.webp)
ছবি: সংগ্রহ
চীনে গত মাসে ভোক্তা ব্যয় বেড়েছে। তবে সরকারি নানা প্রণোদনার উদ্যোগ সত্ত্বেও এখনো চাপে আছে দেশটির জিডিপিতে বড় আকারে অবদান রাখা আবাসন খাত। এ অবস্থায় বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি নিয়ে বিনিয়োগকারী ও ভোক্তাদের আস্থা পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছেন নীতিনির্ধারকরা।
চীনে অক্টোবরে খুচরা বিক্রি ৪ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে, যা আট মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। একই সময়ে শিল্পোৎপাদন বেড়েছে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। এর আগে বিশ্লেষকরা ৫ দশমিক ৬ শতাংশ বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছিলেন।
দেশটির ৭০টি প্রধান শহরে নতুন বাড়ির দাম আগের মাসের তুলনায় দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে। এ নিয়ে টানা ১৬ মাস ধরে বাড়ির দাম কমছে। অক্টোবরে নতুন বাড়ির দাম গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫ দশমিক ৯ শতাংশ কমেছে, যা ২০১৫ সালের পর সর্বোচ্চ। চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে রিয়েল এস্টেট খাতে বিনিয়োগ কমেছে ১০ দশমিক ৩, যা গত মাসে ছিল ১০ দশমিক ১ শতাংশ।
অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সেপ্টেম্বরে চীন সরকারের পক্ষ থেকে একাধিক সহায়তামূলক পদক্ষেপ নেয়া হয়ে। এর মধ্যে আছে সুদহার কমানো এবং স্টক বাইব্যাক (উন্মুক্ত বাজারে নিজস্ব শেয়ার পুনঃক্রয়) উৎসাহিত করা। গত সপ্তাহে স্থানীয় সরকারের জন্য ক্ষতিঋণ পুনঃঅর্থায়নের একটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছে সরকার। প্রায় তিন বছর ধরে চীনের আবাসন খাত খারাপ পরিস্থিতি পার করছে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি আমদানি পণ্যে, বিশেষ করে চীনা পণ্যে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা বলেন। এতে দীর্ঘদিন ধরে মন্দায় থাকা আবাসন খাতে আরো চাপ বাড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এ মুহূর্তে রফতানিই চীনা অর্থনীতির একমাত্র সম্ভাবনার জায়গা। গত মাসে রফতানি দুই বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে।
ইউবিপির জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ কার্লোস কাসানোভা বলেন, ‘গত মাসেও রিয়েল এস্টেট খাত বিশেষভাবে হতাশাজনক ছিল। সরকারের প্রণোদনা উদ্যোগগুলো খুব সীমিত আকারেই অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পেরেছে। অর্থনীতি সম্পূর্ণ পুনরুদ্ধারে অনেক নীতিসহায়তার প্রয়োজন।’
চীন চলতি বছর ৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, যা কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে কম। আবাসন খাতের খারাপ পরিস্থিতি মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়িয়ে দিয়েছে। তাছাড়া অর্থনীতি নিয়ে ভোক্তা আস্থাকেও ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
ক্যাপিটাল ইকোনমিকসের চীনবিষয়ক অর্থনীতিবিদ জিচুন হুয়াং বলেন, ‘গত মাসে পরিস্থিতির যতটুকু উন্নতি হয়েছে, তার বেশির ভাগই ভোক্তা ব্যয় বাড়ায় সম্ভব হয়েছে। অক্টোবরে সেবা খাতের মূল্যসংশ্লিষ্ট সূচক ৬ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে, যা এ বছরের সর্বোচ্চ। আবাসন খাতের জন্য প্রণোদনা প্যাকেজগুলো কিছুটা ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। ফলে নতুন বাড়ির বিক্রি বাড়ছে।’
তিনি বলেন, ‘অর্থনৈতিক কার্যক্রম বাড়াতে সরকারি ব্যয় বাড়ানো সম্ভব। তবে ট্রাম্পের জয়ের প্রভাবের কারণে ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তা তৈরি হতে পারে।’
কাসানোভা বলেন, ‘কিছু ক্ষেত্রে ভোক্তা ব্যয়ের পরিমাণ ভালো। সরকারি নীতিমালার কারণে ভোক্তারা পুরনো পণ্য বিনিময় করে নতুন পণ্য কিনতে উৎসাহী হচ্ছেন। অক্টোবরে এক সপ্তাহব্যাপী ছুটির সময় ভোক্তা ব্যয় বেড়েছিল।’
এদিকে এনবিএস পরিচালিত একটি জরিপে দেখা যায়, ৭৫ দশমিক ৯ শতাংশ অংশগ্রহণকারী মনে করেন, আগামী ছয় মাসে নতুন বাড়ির দাম স্থিতিশীল বা বাড়বে। পূর্ববর্তী জরিপের তুলনায় এ হার ১৭ দশমিক ৬ শতাংশ পয়েন্ট বেশি।
![চীনে ভোক্তা ব্যয় বাড়লেও নাজুক আবাসন খাত](https://i.vatbondhu.com/images/original/2024/04/22/20240422145104_original.png)